উপজাতী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ভয়ঙ্কর শীর্ষ সন্ত্রাসী রুপন মারমা আটক!

0

এম. এ হান্নান
রাঙামাটি।

গত শুক্রবার ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখ সন্ধান ৬ ঘটিকায় কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়াতে ইউপিডিএফের ২৬ ডিসেম্বর ২২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়ালে চিকা মারার জন্য সিএনজি যোগে লেবারপাড়া হতে বেতবুনিয়া যাওয়ার পথিমধ্যে সেনাবাহিনী রুপন মারমাকে ঘাগড়া হতে আটক করে বলে জানা যায়। আটক করার সময় সে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে তার বিরুদ্ধে কোন মামলা সহ অভিযোগ নেই বলে জানায়। জিজ্ঞাসাবাদে সে তার নামে মামলা থাকার কথা স্বীকার করে।

সূত্র মতে জানা যায়, রুপন মারমা হতে ইউপিডিএফ সশস্ত্র গোষ্ঠী সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া যায়। সেসব তথ্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জানা ছিল না। কারণ, ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী, তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিয়ে স্বায়ত্তশাসন ও রাষ্ট্র ভাগ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম সম্পর্কে কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে রুপন মারমা অনেক তথ্য প্রদান করে বলে জানা যায় সূত্রের তথ্য মতে।

রুপন মারমা (৩৩) ইউপিডিএফের প্রসিত গ্রুপের সহযোগী সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক। মারমাদের মধ্যে প্রসিত বিকাশ খিসার ইউপিডিএফে সবচেয়ে বিশ্বস্ত রুপন মারমা। রুপন মারমা বান্দরবান সদর উপজেলার জদ্দীপাড়ার মৃত- চাইশৈ মারমার পুত্র। সে দীর্ঘদিন হতে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া চৌধুরী পাড়ার ৯ নং ওয়ার্ড ও ঘাগড়ার নোয়া আদম, লেবারপাড়া, কুচখালী অবস্থান করে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত ছিল৷ সাংগঠনিকভাবে তার দায়িত্ব ছিল স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে রাষ্ট্র- সেনাবাহিনী ও বাঙালীর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক স্লোগান দিয়ে জনমত গঠন করা। কাউখালী উপজেলায় ২০১৬ সালে প্রশাসনের নাগালে এসে প্রশাসনকে লাল কার্ড প্রর্দশন এই রুপন মারমার নেতৃত্বে হয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়। সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউপিডিএফের বিভিন্ন রাষ্ট্র বিরোধী কর্মসূচী পালন বাস্তবায়ন করছে রুপন মারমা। রুপন মারমাকে সেনাবাহিনী আটক করে কাউখালী থানা হস্তান্তর করলে কাউখালীর ২নং ফটিকছড়ি ইউপির নাভাঙ্গা-টঙ্গীপাড়ার সাবেক মহিলা মেম্বার পাইক্রামা থানায় আসে তাকে ছাড়িয়ে নিতে। ইউপিডিএফের কালেক্টর ৩টি হত্যা মামলার আসামী কিরণ চাকমা (৪৫) এর স্ত্রী পাইক্রামা মারমা (৩৫) ইউপিডিএফের প্রতিনিধি হিসেবে আটক সন্ত্রাসীদের উদ্বারে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কাজ করছে বলেও গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়। পাইক্রামা মারমা গত ২২ নভেম্বর ২০২০ ইং তারিখ ডোবাকাটা-না-ভাঙ্গা সেনা ক্যাম্প নির্মার্ণের বিরুদ্ধে স্মারকলিপিতে স্বাক্ষরকারী প্রতিনিধি৷ তার নেতৃত্ব রাঙামাটিতে সেনা ক্যাম্পের বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলা প্রশাসন চত্বরে। ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের কোন নেতা কর্মী আটক হলে পাইক্রামা মারমা তাদের উদ্ধার করতে অপতৎপরতা চালাই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যের সঙ্গে গভীর সখ্যতা গড়ে তুলে সন্ত্রাসীদের ছাড়িয়ে নিতে তাকে সর্বোচ্চ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইউপিডিএফের পক্ষ হতে। এজন্য যা যা ছাড় দেওয়ার প্রয়োজন তা দেওয়ার জন্য ইউপিডিএফ হতে নির্দেশনা রয়েছে। ২০১৯ সালে রাষ্ট্রীয় একটি বৃহত্তর গোয়েন্দা সংস্থা তাদের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উপজাতি কথিত সুন্দরী মেয়েরা প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে গভীর সখ্যতা গড়ে তোলার প্রচেষ্টার ১৮ সেপ্টেম্বর গোপন বৈঠকের প্রতিবেদন প্রেরণ করে। কাউখালী কচুখালী হেডম্যান পাড়ার মৃত- মংসি প্রু রোয়াজা মাষ্টারের ভাড়া বাসায় থেকে ইউপিডিএফের কাজ করে বলে একাধিক সূত্রের তথ্য মতে জানা যায়৷

আটককৃত রুপন মারমাকে কাউখালী থানার এএসআই বিল্লাল ৫৪ ধারায় কোর্টে প্রেরণ করে৷ জানা যায় তার বিরুদ্ধে নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমা হত্যা মামলা রয়েছে/ ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের প্রধান তপন জ্যোতি বর্মা সহ ৬ হত্যাকান্ডে দায়েরকৃত মামলার এজাহার ভুক্ত আসাসী সে।

ইউপিডিএফ সূত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনীর সদস্যরা রূপন মারমাকে নিয়ে বেতবুনিয়ার চৌধুরী পাড়ায় দিবাগত রাত ২টায় কংলাউ মারমা, পিতা- ক্যাজাইরুই মার্মা নামে এক ইউপিডিএফ সদস্যের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। সেনারা কংলাউ মার্মার সহধর্মীনি পাইসিথুই মার্মা ও তার ভাগিনীর ছবি তুলে এবং যাবার সময় তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়।
সেনাবাহিনীর এ ধরণের ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ নিয়েছে সংগঠনটি।

রূপন মারমাকে কাউখালী থানায় হস্তান্তর করা সময় তার থেকে জব্দকৃত মালামাল।
০১. নগদ ৩১০৪ টাকা।
০২. Symphony s40 মডেল মোবাইল সেট -১ টি।
০৩. Samsung A01 মডেল-১ টি।
০৪. মোবাইল সিম-০৪ টি। (০১৮৬৮৭৮৩০১৭,০১৮৪০৫৪৮৮২২,০১৮৭৩০৮৯২১৭,০১৬০৯৪১৪৭৭১)
০৫. চাঁদা আদায়ের রশিদ ( জনতার মুক্তি সংগ্রামে এগিয়ে আসুন) -১১ টি।
০৬. মেমরি কার্ড-১৬ জিবি-১ টি।
০৭. সহকারি পরিচালক এবং ভিলেজ কমিটির সহযোগীতা চেয়ে -২ টি চিঠি।
০৮. ০১ নং বেতবুনিয়া ইউনিয়ন কমিটির নামের তালিকা -১ টি।
০৯. বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, জোত বাঁশ ব্যবসায়ী হতে চাঁদা আদায়ের ট্যাক্স/চাঁদার ফরম-১১ টি।
১০. সহকারি পরিচালক বরাবর সুষ্ঠু বিচারের জন্য আবেদন (১০০ টাকাসহ)- ২ টি।
১১. বাৎসরিক গণ ভিত্তিক ট্যাক্স আদায় ফরম-৩ টি।
১২. মাসিক সাধারণ আর্থিক প্রতিবেদন ফরম-২ টি।
১৩. সকল সরকারি চাকরিজীবি এবং শিক্ষকদের নিকট আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে- ১০ টি চিঠি।
১৪. জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষায় ইউপিডিএফ মূলদলের হাতকে শক্তিশালী করুন সম্বলিত লিফলেট-৪০ টি।
১৫. বিভিন্ন পাড়া হতে চাঁদা প্রদানকারীর নাম ও চাঁদার পরিমাণের তালিকা- ৭ পাতা।

উক্ত আসামীর বিরুদ্ধে নানিয়ারচার থানায় মামলা রয়েছে। মামলা নং- ০৩, তারিখ ০৮/০৫/২০১৮, ধারা ১৪৮/১৪৯/১০৯/৩২৪/৩২৬/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড। উক্ত আসামিকে কাউখালী থানার এএসআই নিরস্ত্র মোঃ বিল্লালের নেতৃত্বে ৫৪ ধারায় কাউখালী থানা হতে রাঙ্গামাটি কোর্টে প্রেরণ করা হয়, এবং জিডি করা হয়, জিডি নং ৮০৩।

আগের পোস্টইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজাতি সন্ত্রাসীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে অপহরণ শুরু করছে।
পরের পোস্টত্রিদিব রায় ছিলেন এমন একজন রাজা, যিনি শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থের জন্যই তার রাজত্ব হারিয়েছেন!

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন