পারভেজ মারুফ, খাগড়াছড়ি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৮ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। Kaman kisha নামের একটি ফেসবুক আইডি হতে ‘অর্কমা মদখোর মাতাল উপজাতি উশৃংখল পুরুষ’ ও তার স্ত্রীর মধ্যকার ঘটনার ভিডিও শেয়ার করেন। ইতোমধ্যে শেয়ার করা ভিডিওতে লাইক পড়েছে ১২ শত +, কমেন্ট পড়েছে ২৩৮ টি, এবং শেয়ার হয়েছে ৮৬৬ টি ও ভিউ হয়েছে ৩৪ হাজার +।
Kaman Kisha আইডির পোস্ট লিংক… https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=523881038798087&id=100035285852067
উপজাতি নারী-পুরুষের মধ্যকার ঝগড়া বিবাদ থামানোর চেষ্টা না করে “একজন অসভ্য অমানুষ” ভিডিও’টি করেছেন! এখানে ভিডিও ধারণকারীর উচিৎ ছিলো স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার সমস্যাটা মিটিয়ে দেওয়া। বরং সে এটা না করে ভিডিও করে শেয়ার করে দেয়। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়।
এবার আসি ভিডিও’র মূল বিষয়বস্তু নিয়ে। ফেসবকু ভিডিও’টিতে যে নারীকে দেখছেন, তিনি একজন সাহসী ও কঠোর পরিশ্রমী নারী। স্বামী ও সন্তানদের কথা চিন্তা করে সারাদিন ধান চাষ, আদা, হলুদ, কলা ও আনারস উৎপন্ন করতে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। সারাদিন রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে বিজে জুমে চাষাবাদও করতে হয় এই নারীকেই। এতো কষ্ট করে কর্মহীন, অকর্মা মদখোর স্বামীকে ৩ বেলা মুখে আহার দেন। শত কর্মব্যস্ততার পরে যখন নারীটি ঘরে এসে মুখে আহার দেন কিংবা বিশ্রাম নেন, ঠিক তখনিই তার উশৃংখল অকর্মা মদখোর মাতাল স্বামী তার উপর হামলে পড়েন! উপজাতি পুরুষদের মধ্যে ৯০% পুরুষ অকর্মা ও মদখোর মাতাল ধাঁচের। তারা সবসময় বসে বসে তামাক টানবে আর মদ-গাঁজা খেয়ে মাতলামি করবে, এবং স্ত্রীকে নির্যাতন করবে। ওদের মধ্যে এই পুরুষটিও একজন অকর্মা ও মদখোর মাতাল। যে কীনা তার বাহু শক্তি স্ত্রী ও ঘরের হাঁড়িপাতিলের উপর করতে পারে! অকর্মা পুরুষটি দা দিয়ে ঘরের হাঁড়িপাতিল ও প্রয়োজনীয় মূল্যবান জিনিসপত্র গুলো কেটে নষ্ট করে দেয়। তার এমন অপরাধ জনিত কার্যকলাপ দেখে মনে হচ্ছে সে যে কোন সময় তার স্ত্রীকে হত্যা করতে পারে। তার উগ্রতা ও মারমুখী আচরণ দেখে এমনটাই কল্পনা করা স্বাভাবিক ব্যাপার।
এই নারী স্বামীর অত্যাচার, অবিচার অন্যায় অনেক দিন হয়তো চোখ বুজে সহ্য করে আসছেন। নারীর এই রাগও হয়তো অনেক অসহ্য যন্ত্রণার ফলে সৃষ্টি হয়েছে। স্বামীর অবহেলা ও মদ খেয়ে মন্দ ব্যাপার, যখন তখন দা দিয়ে জিনিসপত্র নষ্ট করা দেখতে দেখতে অতিষ্ঠ হয়ে আজ নিরুপায় হয়ে রাগান্বিত হয়েছেন হয়তো বা। তাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দেওয়ার একজন মানুষ খুবি প্রয়োজন। স্বামীর নিত্য অত্যাচারে অনেক সময় একজন নারী কুল হারা হয়ে যায়। কর্মহীন, মদখোর মাতাল ও উশৃংখল স্বামীকে নিয়ে বুকভরা কষ্ট ও অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করে হতদরিদ্র চাকমা উপজাতি নারীটিকে দিনযাপন করতে হয়! তার এমন করুণ অবস্থা দেখে তার প্রতি সহমর্মিতা রইলো, এবং খুবি মায়া হলো। সৃষ্টিকর্তা যেনো তার সংসারটা সুখময় করে দেন। তাদের মধ্যকার সৃষ্ট সমস্যা অলৌকিকভাবে সমাধান করে দেন। সে প্রত্যাশা রইলো।
তবে অপরাধীর অপরাধের বিষয়ে সত্য কথা গুলো বলতে হবে-
যে ব্যক্তি উপস্থিতি মানুষের সামনে, এবং ভিডিও ক্যামেরার সামনে এমন ঘৃণিত ও জঘন্য অপরাধ করার সাহস দেখাতে পারে সে মানুষের আড়ালে আরো ভয়ংকর কিছু করে স্ত্রীর সাথে। যা সবার অগোচরে রয়ে যায়। এটা যেমন নারী নির্যাতনের সামিল তেমনি সামাজিক অপরাধ, এবং ফৌজদারী অপরাধ। এধরণের অপরাধের ঘটনা করার কারণে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিৎ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ থাকবে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও সামাজিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে, এবং উক্ত নারীর নিরাপত্তার স্বার্থে ভিডিও’টি দেখে খুঁজে বের করে এই উশৃংখল অকর্মা মদখোরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার। যাতে ভবিষ্যতে কোন অমানুষ কোন নারীর সাথে এমন অমানুষিক আচরণ করার দুঃসাহস দেখাতে না পারে আর ঘরের হাঁড়িপাতিল সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নষ্ট করার দুঃসাহস না পায়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি নারীরা যুগ যুগ ধরে নিজ জাতির অকর্মা পুরুষ কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন। যার কারণে উপজাতি নারীরা মূলত কর্মসংস্থানে জড়িত থাকা বাঙালি পুরুষদের স্বামী হিসেবে পেতে অধীর আগ্রহী। স্বামী হিসেবে অধিকাংশ বাঙালি পুরুষরা যথেষ্ট যত্নবান,এবং স্ত্রীর প্রতি খুবি দায়িত্ববান।