মোঃ সোহেল রিগ্যান– ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সময় ‘উপজাতি’ হিসেবে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত করে পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র জাতিসত্বার নেতা সন্তু লারমা। এ চুক্তির সুফল হিসেবে উপজাতি কোটায় তারা সরকারি চাকরি, পড়াশোনা, সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও হঠাৎ এদেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীগোষ্ঠীর খপ্পরে পড়ে নিজেদেরকে আদিবাসী হিসেবে দাবি করছে! পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাসিন্দারা দীর্ঘসময় নিজেদের উপজাতি হিসেবে পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করতেন। কিন্তু ২০০৭ সালে জাতিসংঘ আদিবাসী অধিকার বিষয়ক ঘোষণাপত্র প্রকাশ করার পর থেকে নিজেদেরকে আদিবাসী পরিচয় দিয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জোরদার করে৷
৯-ই আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস আসলেই তারা এদেশের মতলববাজগোষ্ঠীর সঙ্গে ঐকবদ্ধ হয়ে ডামাডোল পিটিয়ে আদিবাসী দিবস পালন করে।
এসময় দেখা যায়, এদেশের সুশীল, প্রগতিশীল, পত্রপত্রিকার সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা টকশো, সভা-সেমিনারে উপজাতিদের আদিবাসী পরিচয়ে সম্বোধন করে এবং সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতির দাবি তোলে। পক্ষান্তরে এটা অযৌক্তিক দাবি, এবং সংবিধান অবমাননার সামিল৷ কারণ, বাংলাদেশ সংবিধানের ২৩ (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী-উপজাতি ও ক্ষুদ্র জাতিসত্বা হিসেবে তারা স্বীকৃত। তাই
সরকার আদিবাসী শব্দ ব্যবহার বন্ধ করতে বারবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে৷ তারপর উল্লেখিত মহল আদিবাসী শব্দ’টি ব্যবহার করছে!
আগামী ৯-ই আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসকে সামনে রেখে গত ১৯-ই জুলাই ২০২২ খ্রিস্টাব্দ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় এর উপসচিব শেখ শামছুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা করা হয়।
উক্ত প্রজ্ঞাপনে সংবিধান সম্মত শব্দ ব্যবহারের নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত টকশোতে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিশেষজ্ঞ, এবং সংবাদপত্রের সম্পাদকসহ সুশীল সমাজের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গকে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার না করার বিষয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে প্রচারের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেছেন।