শান্তিবাহিনীর হাতে এই দিনে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ রশিদ সরকার।

0

নিজেস্ব প্রতিনিধি

তথাকথিত শান্তিবাহিনীর হাতে এই দিনে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ রশিদ সরকার।

পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙ্গালী শূন্য করতে সমগ্র পাহাড়ে পরিকল্পিত গণহত্যা পরিচালনা করে তথাকথিত শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীরা। এসব গণহত্যার ঘটনাগুলোর ঘটনা দামাচাপা দিতে তৎকালীন ব্যাপক তৎপরতা চালায় সন্ত্রাসীরা। তখন তারা গণমাধ্যমের উপর সেন্সর আরোপ করতো তার কারণে পাহাড়ের অনেক বাঙ্গালী গণহত্যা এদেশের মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি৷ যা দামাচাপা পড়ে যায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে ছোটবড় মোট প্রায় ৪৬টি গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। তার মধ্যে লংগদু গণহত্যা ও পাকুয়াখালি ৩৫ কাঠুরিয়া গণহত্যা স্থান পেয়েছে।

১৯৮৯ সালের ৪ মে আজকের এই দিনে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তৎকালীন জনপ্রিয় বাঙালী নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ সরকার। তিনি রাঙামাটি লংগদু উপজেলার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তৎকালীন দেশদ্রোহী সন্তু গংদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (জেএসএস) তথাকথিত শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীরা এই বাঙালী নেতাকে হত্যা করে।

জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ৪ মে রোজ বৃহস্পতিবারের ঘটনা। চলছিলো পবিত্র মাহে রমজান মাস। লংগদু উপজেলার প্রথম নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব আব্দুর রশিদ সরকার সফরে মাইনী বাজার গিয়েছিলেন। আছরের নামায শেষে আনুমানিক ৪.৩০ মিনিটের সময় মাইনী বাজার হতে লংগদু সদরে ফিরছিলেন তিনি। ফিরতি পথে মুসলিম ব্লকের কিছু লোক তাকে তাদের সাথে ইফতারের নিমন্ত্রণ করলেন। কিন্তু; চেয়ারম্যান সাহেব রাজি হলেন না। তিনি বললেন যে সে বাসায় গিয়ে পরিবারের সাথে ইফতার করবেন।
এদিকে ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসছে। যখন তিনি লংগদু কাঠালতলী অতিক্রম করে বর্তমান বনবিহার গেইটের কাছে উপস্থিত হলেন তখনই তার উপর অতর্কিত আক্রমণ চালায় শান্তি বাহিনীর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের পিস্তলের গুলি আব্দুর রশিদ সরকারের দেহ ভেদ করে চলে যায়। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি, সাথে সাথে দেহ হতে প্রাণ পাখি উড়ে যায়। হারিয়ে যায় লংগদু উপজেলা তথা ভবিষ্যত পার্বত্য বাঙ্গালীর একজন দক্ষ অভিবাবক ও নেতৃত্ব। যুগে যুগেই বাঙ্গালী নেতৃত্ব থামাতে তারা হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠে।

এই ঘটনার পরপর বাঙ্গালীরা প্রতিবাদে নেমে আসলে শান্তিবাহিনী অতর্কিতভাবে গুলিবর্ষণ করে। এই গুলিবর্ষণে অনেক বাঙ্গালী নিহত ও আহত হয়। এই গণহত্যা লংগদু ইতিহাসে এক কলঙ্ক দিন। যা লংগদু তথা পার্বত্য বাঙ্গালীরা জীবনে ভুলবে না। তবে বাঙ্গালী দালালদের একটি অংশ উপজাতি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে মিলে এই গণহত্যার ইতিহাস মুছে ফেলতে চায়!

এই গণহত্যার ৩৫ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সরকার এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তথাকথিত শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়। hbf বলছে পার্বত্য চুক্তির অসাংবিধানিক বিতর্কিত ধারার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩৫ হাজার বাঙালী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীরা দায়মুক্তি পেয়ে যায়৷ আর এদিকে পার্বত্য বাঙালীরা স্বজন হারানোর শোকে কাতর।

দুঃখজনক য, উপজাতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাঙালী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ সরকারসহ বাঙ্গালী হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি দামাচাপা দিতে তৎকালীন থেকে সেনাবাহিনী ও বাঙালীদের উপর মিথ্যাচার করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজো ইউপিডিএফ সন্ত্রাসী কর্তৃক দাবি করে আসছে “১৯৮৯ সালে আজকের এই দিনে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় আর্মি ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর (ভিডিপি) সহায়তায় সেটলার বাঙালিরা পাহাড়ি অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে পরিকল্পিতভাবে এ গণহত্যা চালায়। এতে বহু পাহাড়ি হতাহত হয়। সেটলাররা পাহাড়িদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়, বৌদ্ধ মন্দির ও বুদ্ধ মুর্তি ধ্বংস করে। কিন্তু আজও এই গণহত্যার কোন বিচার হয়নি।”
বস্তুতঃ বাঙালী গণহত্যার ঘটনাটিকে দামাচাপা দিতে সন্ত্রাসীরা নির্লজ্জ মিথ্যাচারের আশ্রয় গ্রহণ করে!

পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী গণহত্যার সঙ্গে জড়িত জেএসএস তথাকথিত শান্তিবাহিনীর বিচার দাবি জানাই। সেসাথে স্বজন হারানো পরিবার গুলাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানাই। পার্বত্য চট্টগ্রামে যারা বাঙ্গালী হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠেছিল তারা কখনো আমাদের দেশটাকে বুকে ধারণ করতে পারেনি। তারা যুগে যুগে বাঙ্গালী এবং রাষ্ট্রের প্রতি বিদ্রোহ প্রদর্শন করেছে। এসকল দেশদ্রোহী সন্ত্রাসীদের যথাযথ বিচার নিশ্চিতই একমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করে শান্তি-সম্প্রীতি গড়ে তুলতে পারে।

আগের পোস্টসীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারের সড়ক ও বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনে সন্ত্রাসীদের বাধা
পরের পোস্টপার্বত্য উপজাতি সন্ত্রাসীরা কতটা বাঙালী বিদ্বেষী, এবং কতটা অমানুষ এটা তার প্রমাণ।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন