ডেনমার্ক রাষ্ট্রদূতের রাঙ্গামাটি সফরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ সার্বভৌমত্বের জন্য কার্যকারী।
গত ২৪-২৫ অক্টোবর ২০২১ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত মিজ উইনি ইস্ট্রুপ পিটারসেন-এর রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রাম সফরকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুই জেলা প্রশাসককে দেশের পার্বত্য সার্বভৌমত্ব রক্ষার অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন। যার কারণেই পার্বত্য ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী জেএসএস সন্তু সন্ত্রাসী ও পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে জুম্মল্যান্ড প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন লালনকারী রাস্ট্রদ্রোহী দেবাশীষ রায় তেলে বেগুনে রেগেছে৷
ডেনমার্ক ও নরওয়ে দেশ দুু’টি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবাদে মদদ দিচ্ছে, এবং এঅঞ্চলে রাস্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চরম মিথ্যাচার রচিত করে৷ যার ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাঙ্গালী সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বহির্বিশ্বে। তাদের মিথ্যাচারের ধরুন ছিল- “পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক শাসন চলছে, পাহাড়ে আদিবাসীদের ভূমি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সেটেলার বাঙ্গালীরা দখল করছে। আদিবাসীদের হত্যা করছে, নারীদের সেনাবাহিনী ও বাঙ্গালীরা মিলে ধর্ষণ করছে। সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে ম্যালিটারি শাসনব্যবস্থা জারি রেখে আগ্রাসন চালাচ্ছে। আদিবাসী যুবকদের অস্ত্র গুঁজে দিয়ে সন্ত্রাস বানিয়ে নির্যাতন চালাচ্ছে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা প্রদান করছে। যার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি বিলুপ্ত হচ্ছে।” এই মর্মে বিভিন্ন সময় জার্মান ভিত্তিক গণমাধ্যম ‘DW একাধিক মিথ্যাচারমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ডেনমার্ক ও নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত ‘ডনাক’ নামে একটি প্রকল্প পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদের শিক্ষা, উন্নয়ন ও মানবাধিকার বিষয়ক সহায়তার নাম করে পাহাড়ে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করছে, বাঙ্গালী বিদ্বেষীমূলক প্রচারণাও করছে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সাধারণ উপজাতিদের খেপিয়ে তুলছে, উপজাতিদের আদিবাসী বানাতে তৎপরতা চালাচ্ছে, এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী ও বাঙ্গালী প্রত্যাহার দাবি জোরদার করার মিশন পরিচালনা করছে। তাদের এই সকল দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন হতে HBF সত্য প্রকাশের মাধ্যমে জোরাল ভূমিকা পালন করে আসছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ডেনমার্ক রাষ্ট্রদূতের রাঙ্গামাটি সফরকে ঘিরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শমূলক নির্দেশনা প্রদান করে জেলা প্রশাসকদের। যা খুবি কার্যকরী হিসেবে দেখছে পার্বত্যবাসী।
এবিষয়ে গত মাসের ২১ অক্টোবর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারি সচিব রেহানা পারভীনের স্বাক্ষরিত এক নিদের্শনায় জেলা প্রশাসকদের উক্ত পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উক্ত নির্দেশনার ৯টি পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে (ছ) ও (জ) ক্রমিকে নিম্নোক্ত দু’টি পরামর্শ রাস্ট্রের সার্বভৌমত্বের জন্য গুরুত্ববহন করে।
(ছ) সাম্প্রতিক সময়ে রাঙ্গামাটি জেলার বরকল উপজেলাস্থ হরিণা ইউনিয়নের রাবেতং (ভারতের সীমান্তবর্তী) এলাকা হতে পিসিজেএসএস (সন্তু)-এর সশস্ত্র সদস্যরা রাঙ্গামাটি সদরের বিভিন্ন স্থানে অনুপ্রবেশ করত: নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি রাঙ্গামাটি বরকল উপজেলার শুভলং বাজারে জেএসএস (এমএন লারমা) ও পিসিজেএসএস (সন্তু) দলের অবস্থান রয়েছে। এমতাবস্থায় সুনির্দিষ্ট ভ্রমণসূচী মোতাবেক পর্যাপ্ত পুলিশী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সুপারিশ করা হলো।
(জ) ভ্রমণসূচীতে বর্ণিত প্রতিনিধিদের চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়ের সাথে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাত ও সকালের নাস্তা গ্রহণের কথা উল্লেখ রয়েছে। বর্তমান সময়ে ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে পৃথককরণ, স্বাধীন জুমল্যান্ড প্রতিষ্ঠা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতির দাবী আদায়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গোপন তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। যা দেশ বিরোধিতার শামিল। তাই উক্ত বিষয়টি সরকার ও দেশের জন্য স্পর্শকাতর হওয়ায় বর্ণিত প্রতিনিধিদের চাকমা সার্কেল চীফ-এর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাত ও নাস্তা গ্রহণের পরিবর্তে রাঙ্গামাটি সাবারাং রেস্টুরেন্টে সৌজন্য সাক্ষাত ও সকালের নাস্তা গ্রহণ করা সাপেক্ষে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রণীত নীতিমালা আওতায় সফর পরিকল্পনার জন্য সুপারিশ করা হলো।
এর পূর্বেও চাকমা সার্কেল চীপ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নানান গোপন ষড়যন্ত্র করেছে। মার্কিন রাস্ট্রদূত বার্নিকাটের সঙ্গে তার নিজ বাসায় প্রশাসন ব্যতিত রেখে গোপন বৈঠক করেন। যা দেশের বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্র বলে প্রতিয়মান হয়। ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়ের পিতা ত্রিদিব রায় একজন আত্মস্বীকৃত রাজাকার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে উপজাতিদের একটি অংশের ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হলে বিদেশী রাস্ট্রদূত ও অতিথি, এবং মিশনারীদের কার্যক্রমের উপর নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে কথাবার্তা কিংবা শুভেচ্ছা বিনিময় করতে হবে।