পাহাড়ে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যাও চাঁদাবাজি হচ্ছে!তবুও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে অনিহা!

0

পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি, অপহরণ, ধর্ষণ, খুন-গুম ও অস্ত্রবাজি সহ রাষ্ট্র বিরোধী নানান তৎপরতা চলছে হরহামেশাই। এরপরেও এখানকার প্রশাসন সন্ত্রাস দমনে আন্তরিক নয়! দুঃখজনক যে, সন্ত্রাসীদের নামে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা থাকলেও প্রশাসন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। এর ফলে সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে সাধারণ উপজাতী বাঙালির উপর চড়া হন! উপজাতি সন্ত্রাসীদের নারী নির্যাতন, নারী ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, হত্যা, অপহরণের বিরুদ্ধে উপজাতিরাও মুখ খুলেছেন। কিন্তু এ মুখ খুলে কি হবে? প্রশাসন তো সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনছেন না। বরঞ্চ যারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলে অভিযোগ করে তাদের জীবন নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে!
পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিরা কোন দোষ করলে তার জন্য বাঙালির চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করে প্রশাসনের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং উপজাতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী৷ আর উপজাতিরা হাজারো অন্যায় দোষ করলেও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বরাবরই অনিহা চোখে পড়ছে। থানায় শতশত মামলা সন্ত্রাসীদের নামে থাকলেও তাদের গ্রেফতার করতে অনিহা পুলিশের! অথচ বাঙালির নামে গরু চুরির অভিযোগ হলে বাঙালিকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ মরিয়া হয়ে ওঠে। সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি ও অপতৎপরতার তথ্য দিতে গিয়ে নিরিহ উপজাতি-বাঙালীরা পুলিশ সহ প্রশাসনের রোষানলে পড়তে হয়। হাজারো তথ্য প্রমাণ থাকার স্বত্বেও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেই! প্রশাসন ও পুলিশ এই অনিহা বোধ পার্বত্য পরিস্থিতিকে নাজুক করেছে। এর কারণে পাহাড়ে একের পর এক অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে।

বিগত বছর গুলোর পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবিক তথ্য চিত্র এতটাই ভয়াবহ যে, “সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার গুলো মামলা করে গ্রামেও ফিরে যেতে পারছেন না। সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তাদের হত্যা করা হয়। পার্বত্য চুক্তির
আগে ৩৭ হাজার মানুষ হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের এ হত্যাযজ্ঞকে অসাংবিধানিক পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে সরকার দামাচাপা দেয় এবং দায়ী সন্তু গংদের মুক্তি দেয়! ১৯৯৭ -এর পার্বত্য চুক্তির পর অসংখ্য মানুষদের হত্যা করা হয়েছে। যার কোনটির বিচার করতে পারেননি রাষ্ট্র-প্রশাসন।

উপজাতি ৪টি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নিজেদের স্বজাতির অধিকার আদায়ের কর্ণাধার দাবি করলেও মূলতঃ তারা চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার করার জন্য সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বছরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে তারা। চাঁদাবাজির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এর বলি হতে হয় সাধারণ নিরিহ উপজাতি-বাঙালিকে! প্রশাসন সন্ত্রাসীদের লাগাম টেনে ধরতে না পারার কারণেই মূলতঃ পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়ছে। রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা একতরফভাবে উপজাতীয় জনগোষ্ঠী ভোগ করছে৷ বাঙালিরা রাষ্ট্রের সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত। এরকারণেই পার্বত্য বাঙালিরা সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালির প্রতি রাষ্ট্রের দমননীতি এ অঞ্চলের বাঙ্গালীদের নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে অতিরঞ্জিত সুযোগ-সুবিধা দিতে গিয়ে রাষ্ট্রের মূল জনগোষ্ঠী বাঙালিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে মৌলিক নাগরিক অধিকার হতে বঞ্চিত করা হয়েছে। এটা কখনো রাষ্ট্রের জন্য মঙ্গল হতে পারে না।

রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি সড়কের নানিয়ারচর হতে কতুকছড়ি পর্যন্ত সড়কে রাত ৮ টার পড়ে মানুষ চলাচল করার সাহস পায় না! বান্দরবান সড়কেও একই অবস্থা৷ বলতে গেলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবগুলো সড়কই সন্ত্রাসীদের দখলে।
অপ্রিয় হলেও সত্য যে, স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরেও আমাদের পরাধীন হয়ে থাকতে হচ্ছে৷ চাঁদাবাজির ভয়ানক আখড়া বলা যায় পার্বত্য চট্টগ্রামকে। সন্ধ্যার পর মানুষ সড়কে চলতে পারে না। সেনাবাহিনীকে পার্বত্য চট্টগ্রামে মেরুদণ্ডহীন করে রাখা হয়েছে৷ বেশিরভাগই সেনাক্যাম্প অসাংবিধানিক পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দোহাই দিয়ে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে! যার কারণে অরক্ষিত হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। নিরাপত্তার তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ে। সেনা ক্যাম্প পুনঃস্থাপন না করলে চলমান পার্বত্য সমস্যা সমাধান হবে বলে মনে হয় না। হাজার হাজার পুলিশ পাহাড়ে থাকার পরেও তাদের কোন সন্ত্রাসী দমনের কার্যক্রম নেই৷ অদৃশ্য শক্তির ইশারায় প্রশাসনের নতজানু নীতি পার্বত্য চট্টগ্রাম অচিরেই বিচ্ছিন্ন হবে। সমগ্র অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়ছে। সাধারণ মানুষ আজ নির্বিকার হয়ে আছে। দিনে দুপুরে সরকারী অফিসে জনপ্রতিনিধি খুন হয়। নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান হত্যার পর ২০২১ এর মার্চ মাসের সম্প্রতি বাঘাইছড়ি পিআইও অফিসে প্রবেশ করে মেম্বারকে হত্যা ঘটনা তারই জলন্ত প্রমাণ। বর্তমানে ২০ হাজারের অধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নির্বিঘ্নে পার্বত্য জুড়ে বিদ্যমান রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে পার্বত্য চট্টগ্রামকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দেশ হতে আলাদা করে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুর বা দক্ষিণ সুদানের মতো আলাদা খ্রীস্টান দেশ গঠন করবে।

যেখানে প্রশাসন ও আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর প্রকাশ্যে হামলা হয় সেখানে সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে কতটুকুই বা নিরাপদ?

স্বাধীন দেশে যদি এমন ভয়ানক চিত্র হয় তাহলে আমাদের স্বাধীনতার প্রাপ্তি কি? ৩০ লক্ষ শহীদ ও মা-বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে কি আমরা এমন স্বাধীনতা চেয়েছি? যে স্বাধীনতার দেশে অবৈধ অস্ত্রধারী, দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক উপজাতি সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন-গুম করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে! এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি৷ স্বদেশীয় মীরজাফর বেইমান গুলোই আজ উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের পরোক্ষ সহযোগিতাকারী। ঘাতক দালালদের মেরুদণ্ড বাংলার মাটি হতে ভেঙ্গে দিতে হবে। সেসময় আর বেশি দেরি নয়। আমাদের শহীদের রক্ত এভাবে বৃথা যেতে পারে না। পার্বত্য পরিস্থিতি মোকাবেলা এদেশের মুক্তি জনতাকে আবারো ৭১ রচিত করতে হবে।

পারভেজ মারুফ বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক

আগের পোস্টসমরে আমরা, শান্তিতে আমরা,সর্বত্র আমরা দেশের তরে- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
পরের পোস্টদীঘিনালায় অস্ত্র ও চাঁদার টাকা সহ এক ইউপিডিএফ সন্ত্রাসী সেনাবাহিনীর হাতে আটক।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন