ইতিহাসের এক কলঙ্কিত দিন লংগদু গণহত্যা।

0

হান্নান সরকার, লেখক, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক: পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ কায়েম করা পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (জেএসএস)-এর সশস্ত্র শাখা তথাকথিত শান্তিবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙালিদের নিধন করার অংশ হিসেবে সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি বসতিস্থাপনকারীদের উপর গণহত্যা পরিচালনা করে। এসব ঘটনায় হাজার হাজার বাঙালি নিহত, আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লংগদু গণহত্যাও পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি গণহত্যা।

১৯৭৯ সালের ১৯-শে ডিসেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ২টা থেকে পরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত সময়ে ঘুমন্ত বাঙালিদের উপর রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলা সদর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম কলঙ্কজনক অধ্যায় লংগদু গণহত্যা করে ৩৮ হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী খুনি সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীর উপজাতি সন্ত্রাসীরা। বাঙালিদের প্রত্যেকটি গ্রামে অগ্নি সংযোগ সহ লুটতরাজ, সামনে বাঙালি যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে, বাঙালি নারীদের গণধর্ষণ ও পরে হত্যা, নরকীয়তা সৃষ্টি করেছিলো খুনি সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা। যে ঘটনার মাধ্যমে কয়েক ঘন্টা সময়ের ব্যবধানে ৩২০ জনের অধিক নারী, শিশু, আবাল বৃদ্ধ বনিতা নিরস্ত্র নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করা হয়েছে এবং আহত করা হয়েছে আরও ৭৫০ জনের অধিক, অপহরণ ও গুম করা হয়েছে আরো শত শত বাঙ্গালীকে। ২০৪টি বাড়ি লুটতরাজ করে সম্পূর্ন ভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়। গৃহহীন হয়েছেন প্রায় শহস্রাধীক পরিবার। ১৯-শে ডিসেম্বর লংগদু গণহত্যা ইতিহাসের এক কলঙ্কিত দিন হিসেবে বিবেচিত। উপজাতি সংগঠনগুলো বাঙালি গণহত্যা দামাচাপা দিয়ে গিয়ে উপজাতি গ্রামে অগ্নিসংযোগ, ঘরবাড়ি, লুটপাট ও ভাংচুর চালায়। এসবকে ইস্যু করে বাঙালি ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তথ্য সন্ত্রাসের আশ্রয় গ্রহণ করে।

পাহাড়ে তৎকালীন গণমাধ্যম প্রবেশ ছিল সীমিত। শান্তিবাহিনী গণমাধ্যমের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। শান্তিবাহিনীর ভয়ে পাহাড়ে গণমাধ্যমকর্মীরা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকতো। দামাচাপা পড়ে যেত বাঙালিদের উপর পরিচালিত গণহত্যা। যার কারণে লংগদু গণহত্যা জাতীয়ভাবে স্থান পায়নি।

পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘঠিত গণহত্যার জন্য জেএসএস নেতাদের বিচারের মুখামুখি করা সম্ভব হয়নি দীর্ঘ বছর অতিক্রম করার পরও। স্বজন হারা বাঙালি পরিবারগুলো পায়নি ক্ষতিপূরণ। বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে।

আগের পোস্টডিসির অসাংবিধানিক বাসিন্দা সনদ, হেডম্যান রিপোর্ট ও সার্কেল চীপ সনদের অবসান দাবি।
পরের পোস্টইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজাতি সন্ত্রাসীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে অপহরণ শুরু করছে।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন