নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসু-পর্যটক খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান আগমণ করে থাকেন। আগত পর্যটকদের উপর পার্বত্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জেএসএস-ইউপিডিএফ চোরাগোপ্তা হামলা করে। বিগত বছরগুলোতে খাগড়াছড়ি আলুটিলা, রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজ এবং বান্দরবান নীলগিরি ভ্রমণে গিয়ে অসংখ্য পর্যটক উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হতে হয়।
গত ২০১৮ সালের প্রথম নাগাদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সহ ৩টি হানিফ পরিবহন গাড়ি খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি এবং বান্দরবান জেলার পর্যটন স্পট গুলো ভ্রমণ করার উদ্দেশ্য ৬ দিনের যাত্রায় রওনা হয়। প্রথমে তারা খাগড়াছড়ি জেলার পর্যটন স্পট গুলো ভ্রমণ করে। তাদের ভ্রমণের খবর পাহাড়ের অস্ত্রধারী বিচ্ছিন্নতাবাদী ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা জানতে পারলে তারা খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ নেয়ার একাধিক চেষ্টা করে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপর থাকায় খাগড়াছড়ি শহরে পর্যটকদের কোন ক্ষতি করতে পারেনি সন্ত্রাসীরা। পর্যটক বাহী ৩টি গাড়ি যখন খাগড়াছড়ি শহর হতে রাঙামাটির উদ্দেশ্য রওনা দেয় তখন খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি সড়কের নানিয়ারচর- কুুতুবছড়ি এলাকায় পথিমধ্যে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা অতর্কিতভাবে হানিফ পরিবহনে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে। চালকের দক্ষতায় সেদিন ৩টি গাড়িতে থাকা শতাধিক পর্যটক প্রাণে বেছে যায়। যদিও গাড়ির বড়ি গুলির আঘাতে ঝাঁজরা হয়ে যায়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি টহল দলের গাড়ি পর্যটকদের উদ্ধারে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তারা ২০০ গজ খাদে পড়ে যায়! এতে ৮-১০ জন সেনাসদস্য মারাত্মকভাবে আহত হয়। এইধরনের ঘটনা গুলো ভ্রমণ পিপাসু/পর্যটকদের মনে পাহাড় ভ্রমণ এক ভীতিকর ও দুঃখময় স্মৃতির রুপান্তরিত করে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটকদের উপর হামলার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ আলোকপাত করলে এটা প্রমাণিত হয় যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো সন্ত্রাসবাদের রাজত্ব চলে। এইভাবে পর্যটকদের উপর হামলা হলে ভবিষ্যতে পার্বত্য চট্টগ্রামে আর কোন পর্যটক আসবেনা। সন্ত্রাসীরা লাগামহীন ভাবে পর্যটকদের উপর হামলা করে টাকা সহ প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অনেক সময় পর্যটকদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় মোটা অংকে মুক্তিপণ আদায় করার জন্য। যেটা প্রায়শই বান্দরবান জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পট গুলোতে ঘটে থাকে।
সরকারের উচিত পর্যটকদের যথাযথভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এবং পার্বত্য চুক্তির পরেও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতা মূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া সময়ে দাবি৷ সন্ত্রাসীদের স্পষ্টভাবে একটি কথা বলে দিতে চাই, আবার যদি পাহাড়ে কোন বাংগালী পর্যটকের উপর হামলা হয়, তাহলে ঢাকা-চট্টগ্রাম সহ দেশের অন্যান্য জায়গায় উপজাতীয় সন্ত্রাসী ও তাদের দোসররা শান্তিতে থাকতে পারবে না। সাধু সাবধান। পাহাড়ে বাংগালী পর্যটকদের উপর হামলা হলে সমতল জেলার বাংগালীরাও বসে থাকবে না। দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে দেশের অন্যান্য জায়গা গুলোতে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশেরই অবিচ্ছেদ্য
অংশ, এখানে এদেশের সমগ্র জায়গার মানুষ অবাধে ভ্রমণ করবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে আগমণকৃত পর্যটকদের উপর হামলা হলে সন্ত্রাসীরা দেশের কোথাও শান্তিতে থাকতে পারবেনা। আমরা জানি অনেক উপজাতি সন্ত্রাসী সমতলে থাকে।