বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়ন এর উদ্যোগে আলীকদম উপজেলার কুরতকপাতা ইউনিয়নের দুর্গম এলাকায় কলেরা আক্রান্তদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান-প্রেস বিজ্ঞপ্তি: তারিখঃ ১৬ জুন ২০২১ খ্রিঃ
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার ৫নং কুরতকপাতা ইউনিয়নের মাংরতম পাড়া, ম্যানলিউপাড়া এবং সমথং পাড়ায় বিগত কয়েক দিন যাবত ব্যাপক আকারে কলেরার প্রাদূর্ভাব দেখা যায়। বর্তমানে উক্ত পাড়াসমূহে মুরং জনগোষ্ঠীর প্রায় শতকরা ষাট ভাগ কলেরায় আত্রুান্ত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় জীবন-যাপন করছেন। উল্লেখ্য আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও পুরষ ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন, যা অধিকাংশ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়। কলেরা প্রাদূর্ভাব এর শুরুর থেকেই আলীকদম সেনা জোনের টহল দলের মাধ্যমে উক্ত পাড়াসমূহে প্রতিনিয়ত বিশুদ্ধ পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ঔষধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। এছাড়াও গত ১৪ জুন ২০২১ তারিখ উক্ত স্থানে সামরিক ও বেসামরিক চিকিৎসক দল প্রেরণ করা হয় এবং একটি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। উক্ত এলাকার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়াতে জনসাধারণের সুচিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আওতাধীন সদর দপ্তর ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের উদ্যোগে অদ্য ১৬ জুন ২০২১ তারিখে জিএসও-২ (ইন্ট) এর নেতৃত্বে পুনরায় উক্ত দূর্গম এলাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে জরুরী স্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিপুল সংখ্যক জীবনরক্ষাকারী ঔষধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, কলেরা স্যালাইন, খাবার স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য ঔষধ এবং শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও উক্ত দুর্গত এলাকা হতে নিন্মেবর্ণিত তিন জন মুমূর্ষ রোগী ১. রেং অং ম্রো (১১), ২. মাংলাই ম্রো (০৫), ৩. ওয়াই চাদ ম্রো (৫৫)’কে হেলিকপ্টার যোগে বান্দরবান সেনানিবাসসহ হেলিপ্যাড এ নিয়ে আসা হয় এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে দূর্গতদের সহায়তায় প্রয়োজন অনুযায়ী সকল ধরনের সহায়তার জন্য ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। হেলিকপ্টার যোগে মেডিক্যাল টিম প্রেরণের সময় ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক, ৭ ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স, বিএম, সদর দপ্তর ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড, অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তা এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর যেকোন আপদকালীন সময়ে তাদের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করে আসছে এটি তারই একটি দৃষ্টামতমূলক উদাহরণ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও পার্বত্য এলাকার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী সহ সকল জাতি ও ধর্মের মানুষের পাশে থেকে তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং তাদের যে কোন প্রয়োজনে সর্বদা নিরলস ভাবে কাজ করে যাবে।