পার্বত্যাঞ্চলে কাঁচাবাড়ি পুড়ে গেলে কিংবা ভেঙে গেলে সরকার পাক্কা দালান নির্মাণ করে দেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসীরা নিজেদের ঘরে নিজেরা আগুন দেন, ভাংচুর করেন, এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করেন। বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে এটাই প্রতীয়মান হওয়াটা স্বাভাবিক।
পাহাড়ে সব কিছু যেন বিপরীত হয়। বাঘাইছড়ি উপজাতি সন্ত্রাসীরা বাঙালীদের উপর নৃশংস হামলা করে দায়মুক্তি পেয়ে গেছে। ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক তাদের সম্পূর্ণ দখলে। বাঙালী কর্তৃক, হামলা, ভূমি দখল ও ধর্ষণের মত ঘৃণিত ঘটনা করেছে বলে মিথ্যা অভিযোগ তুলে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন।
বাস্তবতার নিরিখে বলতে গেলে:
বাঙালীরা হামলার শিকার হয়েও বিষয়টি তুলে ধরতে ব্যর্থ্য হয়েছে। আজকে কার্বারীর পুত্র কালাছোফা চাকমা, ভেঙ্গছোফা চাকমা সহ অজ্ঞাত বেশ কয়েক জন উপজাতি উশৃংখল যুবক বাঙালীর উপর হামলা চালান শুধু মাত্র দাবিকৃত চাঁদা দিতে অপারগ প্রকাশ করার কারণে। রাঙামাটি বাঘাইছড়ি সারোয়াতলী ৭ নং ওয়ার্ডে আব্দুর রব মিয়া সহ মোট তিনজনকে নৃশংসভাবে হামলা করে মারাত্মক আহত করার পরেও বিষয়টি নিয়ে পার্বত্য বাঙালীরা রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ। শুধু এ ঘটনা নয়, প্রতিটি ঘটনার সময় নিশ্চুপ থাকে। বাঙালীদের উপর হামলার বিষয়টি দামাচাপা দিয়ে সন্ত্রাসীরা উল্টো তাদের মদদপুষ্ট লোকদের ঘরবাড়ির উপর হামলা হয়েছে মর্মে অভিযোগ করছে। প্রচার মাধ্যমে তাদের এক আধিপত্য থাকায় তারা মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে বাঙালীদের উপর দোষ চাপিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। হামলার শিকার হলো বাঙালীরা সর্বশেষ মামলার শিকারও হবে বাঙালীরা। আজকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গুজব রটিয়ে দিতে ব্যাপক হারে অপচেষ্টা করে। তার মাঝামাঝি লাঠিসোঁটা, অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ফেসবুকে লাইভ ভিডিও করে বাঙালীদের প্রকাশ্যে হুমকি দেয়। এমন উগ্রতা ও উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের পরেও প্রশাসন সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে পারেনি। যদি এ ঘটনা বাঙালীরা করতো তাহলে বাঙালীর চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করতো প্রশাসন। সত্যি দুঃখজনক, বাঙালীদের উপর প্রচুর অবিচার হচ্ছে।
কিছু বাঙালীর কারণে পার্বত্য বাঙালীরা নির্যাতিত হচ্ছে, বারবার হত্যাকাণ্ড ও হামলা-মামলার শিকার হচ্ছে। প্রকৃত অর্থে বলতে গেলে পার্বত্য বাঙালীরা উদাসীন, যতক্ষণ পর্যন্ত নিজে ভুক্তভোগী হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত অন্যের বিপদে এগিয়ে আসবে না। বাঘাইছড়ি বাঙালী কৃষক নিজের জমিতে চাষাবাদ ও গরু চরাতে গেলে সন্ত্রাসীরা চাঁদার জন্য হামলা করে। এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে আমতলী সিজোগ ছড়া নামক স্থানে দুই মাছ ব্যবসায়ী মোটরসাইকেল আরোহীকে বেধড়ক মারধর করে, এবং গাড়িও ভাংচুর করে।
এ নিয়ে আমরা তীব্র প্রতিবাদ করলাম। যতটুকু পেরেছি প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছি, এবং প্রকৃত ঘটনা লেখালেখির মাধ্যমে তুলে ধরেছি। আমাদের লেখা বাঙালীদের উদাসীনতা ও আত্ম অহমিকার কারণে প্রচার হয়নি। অন্য দিকে উপজাতি সন্ত্রাসীরা একটা লেখা দিলে সেটা ক্ষণিকের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। অথচ জনসংখ্যা অনুপাতে আমরা তাদের চেয়ে কোটি কোটি গুনে বেশি। আমরা এমন নিজে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে অন্যের বিষয়ে নিশ্চুপ থাকি আর উপভোগ করি। আমাদের মন-মানসিকতা দিনদিন তলানির দিকে ধাবিত হচ্ছে।
বাঙালীর অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ও সাইনবোর্ড বিক্রি করে ধান্দাবাজি করা ব্যক্তিরা রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ। বিগত বছরে বাঙালীর উপর বেশকয়েকটি হামলা হয়েছে তারা যার কোনটি জন্য প্রতিবাদ করেনি! কেন যে, তারা জাতির অধিকারের দোহাই দেয়। বাঘাইছড়ি বাঙালী দুই ব্যবসায়িকে ব্রাশ ফায়ার, নানিয়ারচর বগাছড়ি বাঙালীর ঘরে আগুন, মাটিরাঙ্গার তবলছড়ি-তাইন্দং বাঙালীদের উপর দফায় দফায় হামলা, গত পরশু বাঘাইছড়ি বাঙালী মোটরসাইকেল চালকের গাড়িতে আগুন, আজ আবার হামলা। তারা এসব ঘটনা গুলোর কী কোন প্রতিবাদ করেছে? নিঃসন্দেহে করে নাই। আমার মাথায় আসে না জাতির দুঃসময়ের যদি তারা পাশে না থাকে তাহলে কখন থাকবে?
অন্য দিকে অদ্য ২৪ এপ্রিল ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ঘটনাকে ইস্যু করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা একটি ভাঙা চুরা ঘর ভেঙে তার দায়ভার বাঙালীর উপর চাপিয়ে দিয়েছে। উপজাতি ও ঘরবাড়িতে বাঙালী কর্তৃক হামলা হয়েছে বলে ইতোমধ্যে উপজাতিরা মিথ্যা-বানোয়াট তথ্য সারাদেশে প্রচার করে তাদের উদ্দেশ্য সফল করতে সক্ষম হয়েছে৷ প্রশাসনের বিরুদ্ধেও সন্ত্রাসীরা অপপ্রচার চালাচ্ছে। সরোয়াতুলি ৭ নং ওয়ার্ডে বিজিবি টহল দিতে গিলে সন্ত্রাসীরা বিজিবিকে গালিগালাজ ও বিজিবির সামনে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে অনাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিজিবি ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে কাঁচাবাড়ি পুড়ে গেলে কিংবা ভেঙে গেলে উপজাতীয়দের সরকার পাক্কা দালান নির্মাণ করে দেয়। এনজিও, দাতাসংস্থা ও সরকার উপজাতীয়দের কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় এজন্য। বেশিরভাগ সময় তারা নিজেদের ঘরে নিজেরা আগুন দিয়ে তার দায়ভার বাঙালী ও সেনাবাহিনীর উপর আরোপিত করে। মূলতঃ এসমস্ত টাকা লুটপাট করে খেতে ইউপিডিএফ- জেএসএসের মত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপ গুলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গামা ইস্যু সৃষ্টি করতে মরিয়া৷ পাহাড়ে প্রতিটি ঘটনার নৈপুর তারা। পার্বত্য চট্টগ্রামে অহরহ দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করে তারা এনজিও ও দাতাসংস্থা, সরকার থেকে বরাদ্দ নিয়ে সে বরাদ্দ লুটপাট করে খেয়েছে। ২০১০ সালে বাঘাইরহাট দাঙ্গাদাঙ্গা ও ঘরবাড়িতে আগুনের সূত্রপাত ছিল তারই অন্যতম কারণ। ২০১৭ সালে রামগড়, টিন শেডের বৌদ্ধ বিহার নিজেরা ভেঙে দিয়ে তার দায়ভার সেনাবাহিনীকে দিয়ে পরবর্তীতে সেনাবাহিনী থেকে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়েছে। এবং সেনাবাহিনীও ইজ্জত-সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে পাক্কা বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ করে দিতে বাধ্যহন।
লংগদু যুবলীগ নেতা নয়ন হত্যার ঘটনাকে দামাচাপা দিতে এবং, বরাদ্দ পেতে উপজাতি সন্ত্রাসীরা সাধারণ মানুষদের ঘর-বাড়িতে আগুন দেন। পরবর্তীতে সরকার কয়েকশো কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। সবাইকে পাক্কা বাড়ি নির্মাণ করে দেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে মূলত লোভে পড়ে তারা নিজেরা নিজেদের ঘরে আগুন দেন। আর এ এমন সব ঘটনা ঘটাতে উৎসাহ দিয়ে থাকে মূল হোতা হিসেবে দাতাসংস্থা, এনজিও সহ এদেশীয় কতিপয় সুশীল ও তথাকথিত গণমাধ্যগুলা।
সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত বাঙালি আমতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেল আলমের পিতা আব্দুর রব মিয়া। জানা যায়, বাঘাইছড়ি সারোয়াতলী ৭ নং ওয়ার্ডে চাঁদা না দেওয়াই রোজাদার বৃদ্ধা আব্দুর বর মিয়ার উপর হামলা করে কার্বারীর পুত্র কালাছোফা চাকমা, ভেঙ্গছোফা চাকমা সহ অজ্ঞাত বেশ কয়েক জন উপজাতি উ শৃঙ্খলা যুবক। অদ্য শনিবার ২৪ এপ্রিল ২০২১ খ্রিঃ ৩ ঘটিকার সময় হামলা করে। বাঙালি আব্দুর রব মিয়া নিজের জায়গাতে গরু চরাতে গেলে কতিপয় উপজাতি উশৃংখল যুবকরা হামলা করে চাঁদার জন্য। আহত আব্দুর বর মিয়া বর্তমানে বাঘাইছড়ি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
লেখক, রঞ্জিত দাস, বাঘাইছড়ি। লেখাটি মুক্তমতের ক্যাটাগরিতে প্রকাশিত।