জামাল হোসেন, খাগড়াছড়ি।
জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে তৎপর৷ পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ। মাস কয়েক আগে সাজেকে উপজাতি জুমচাষীদের জুমপাহাড়ে দেওয়া আগুনে এক বৃদ্ধার ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়৷ পুড়ে ছাই হওয়া ঘরটির সে পুরাতন ছবিকে ইউপিডিএফ পুঁজি করেছে স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে। এই বিষয়ে সবচেয়ে অবাক করা তথ্য হল- সে ছবিকে নতুনভাবে এখন সামনে আনাও হয়েছে; সময়, স্থান ও ঘটনা পরিবর্তন করে একের পর নাশকতার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে; জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে প্রচার করা হচ্ছে, সেনাবাহিনী কর্তৃক সিন্দুকছড়ি থান্ডাছড়ি এক ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে; ঘর পুড়ার যে ছবিটি এখন ফেসবুকে ঘুরপাক খাচ্ছে তা কোন সিন্দুকছড়ি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঘর পুড়ার ছবি নয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইউপিডিএফ নিয়ন্ত্রিত অনলাইন মাধ্যম গুলোতে চরম মিথ্যাচার রটিয়ে দিচ্ছে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসীদের অভিযোগ, “মহালছড়ি-সিন্ধুকছড়ি রাস্তার পাশে থান্ডাছড়ি নামক স্থানে ৩০ শে জুন, রাত আনুমানিক ২ টার দিকে সেনাবাহিনী কর্তৃক ননজয় ত্রিপুরা নামে এক জুম্মের জুমঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, পুড়িয়ে দেয়া জুমঘরের পাশে একটি পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্প রয়েছে। বেশ কয়েকমাস আগে হতে ভুক্তভোগীকে উক্ত জায়গায় জুম না করার জন্য সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বলে অভিযোগ।”
সেনা সূত্র জানায়, পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্পের জায়গা গুলো দখল করার জন্য ইউপিডিএফ এধরণের মিথ্যাচার রটিয়ে দিচ্ছে। সেনাবাহিনী ঘর নির্মাণ করার কারিগর কারো ঘর ভেঙে দেওয়া কিংবা পুড়িয়ে দেওয়ার কারিগর নয়। তারা প্রত্যাহারকৃত সেনাক্যাম্পের জায়গা দখলের জন্য মূলত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে খাগড়াছড়ি মহালছড়ি হতে জালিয়াপাড়া ২৪ কিলোমিটার নান্দনিক সড়ক নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী৷ সড়কটি এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, এবং যাতায়াত ব্যবস্থা সহ পর্যটন শিল্প বিকাশের জন্য উপযোগী। তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য নিরাপদ আশ্রিত স্থান গুলোতে এখন মানুষ সমাগম, এবং প্রশাসনের উপস্থিতি। পূর্ব থেকে ইউপিডিএফ আশঙ্কা করছে তাদের এই জায়গা গুলো ছাড়তে হবে। অন্যদিকে তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা কোণঠাসা হওয়ার ভয় ছিলো এবং নিজেদের অস্তিত্ব বিলীন হবার ভয়ে পাহাড়ে সরকারের উন্নয়ন কাজের বিরুদ্ধে নানান মিথ্যাচার রটিয়ে দিয়ে কাজে বাধা সৃষ্টি করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপের সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রোপাগাণ্ডা শুরু করে। গত ১ মাস ধরে ইউপিডিএফ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উপজাতিদের ঘর ভাংচুর, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন ও ঘর পুড়িয়ে উপজাতিদের উচ্ছেদ করে ভূমি কেড়ে নেওয়ার মিথ্যে গল্পকাহিনী ছড়িয়ে আসছে।
সরেজমিনে পঙীমুড়া ও সিন্দুকছড়ি থান্ডাছড়ি গিয়ে জানা যায়, সেনাবাহিনী কর্তৃক কোন উপজাতির ঘর ভাংচুর কিংবা পুড়িয়ে দেওয়ার আলামত নেই৷ স্থানীয়রা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইউপিডিএফ পাহাড়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অশান্ত করার জন্য সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মারাত্মক মিথ্যে অপপ্রচার করছে। মানুষদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে দিচ্ছে।
নাম প্রকাশে একজন উপজাতি জানান, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এধরণের ঘৃণিত বিদ্বেষমূলক অভিযোগ করে ইউপিডিএফ সফল হবে না। সাধারণ মানুষ জানে ইউপিডিএফ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তাদের কাজ চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন-গুম করে পার্বত্য জনজীবন বিপর্যস্ত করে তোলা।