রাশেদ মেম্বার আওয়ামীলীগ থেকে ডিগবাজি দিয়ে বিএনপিতে আসতে মরিয়া।

বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা বিতরণে স্বজন প্রীতি, দলীয় প্রীতিসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ।

0
14
ছবি: শীর্ষ ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী রাশেদ মেম্বার

সোহেল রিগ্যান পূর্ব গামছাখালী থেকে সরেজমিনে: ১৭ বছরের আওয়ামীলীগ দুঃশাসন ও স্বৈরশাসনামলে ইতিহাসের বর্বরোচিত নির্যাতন-নিপীড়ন, হত্যা, গুম, হামলা-মামলা, গ্রেফতার-কারাবন্দীর শিকার হয়েছেন নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার ৫নং চরঈশ্বর ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এসব অপরাধের মুলহোতা চরঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রাশেদ। সে নলচিরা এলাকার বাসিন্দা মৃত মোস্তাফিজুর রহমানের দ্বিতীয় সংসারের পুত্র বলে জানা যায়।

অনন্ত অসীম নামে এক বাসিন্দা জানান, ” ইউপি সদস্য ও চরঈশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মেম্বার এখন নিজেকে বিএনপির নেতা পরিচয় দেন। নিজেকে জিয়ার আদর্শের সৈনিক হিসেবে পরিচয় দেন। অথচ তিনি হাসিনা সরকারের পতনের ১ ঘন্টা আগেও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে উস্কানীমূলক মন্তব্য করেন! ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করতে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ও ক্যাডার বাহিনীর উপর আহ্বান জানান। সারাদেশ ব্যাপী ছাত্র-জনতার উপর যে নৃশংস হামলা ও গণহত্যা হয়েছে তার বৈধতা দিয়ে আক্রমণ তীব্র করার জন্য দোকানপাটে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন।
এমন কঠোর আওয়ামীলীগ নেতা রাশেদ মেম্বার রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগে নিজেকে বাঁচাতে আওয়ামীলীগের সঙ্গে ডিগবাজি দিয়ে বিএনপিতে আসতে মরিয়া।”

এলাকাবাসী জানান, রাশেদ মেম্বার এখন নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে এবং বিএনপি তথা জনসাধারণের জনরোষ থেকে বাঁচতে আওয়ামীলীগ কে গালিগালাজ করে বিএনপিতে আসতে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে গোপনে তৎপরতা চালাচ্ছেন। বিএনপির নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি, লুটপাট ও ভাংচুর করার অভিযোগ রয়েছে।

রাশেদ মেম্বারের রাজনৈতিক পরিচিতি জানতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, রাশেদ মূলত একজন অকৃতজ্ঞ ও চরিত্রহীন ব্যক্তি তার কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে সেদলের নেতা বনে যান। রাশেদ  মেম্বার এলাকায় পল্টিবাজ, বেইমান ও অকৃতজ্ঞ লোক হিসেবে পরিচিত। সুযোগ সন্ধানী হিসেবে সবসময় রাজনৈতিক দলে অনুপ্রবেশ করতে তার তৎপরতা লক্ষণীয়। ৫ আগস্টের পূর্বে এ দেশ থেকে বিএনপির নাম মুছে ফেলার হুমকি দেন!

আকস্মিক আওয়ামীলীগ থেকে বিএনপির নেতা পরিচয়কে স্থানীয়রা ডিগবাজি হিসেবে দেখছেন। এমন পল্টিবাজ নেতা জনগণ ও রাজনৈতিক দলের জন্য বিপজ্জনক। তাই এলাকাবাসী আহ্বান জানান রাশেদ মেম্বার যেন কোনভাবেই বিএনপিতে উঠতে না পারেন।

একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে রাশেদ মেম্বার কে দিয়ে স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ এলাকায় দানাবাঁধার চেষ্টা করছে। বিএনপির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে তাকে অর্থ, ইন্ধন ও সহযোগিতা দিচ্ছে।

তবে তার ব্যাপারে সর্তক অবস্থানে রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। সূত্র বলছেন, দীর্ঘদিন যারা নির্যাতিত হয়েছেন এবং দলের জন্য যারাই ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের বাদ দিয়ে রাশেদ মেম্বারকে গ্রহণ করা হবে না।

রাশেদ মেম্বারের ব্যাপারে অনুসন্ধানে নেমে জানা গেছে জনসাধারণদের ভয়ভীতি দেখান। তার রয়েছে এলাকায় প্রচন্ড প্রতাপ। মানুষ ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না। ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার হলেও প্রতাপ খাটিয়ে ২, ৩, ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডে হস্তক্ষেপ করেন! রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের আগে অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী নিয়ে খাশেরহাট, বেরারোট, গামখালী ও বাংলা বাজার দাপিয়ে বেড়াতেন।

ইউপি সদস্য রাশেদ স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের দুঃশাসনকালের দু’বারের মেম্বার। নলচিরার ভাড়াটিয়া রাশেদ জোরপূর্বক ভোট ছিনিয়ে মেম্বার নির্বাচিত হন। মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় তার প্রভাব বিস্তার শুরু হয়। আওয়ামীলীগ পদ আর জনপ্রতিনিধির ক্ষমতা অপব্যবহার করে সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী, জলদস্যু বাহিনী গড়ে তোলেন। এলাকায় একক রাজত্ব কায়েম শুরু করেন। সরকারি অর্থ লুটপাট, দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়ম এবং মানুষের উপর জুলুম অত্যাচার, ভূমি দখল করেন। চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও বিচারের নামে জরিমানা ও মানুষদের মারধরের অভিযোগ অহরহ।

তার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ হচ্ছে- ভূমি দখল করে বাগানবাড়ি নির্মাণ, ভিজিএফ-এর চাল বিতরণ, ভিডব্লিউডি-এর চাল বিতরণ, টিসিবি পণ্য বিক্রি, কৃষি ও মৎস্য প্রণোদনা বিতরণ, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা বিতরণে স্বজন প্রীতি, দলীয় প্রীতিসহ ব্যাপক অনিয়ম অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দা আনাজল হকের পুত্র মো. হালিম (২৭)-কে মারধরসহ অনেকের উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রতিনিধি ক্ষমতা ও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ ব্যবহার করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছেন। গত ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক বিপ্লব ঘটে। এই বিল্পবে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হয়। কিন্তু এখনো তার অপকর্ম থেমে নেই। স্বৈরাচার নেতারা অন্তরালে চলে গেলেও রাশেদ মেম্বার আওয়ামীলীগের সঙ্গে ডিগবাজি দিয়ে বিএনপিতে উঠতে গোপনে তোড়জোড় শুরু করেন। এলাকায় এখনো মানুষদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। ভূমি দখলের পাশাপাশি চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও লুটপাটের টাকা দিয়ে বিশাল বাগানবাড়ি তৈরি করেছেন।

প্রশাসনিক তথ্য মতে জানা যায়, গণধোলাই, মামলা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে রাশেদ মেম্বার নিজ বাড়ি থেকে বাগানবাড়ি পর্যন্ত বিচরণে সীমাবদ্ধ থাকছেন। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তার ব্যাপারে আমরা খোঁজ খবর রাখছি। সে নজরদারির মধ্যে রয়েছে।

রাশেদ মেম্বারের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য কীনা এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাশেদ মেম্বারের বিরুদ্ধে পূর্বে প্রকাশিত সংবাদ লিংক- https://hillnewsbd.com/2024/08/31/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%8f%e0%a6%95-%e0%a6%ad%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4/

আগের পোস্টনির্ধারিত সময়ে দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে কাপ্তাইে হ্রদে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে উপজাতীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী
পরের পোস্টসাজেকে মসজিদ প্রকল্প রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের- সেনাবাহিনীর নয়।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন