বান্দরবানের আলোচিত চিম্বুক পাহাড়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা প্রায় সাড়ে তিন হাজার ফুট। নীল আকাশের নিচে সবুজ আরণ্যে বিস্তৃত দৃষ্টিনন্দন এ পাহাড়টিকে দেখলে যে কারো মন তলিয়ে যাবে প্রশান্তির মহাসমুদ্রে। চতুর্পাশে ছোট ছোট পর্বতমালায় বেষ্টিত মাঝখানে মিনারের ন্যায় দাড়িয়ে মেঘমালার সাথে লুকোচুরি খেলার চুম্বক পর্বতের হাস্যউজ্জ্বল দৃশ্য ভ্রমন পিপাসু মানুষের মণিকোঠায় শ্রাবণের বারিধারা বর্ষিত হয়।
আঁকা বাঁকা পথ আর গগন ছুুই ছুই পাহাড় প্রকৃতি প্রেমীদের চিত্তে আঠারোর উষ্ণ ছোয়া উঁকি দিয়ে রোমাঞ্চকর ভাবাবেগের উন্মেষ ঘটায়।
চিম্বুকের শিখরে আরোহণ করে ফাল্গুনের কুকিলের কুহুতান এবং হালকা শিরশিরে বাতাস দেহের প্রতিটা শিরায় মৃদু ঝাঁকুনি দেয়, যা প্রেয়সীর মাধুরী মাখা নরম হাতের কোমল স্পর্শকেও ছাড়িয়ে যায়।
সন্ধায় চিম্বুকের উদর পৃষ্টে চাঁদের আলোকরশ্মির সাথে ঝিঝিদের ঝিরঝির বীণার সুরে মানবহৃদয়ে প্রেমের উত্তাল তরঙ্গ দেখে প্রকৃতি মুচকি হেসে তার বক্ষভরা যৌবনের রস উপভোগ করতে মানবকুলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়।
মানব এবং চিম্বুকের প্রকৃতির মাঝে যে নিবিড় সম্পর্ক তা টিকয়ে রাখতে এতবছর বাস্তবমুখী কোন পদক্ষেপ না থাকায় চিম্বুক অনেকটা অভিমানী ভূমিকায় রাষ্ট্রকে তিরস্কার করেছে।
পর্বত প্রেমীদের সাথে চিম্বুক পর্বতের সেই অভিমানী জায়গায় ভালবাসার সেতুবন্ধন হিসেবে আবির্ভূত হয়ে ৫ তারকা হোটেল।
লাখো মানুষের দুঃখ, কষ্ট, বেদনা চিম্বুক পর্বত তার আপন সত্তা দিয়ে অনুভব করছে। আবারও অতীতের মতো রূপ, রস, গন্ধে ভরপুর প্রকৃতি ও মানুষের সহাবস্থানে সুন্দর হয়ে উঠবে চুম্বক পর্বত। প্রতিটি সভ্যতা গড়ে উঠবে প্রকৃতির প্রকৃত বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে। প্রকৃতির ভাবাবেগের জায়গা অনেক বুঝতে না পেরেই চিম্বুকে ৫ তারকা হোটেল নির্মানের বিরোধিতা করেছে। প্রকৃতি সম্পর্কে যারা ঠুনকো চিন্তা করে মতামত ব্যক্ত করে তাদের সম্পর্কে “আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছেন প্রকৃতির গভীরে তাকাও তাহলে তুমি সবকিছু আরও ভাল করে বুঝতে পারবে।”