রুহুল আমিন তৌহিন, খাগড়াছড়ি।
(ঘ) ৪ নম্বর ধারার নিম্নোক্ত উপ-ধারা সংযোজন করা হইবে ‘কোন ব্যক্তি অ-উপজাতীয় কিনা এবং হইলে তিনি কোন সম্প্রদায়ের সদস্য তাহা সংশ্লিষ্ট মৌজার হেডম্যান/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌর সভার চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেট দাখিল সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট সার্কেলের চীফ স্থির করিবেন এবং এতদসম্পর্কে সার্কেল চীফের নিকট হইতে প্রাপ্ত সার্টিফিকট ব্যতীত কোন ব্যক্তি অ-উপজাতীয় হিসাবে কোন অ-উপজাতীয় সদস্য পদের জন্যে প্রার্থী হইতে পারিবেন না।
পার্বত্য চুক্তির (খ) খন্ডের ৪ (ঘ) অনুযায়ী অ-উপজাতি সদস্য প্রমাণে সংশ্লিষ্ট মৌজার হেডম্যানের পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌর সভার চেয়ারম্যানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে শুধুমাত্র হেডম্যান প্রদত্ত সার্টিফিকেটকে গুরুত্ব দিয়ে সার্কেল চীফ স্থির করেন অ-উপজাতি সদস্য! এর মাধ্যমে পার্বত্য চুক্তির শর্তকে লঙ্ঘন করছেন, সার্কেল চীফ।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌর সভার চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেটের কোন মূল্য দিচ্ছে না হেডম্যান ও সার্কেল চীফ। এর ফলে অ-উপজাতি সদস্য প্রমাণে বাঙ্গালীরা পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এখানে মৌজা হেডম্যানের পর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান/পৌর সভার চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেটের মাধ্যমে অ-উপজাতি সদস্য সার্কেল চীফকে স্থির করার কথা বলা হয়েছে। বাঙ্গালীদের জেলা পরিষদের সদস্য মনোনীত হওয়ার ক্ষেত্রেই অ-উপজাতি প্রমাণের জন্যও একই কথা বলা হয়েছে। পরিতাপের বিষয়, সার্কেল চীফ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান/পৌর সভার চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেট আমলে নিচ্ছেন না! তিনি আমলে নিচ্ছেন শুধুমাত্র হেডম্যান প্রদত্ত সার্টিফিকেট। মৌজার সব হেডম্যান হচ্ছে উপজাতি হতে। তাই মৌজার হেডম্যানের নিকট গিয়ে বাঙ্গালীরা হয়রানি হচ্ছে। উক্ত হেডম্যান অ-উপজাতি সদস্য প্রমাণের জন্য বাঙ্গালীদের হেডম্যান সার্টিফিকেট প্রদান করেন না।
একটি হেডম্যান সার্টিফিকেটের জন্য বাঙ্গালীরা মোটা অংকের টাকা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট মৌজার হেডম্যানকে। এই বৈষম্য থেকে বাঙ্গালীদের পরিক্রাণে বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। অ-উপজাতি সদস্য প্রমাণে সাংবিধানিক কোন নিয়মনীতি নেই। অসাংবিধানিক ভাবে অ-উপজাতি সদস্য প্রমাণ করতে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালীরা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে৷ একজন বাঙ্গালীকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়নি। এখানে বাঙ্গালীদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে অ-উপজাতি হিসেবে। আর এই অ-উপজাতি সদস্য প্রমাণে বাঙ্গালীদের উপজাতি হেডম্যান ও সার্কেল চীফদের ধারে ধারেই যেতে হচ্ছে৷ পার্বত্য চুক্তিতে অনেকগুলো অসাংবিধানিক ধারা রয়েছে, যাহা বাংলাদেশ সংবিধানকে লঙ্ঘন করে। অসাংবিধানিক ও সংবিধানের সাংঘর্ষিক এসমস্ত বিতর্কিত ধারা সংশোধন করা না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিরতা তৈরির পাশাপাশি বৈষম্য ও বাঙ্গালী হয়রানি বাড়বে।