দিন যত এগুচ্ছে সন্ত্রাসী সংগঠন গুলোর অপ-তৎপরতা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সন্ত্রাসীরা যেকোন মুহূর্তে ঘটাতে পারে ভয়াবহ নাশকতা।
পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ এবং মায়ানমারের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সহযোগীতায় পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো ভয়াবহ সংঘাতের পরিকল্পনা এঁকেছে।
পাহাড়ের আনাচে- কানাচে চাঁদাবাজির পটভূমি তৈরি করেছে। এখানকার জনগোষ্ঠীর নাভিশ্বাস ফেলবার মতো পরিস্থিতি নেই পার্বত্য জুড়েই৷ মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় এমন কোন জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রিতে বাদ নেয় যে চাঁদা দিতে হয় না! সবকিছুতেই সন্ত্রাসীদের মোটা অংকে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদার টাকা দিতে বর্থ্য হলে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। সে হোক উপজাতি কিংবা বাঙ্গালী। যে জাতি হোক পাহাড়ে বসবাস করতে হলে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর চাহিদা মতো চাঁদা দিতে হবে। ঘরে সুন্দরী মেয়ে থাকলে মনোরঞ্জন করার জন্য উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন গুলোর হাতে তুলে দিতে হয়। রাঙ্গামাটির সরকারী কলেজের এইচএসসি পরীক্ষা মিতালী চাকমার কথা অনেকেরই মনে থাকার কথা, তাকে কিভাবে ইউপিডিএফ হায়েনারা জোরপূর্বক তিনমাস টানা গণধর্ষণ করেছিলো! সর্বশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর টহলদলের উপস্থিতি দেখে রক্তাক্ত মিতালী চাকমাকে ফেলে রেখে যায় সন্ত্রাসীরা। মিতালী চাকমার আর্তচিৎকারে অতঃপর আইন- শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা নিশ্চিত করে। সুস্থ হওয়ার পর মিতালী চাকমা নিজেই খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে স্বজাতি ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতনও গণধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের সিমান্তবর্তী এলাকাগুলো সুরক্ষিত না থাকায় সন্ত্রাসীরা অতি সহজেই অস্ত্র এবং গোলাবারুদ আদান প্রদানে সক্ষম হয়। বিশেষ সূত্রের তথ্য মতে জানা যায়, উপজাতি সন্ত্রাসীরা ইতিমধ্যেই ভারত এবং মিয়ানমার থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র ক্রয় করে পাহাড়ে প্রবেশ করাতে সক্ষম হয়েছে! যা দেশের জন্য অশনি সংকেত।
গত ২০২০ খ্রিঃ- এর ১২ ই – ডিসেম্বর হতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিএসএফ ও বাংলাদেশের বিজিবি পর্যায়ে ৫১তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ভারতের মাটিতে। ওই সময় বিজিবি ও বিএসএফ ছাড়াও দুদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন, বিজিবির পক্ষ হতে অভিযোগ করা হয় ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের আশ্রয়ও প্রশিক্ষণ শিবির রয়েছে৷ বিএসএফও বিষয়টি দেখবে বলে জানায় তখন। এতে স্পষ্ট যে, উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা ভারতের মাটি ব্যবহার করে এদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ভিনদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদী উপজাতি সন্ত্রাসীদের আগলে রেখেছে দেশীয় কিছু ভাড়াটিয়া বুদ্ধিজীবী। যারা দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বকে জলাঞ্জলি দিয়ে দেশদ্রোহী বিচ্ছিন্নতাবাদী উপজাতি সন্ত্রাসীদেরকে প্রটেকশন দিচ্ছে। এছাড়া বৈদেশিক অপশক্তি তো আছেই।
এরমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) রাঙ্গামাটি পৌর মেয়র নির্বাচনে কোনপ্রকার প্রার্থী দেয়নি! কোনপথে হাঁটছে তারা? তারা রাষ্ট্র মুখী হওয়া থেকে কিছুটা সরে এসেছে মনে হচ্ছে। তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা ও নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করার পেছনে অবশ্যই রহস্য লুকিয়ে আছে।
উপরোক্ত পর্যালোচনা বিবেচনা করে সরকারের উচিৎ হবে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গুলো দ্রুত গ্রহণ করা।
১. পার্বত্য চট্টগ্রামে অরক্ষিত সিমান্তবর্তী এলাকাসমূহে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত কাটা তারের বেড়া দিতে হবে।
২. সন্ত্রাসীরা যেহেতু যুদ্ধের জন্য সিমান্তবর্তী এলাকা বেছে নিয়েছে তাই সিমান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল জোরদার করতে হবে।
৩. কুটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে ভারত এবং মিয়ানমার সরকারকে তাদের দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের দমনে চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
৪. দেশদ্রোহী বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের মদতদানকারী কথিত কিছু বুদ্ধিজীবীকে আইনের কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
৫. দেশের স্বাধীনতা এবং স্বার্বভৌমত্ব রক্ষার তাগিদে উপজাতি সন্ত্রাসী সংগঠন গুলোকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে।
লেখক : তাপস কুমার পাল
গবেষক ও লেখক এবং ব্লগার পার্বত্য চট্টগ্রাম