বান্দরবানে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৪ তম বর্ষপূর্তি উদযাপন।

0

০২ ডিসেম্বর (বৃহঃবার) ২০২১ খ্রিস্টাব্দে সকাল ৯ ঘটিকায় বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর হতে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের আয়োজনে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৪ তম বর্ষপূর্তি পালন করা হয়। সকালে বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সেনাবাহিনী এবং সর্বসাধারণের একটি র‍্যালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে শুরু হয়ে রাজার মাঠ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।

র‍্যালী শেষে রাজার মাঠে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোঃ জিয়াউল হক। আরো উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান সেনা রিজিয়ন এবং সেনা জোনের অন্যান্য সেনা কর্মকর্তাগণ। উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, বান্দরবান জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগন, শিক্ষক,ছাত্র-ছাত্রী, ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকসহ প্রায় ৬০০ জন ব্যাক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানে স্থানীয় বক্তারা সম্প্রীতির বান্দরবানে শান্তি শৃংখলার কাজে নিয়োজিত দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীর ভূয়ষী প্রশংসা করেন। এছাড়াও সেনাবাহিনীর এই চলমান কার্যক্রমে সকলেই সহায়তা করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

বান্দরবান সেনা জোন কমান্ডার পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৪ তম বছর পূর্তিতে উপস্থিত সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। জোন কমান্ডার বলেন, বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য অনেক উদার এবং আন্তরিক। আমরা যুগান্তকারী নেতৃত্বের কারনে আজ শান্তি আনতে সক্ষম হয়েছি। পার্বত্য এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও পার্বত্য দূর্গম এলাকায় মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য রাস্তা তৈরি, স্কুল নির্মাণসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগে সর্বদাই সহযোগীতা করে আসছে। আমার আড়াই বছর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কর্মকান্ডে আপনাদের সহযোগীতা ও আচরনে আমি মুগ্ধ। আপনাদের এই সহযোগীতা আগামী দিনগুলোতেও পাব বলে আশা করি। তিনি আরো বলেন পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তিতে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অবৈধ অস্ত্র জমা দিতে হবে এবং বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিভিন্ন টক শো তে শান্তি চুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হলেও এই দুইটি বিষয় নিয়ে তারা আলোচনা করেন না।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রিজিয়ন কমান্ডার বক্তব্যের শুরুতেই সবাইকে শান্তির শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন ১৯৯৭ সালের বিজয়ের মাস ২ ডিসেম্বর যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ইনশাআল্লাহ এই শান্তি চুক্তিরও বিজয় আসবেই। সেনাবাহিনী সহ সকল আইন শৃংখলা বাহিনী শান্তি সম্প্রীতি উন্নয়নের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে মনিটরিং টিম গঠন করেছেন। চাকুরীর ক্ষেত্রে এবং পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডে ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠিদের জন্য বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। আজকের সকল কর্মসূচীর মূল লক্ষ্য সম্প্রীতির বন্ধনকে অটুট করা। আর যারা এই বন্ধন ছিন্ন করতে চায় আসুন আমারা সবাই মিলে তাদের প্রতিহত করি।তিনি বলেন, শান্তি চুক্তির পরেও যারা বিপথগামী হয়ে অস্ত্র বহন করছেন তাদের বিনয়ের সাথে বলছি আসুন আপনারা বিপথগামী না হয়ে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করি। তিনি শান্তি চুক্তির ২৪ বছর পূর্তির অপরুপ সৌন্দর্য্যের মিলন মেলা যেন অটুট থাকে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরিশেষে তিনি আয়োজক সবাইকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান এবং সবাই কে শান্তির শপথ নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

আলোচনা শেষে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন ও পার্বত্য জেলা পরিষদ এর পক্ষ হতে সকল সম্প্রদায়ের গরীব দুস্থদের মাঝে শীতের কম্বল। বিতরণ করেন বান্দরবান সেনা জোন। এছাড়াও সকাল ০৯ ঘটিকা হতে দিন ব্যাপী ৭ ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স এর মাঠে চক্ষু শিবিরের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। এসময় ৭ ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্সের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ চক্ষু রোগের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থাপত্র ও বিনা মূল্যে ঔষধ বিতরণ করেন। এছাড়া বেশী আক্রান্ত রোগীদের পরবর্তীতে বিনামূল্যে অপারেশন করার জন্য তালিকা তৈরি করেন।

সন্ধ্যায় রাজার মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে একটি আনন্দঘন পরিবেশের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তির সকল কার্যক্রমের পরিসমাপ্তি ঘটবে।

আগের পোস্টস্বাধীনতা বিরোধী বিশ্বাসঘাতকদের কোন ধৃষ্টতা প্রদর্শন বাংলার মানুষ মেনে নিবে না।
পরের পোস্টসাজেকে আগুনে রিসোর্ট ও রেষ্টুরেন্ট ভষ্মিভুত।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন