বিপন চাকমা পাহাড়ের এক আলোচিত-সমালোচিত নাম। পার্বত্য ত্রাণ ফাউন্ডেশন নামে একটি সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে তার পদচারণা। সংগঠনের বিভিন্ন মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে গোপন ভিডিও ধারণ করে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেল করে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করার মাধ্যমে বহু সমালোচিত হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন মেয়েদের সাথে শারীরিক সম্পর্কস্থাপন করে ফেসবুকে ভাইরাল করার নাম বিপন চাকমা। রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার দুর্গম এলাকায় তার বাড়ি। বিভিন্ন নারীদের সঙ্গে ছবি তোলে সেক্সুয়ালি ও কুরুচিপূর্ণ ক্যাপশন দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পাহাড়ি নারীদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিপন বিগত কয়েক বছর ধরে সমালোচনার কেন্দ্রে বিন্দু। পার্বত্য ত্রাণ ফাউন্ডেশন করে প্রথমে আলোচনায় আসলেও সে আলোচনায় নিজেকে বেশিদিন ধরে রাখতে পারেনি। তার একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও বেপরোয়া জীবন পাহাড়ী সমাজ পেরিয়ে বাঙালি সমাজেও তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। নেটিজেন সহ পাহাড়ি যুব সমাজ মনে করে, “বিপন চাকমাকে না থামানোর কারণে একের পর এক নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক এবং ভিডিও ধারণ করে সামাজিকভাবে মেয়েদের হয়রানি করাসহ নানান বঞ্চনা দেওয়ার এ সুযোগ সে পেয়েছে। বিপন যাকে তাকে হেনেস্তা করে আসছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর পোস্টগুলো কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যে ভরা৷ তার বেশিরভাগ পোস্ট বিতর্কিত ও নারীদের নিয়ে অবমাননামূলক ক্যাপসনে ভরা। প্রায় শতাধিক মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং তাদেরকে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেল করেছে।”
গত ২০ জানুয়ারী ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে খাগড়াছড়ি মধুপুর সুনয় চাকমা প্রকাশ রুবেল চাকমার বিয়ের নিমন্ত্রণ অনুষ্ঠানে যায় বিপন চাকমা। বিয়ের নিমন্ত্রণে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জেএসএস সংস্কারপন্থী এমএন কর্মীরা তাকে বর্বরোচিতভাবে নির্যাতন করে। সূত্রে জানা যায় তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে প্রচণ্ড মারধোর করা হয়। তাকে মারধর করার ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। জেএসএস সংস্কার এমএনপন্থীরা নির্যাতন করলেও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) প্রসিতমূল গ্রুপের কর্মী সমর্থকরা বিপন চাকমার ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে বিচার দাবি করেছে। সংস্কার এমএন ও ইউপিডিএফ এই দু’টি সংগঠন মূলত বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। এরা পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ পাহাড়ি-বাঙালি হতে অবৈধ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করে। চাঁদাবাজির অর্থ দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলি হতে অবৈধ অস্ত্রসংগ্রহ করে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করে। এ সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্রের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে এবং দেশের বিরুদ্ধে ধৃষ্টতা প্রদর্শন করে। বিপন চাকমার বেপরোয়া জীবন, নারী বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড ও নারীকে ভোগবিলাস করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টিকারী কিন্তু এই সংগঠনগুলো। বিপন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান কুৎসা ও বিদ্বেষমূলক তথ্য ছড়িয়ে জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
নেটিজেনরা বিপন চাকমার ওপর হামলাকে সাধুবাদ জানিয়ে তাকে থামানোর জন্য এটি যথেষ্ট বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে। তবে অনেকে অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠিক হয়নি। তাকে এভাবে নির্যাতন না করে তার বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা কিংবা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।