সদ্য ঘোষিত নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এসময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এসময় পথচারিদের বেকাদায় পড়তে হয়।
বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কলেজের সামনে তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা গণি বেকারি মোড় থেকে এসে কলেজের সামনে সড়কে অবস্থান নেয়। এসময় পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দিলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা চকবাজারে গুলজার মোড়ের দিকে চলে যায়।
পরে সেখান থেকে সংগঠিত হয়ে দুপুর ১টার দিকে ফের মিছিল নিয়ে কলেজের সামনে আসে। এসময় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হাতে পিস্তল, দা, ছোরা, রামদা দেখা যায়। মিছিল নিয়ে আসার সময় প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় এক কলেজ ছাত্রী আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেন। বর্তমানে কলেজ এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি অস্ত্র হাতে কিছু বহিরাগতকেও দেখা গেছে।
জানাগেছে, ঘোষিত নতুন কমিটি যতদিন বাতিল না হবে ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাবে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। গত সোমবার রাতে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম কলেজে মাহমুদুল করিমকে সভাপতি ও সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি এক বছরের ঘোষণা করে নগর ছাত্রলীগ। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি যেখানে মহানগর কমিটির মেয়াদ নেই সেখানে কলেজ কমিটি দিতে পারে না। নির্বাচনের আগে মাঠে কাজ করতে মহানগর কমিটিকে নতুনভাবে সাজাতে হবে।
সহকারী পুলিশ কমিশনার (চকবাজার জোন) নবেল চাকমা বলেন, ‘কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী কলেজে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের সরিয়ে দেয়। বর্তমানে ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কলেজ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম বলেন, সকাল থেকে ছাত্রলীগের একদল কলেজের ভেতর আরেক দল কলেজের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। সকাল থেকে উত্তেজনা থাকলেও এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
ককটেল বিস্ফোরণ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কলেজের সামনে কোন ধরণের ককটেল বিস্ফোরণ হয়নি।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে মাহমুদুল করিমকে সভাপতি ও সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে নগর ছাত্রলীগ। টাকার বিনিময়ে কমিটি গঠন করার অভিযোগ এনে মঙ্গলবার এই কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
প্রায় তিন দশক পর ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রশিবিরকে বিতাড়িত করে ছাত্রলীগ।