রানা আহম্মেদ, বান্দরবান
পার্বত্য বান্দরবানে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর অপহরনের নাটক সাজানো উপজাতি স্বামী রেথোয়াইনু মার্মাকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সকালে রাজবিলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মৃত সিংম্যানু মার্মা এক সন্তানের জননী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, স্ত্রী সিংম্যানু মার্মাকে কুপিয়ে হত্যার পর সন্ত্রাসীরা রেথােয়াইনুকে অপহরন করে নিয়ে যাচ্ছে বলে অপহরনের নাটক সাজিয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার কে ফোন দিয়ে পালিয়ে যায় রেথোয়াইনু মার্মা। খবর পেয়ে পাড়াবাসী রেথোয়াইনু মার্মার বাসায় গেলে তার স্ত্রীকে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পড়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়। রাতে সন্ত্রাসীদের হামলা ও স্বামীকে অপহরনের বিষয়টি এলাকাবাসীর কাছে রহস্যজনক মনে হয়। সন্ত্রাসীদের আগমনের কোন আলামত পাড়াবাসী দেখতে পায়নি এবং নিজের অপহরনের খবর নিজে ফোন দিয়ে বলাতে সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। এরপর থেকে পাড়ার মানুষ পলাতক স্বামী রেথোয়াইনুকে খুজতে থাকে রাতের বেলা তাকে রাজবিলা ইউনিয়নের থংজামা পাড়ার একটি পাহাড়ে দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পাহাড়টি ঘেরাও করে রাখে পরে সকালে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার সাথে জড়িত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করে।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার শৈসাচিং বলেন, সন্ত্রাসীদের হামলার কোন আলামত দেখতে না পেয়ে পাড়াবাসীর সন্দেহ হয়। কেন না সন্ত্রাসী আসলে এলাকার মানুষ জানতে পারত। আর তাকে অপহরণ করলে সে নিজে ফোন দিতে পারত না। সেটার কারণে সন্দেহ আরো বেশী হয়। এরপর থেকে পাড়ার মানুষ তাকে খুজতে থাকে। পরে শুক্রবার সকালে তাকে পাহাড় থেকে ধরে পাড়ার মানুষ পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
স্ত্রী হত্যার দায়ীটি সকলেই প্রথম প্রথম মগ লিবারেশন পার্টি (এমএলপি) উপর দেয়৷ সবার ধারণা ছিল এমএলপি সিংম্যানু মার্মাকে গণধর্ষণ ধরার পর নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এবং শরীরের কাপড় এলোমেলো করে রাখে। অথচ নিজ স্বামী তাকে হত্যা করে শরীরের কাপড় এলোমেলো করে রাখে। যাতে সবাই মনে করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং এটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দ্বারা ঘটেছে!
পার্বত্য চট্টগ্রামে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্তৃক হত্যা, অপহরণ ও ধর্ষণ হচ্ছে। যার কারণে মানুষ আতঙ্কে আছে, এমন পরিস্থিতিতে স্বামী নিজেই স্ত্রীকে হত্যা করে নাটক সাজানো জঘন্য অপরাধ৷ এমন অপরাধ ও স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।