শান্তির দূত খ্যাত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পার্বত্যাঞ্চলে কেন প্রয়োজন?

0

|তাপস কুমার পাল, পার্বত্য চট্টগ্রাম|

ভৌগলিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের খু্বই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল।
বাংলাদেশের মূল জনগোষ্ঠী বাঙালি সহ ভারতের মিজোরাম,ত্রিপুরা রাজ্য, আসাম এবং মায়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা ১৩ টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীরা পার্বত্য এলাকায় বসবাস করে।

লেক, পাহাড় আর বনভূমিতে বিস্তীর্ণ পাহাড়ের এই জনপদ দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেকটা দুর্গম।অনগ্রসর এবং দুর্গম এই পাহাড়ি অঞ্চলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের দমনের পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধের উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপনে সক্ষম হয়েছে।

সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যে সমস্থ মানবিক কর্মকাণ্ড আমার চোখে পড়েছে তা অতি সংক্ষেপে বর্ণনা করছি।

১. অবকাঠামো গত উন্নয়নঃ
পার্বত্য চট্টগ্রামে অবকাঠামোগত যত উন্নয়ন হয়েছে তাতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িত। অসহায় হতদরিদ্রদের করোনাকালীন সময়ে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণও অন্যতম।

২. চিকিৎসা সেবা:
দুর্গম পাহাড়ে মানসম্মত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল না থাকায় পাহাড়ের জনগণ সর্বদা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাহাড়ের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন সময়ে বিনামূল্য ঔষদ সরবরাহ, চক্ষু শিবির, বিনামূল্য অপারেশন সহ নানাবিধ সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে ।
অনেক সময় সিরিয়াস রোগীর জন্য নিজস্ব হেলিকাপ্টার ব্যবহার করে পাহাড়ের মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনী।

৩. মানসম্মত শিক্ষাঃ
পার্বত্য চট্টগ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের লক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। যার মাধ্যমে অসংখ্য ছাত্র পড়ালেখা করে দেশ ও জাতী গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

৪. শীতার্ত মানুষের পাশেঃ
প্রতি বছর পাহাড়ের অসংখ্য শীতার্ত মানুষের পাশে শীতবস্ত্র বিতরণ করে গণমানুষের পরম বন্ধু হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে সেনাবাহিনী।

৫. গৃহহীন মানুষের পাশে সেনাবাহিনীঃ
পার্বত্য চট্টগ্রামে অসংখ্য গৃহহীন মানুষের গৃহ নির্মানে সহযোগীতা করেছে সেনাবাহিনী। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ খ্রিঃ দীঘিনালায় দুই উপজাতিকে গৃহ নির্মানের জন্য ঢেউটিন উপহার দেয় সেনাবাহিনী।
এছাড়াও অগ্নীকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে, পাহাড় ধ্বংসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে, ক্রীড়া অঙ্গনে,এবং মানব সম্পদ তৈরির লক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত উপরোক্ত মানবিক কর্মকাণ্ডগুলো অব্যাহত রেখে পাহাড়ের মানুষের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে তুলে নেয়া সেনা ক্যাম্প গুলো পুনঃস্থাপন করা প্রয়োজন।

আগের পোস্টগুচ্ছগ্রাম নামের অভিশাপ থেকে মুক্তি চায় পাহাড়ের প্রায় ২৮ হাজার নিরহ বাঙ্গালী।
পরের পোস্টপার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত অনেকেই সহজ বিষয়গুলো উল্টা পাল্টা করে ফেলি।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন