বকেয়া বেতন, ওভারটাইম ও টিফিন ভাতা দিচ্ছে না ৩ মাস
নগরীর সিএন্ডবি রাস্তার মাথা এলাকায় আজিম গ্রুপের সুইটার ফ্যাক্টরীর শ্রমিকরা জীবনের নিরাপত্তা, বকেয়া বেতন ভাতা, টিফিন ভাতা ও বোনাসের দাবীতে সড়ক অবরোধ করে।
জানা যায় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে চট্টগ্রাম-কালুরঘাট ব্রীজ হয়ে কক্সবাজার মুখী সড়কটি অবরোধ করে রাখে ফলে নগরী থেকে বোয়ালখালী হয়ে কক্সবাজারের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ে।
চট্টগ্রাম নগরীর কালুরঘাট বিসিকে অবস্থিত আজিম গ্রুপের সুইটার ফ্যাক্টরীতে কর্মরত প্রায় ৭হাজার শ্রমিকের ৩মাসের টিফিন ভাতা বকেয়া রেখে দেয় কতৃপক্ষ এছাড়াও যথাসময়ে বেতন ভাতা প্রদান ও বোনাসের টাকা বাকী রেখে দেয়। এই সব দেওনা পাওনার জন্য শ্রমিকরা কর্তৃপক্ষকে দীর্ঘদিন থেকে চাপসৃষ্টি করে করে। এতে কর্তৃপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে ফ্যাক্টরীতে আসা যাওয়ার পথে বহিরাগত লোকজন দিয়ে শ্রমিকদের উপর বিভিন্ন সময় হামলা করে এমনকি অনেক শ্রমিক আহত হয়ে চিকিৎসাও নিয়েছে বলে জানান নিটিং সেকশনের মো: সিমাদ উদ্দিন। তিনি আরো জানান, বহিরাগত ভাড়া টিয়া দিয়ে আমাদেরকে দমন করার জন্য কতৃপক্ষের নির্দেশে বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের উপর হামলা করা হয়েছে।
নিটিং বিভাগের আবদুস শহীদ জানান, বহিরাগত ভাড়া করা সন্ত্রাসীদেরকে লালন পালনের জন্য শ্রমিকদের বেতন ভাতা থেকে প্রতিজনের কাছ থেকে ২০টাকা করে কেটে রাখা হচ্ছে। কৌশলে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সংগঠনের নামে এ চাঁদা নিলেও সেখানে শ্রমিকদের কোন সংগঠন নেই বলে জানান তিনি।
মো: সিমাদ উদ্দিন আরো জানান, গতকাল ফ্যাক্টরী থেকে বের হওয়ার পর সাড়ে ৭টার দিকে তাকে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। চান্দগাঁও হামিদচর এলাকার একথা মোড়ে একটি বাড়ীতে আটকে রেখে মারধর করা হয়। রাতে তার বন্ধু বান্ধবরা থানায় মৌখিকভাবে অভিযোগ দেয়ার পর রাত সাড়ে ১১টায় পুলিশের এস আই শাহ আলম সংগীয় ফোর্স নিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এছাড়াও আরো তিনজনকে ব্যাপক মারধর করা হয়। তিন জনই চমেক থেকে চিকিৎসা নিয়েছে তবে গুরুত্বর আহত রুবেল এখনো চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ষ্টেশনে কর্মরত শ্রমিক মালা বেগম জানান, বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে তাদের উপর বিভিন্ন সময় হামলা করা হয়েছে। তাই আমরা আমাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য সড়ক অবরোধ করেছি। যতক্ষণ মালিক পক্ষ আমাদের দাবী মেনে নিবে না আমাদের নিরাপত্তা দিবে ততক্ষণ আমরা এখানে থাকবো।
মিনু নাথ ও আনোয়ারা বেগম নিটিং বিভাগের কাজ করেন তারা ক্ষোভের সাথে জানান আমাদের কোন অপরাধ থাকলে আমাদের বিচার করুন। আমরা আমাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য এখানে আসছি। গার্মেন্টস শ্রমিকরা বেতন, বোনাস ও ওভার টাইমের জন্য সড়ক অবরোধ করে আজকে কিন্তু আমরা জীবনের নিরাপত্তার জন্য রাজপথে নেমেছি। বেতন, বোনাস, ওভার টাইম ভাতা ও টিফিন ভাতার দাবী থাকলেও আমরা নিরাপত্তাটাকে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছি।
এ ব্যাপারে চান্দগাঁও থানার অফিসার্স ইনচার্জ আবুল বাশারের জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল সাড়ে আট টা থেকে সড়কে ব্যারিকেট দিয়েছে শুনে এখানে আসছি। এখনো কোন সমাধান হয়নি। শ্রমিক অপহরনের কথা অস্বীকার করলেও রাতে হামিদচর থেকে কয়েকজন শ্রমিকের অভিযোগের ভিত্তিতে একজন শ্রমিককে আহত অবস্থায় উদ্ধারের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, মালিক পক্ষ, শ্রম অধিদপ্তরের লোকজন আসছে তাদের সাথে আলোচনা করে একটি সমাধান করা হবে। তবে শ্রমিকরা সড়ক ছাড়ছে না। কেউ কারো কথাও শুনছে না বলে জানান ওসি।
ওসি আরো জানান, শ্রমিকদের উপর হামলার একটি অভিযোগ তারা করেছে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।