পার্বত্য চট্টগ্রামে সংসদীয় আসন ৩টি থেকে ৭টিতে উন্নিত করা ন্যায দাবী।

0

পার্বত্য চট্টগ্রামে সংসদীয় আসন ৩টি থেকে ৭টিতে উন্নিত করা স্থানীয় জনসাধারণের ন্যায দাবী।

বাংলাদেশের আয়তনের এক-দশমাংশ পার্বত্য চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান। এই তিনটি পার্বত্য জেলায় মাত্র তিনটি সংসদীয় আসন রয়েছে। অথচ আয়তনের দিক দিয়ে দেশের এক-দশমাংশ। এ তিনটি জেলার মোট আয়তন ১৩,২৯৫ বর্গ কিলোমিটার।  স্থানীয় অধিবাসীদের ক্ষোভ সমতলে একটি উপজেলায় একটি সংসদীয় আসন কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলাতে মাত্র তিনটি সংসদীয় আসন। রাঙ্গামাটি জেলা আয়তনের দেশের সর্ববৃহৎ জেলা। এ রাঙ্গামাটির আয়তন ৬১১৬,১৩ বর্গ কিলোমিটার। বান্দরবান জেলার আয়তন ৪৪৭৯.০৪ বর্গ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ি জেলার আয়তন ২৬৯৯.৫৬ বর্গ কিলোমিটার। তিনটি জেলায় ৩জন এমপি উপজাতি সম্প্রদায় হইতে এবং একজন মহিলা এমপি’ও উপজাতি সম্প্রদায় হইতে তা নিয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের বিভিন্ন অভিযোগ থাকে প্রায়শই। বিশাল জেলা হওয়ার কারণে স্থানীয় জনসাধারণে সমস্যা ও অধিকার বিষয়গুলো মহান জাতীয় সংসদে পৌছায় না। একজন এমপির পক্ষে এতবড় জেলা দেখবাল এবং মানুষের সমস্যা জানা এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনাসহ বরাদ্দ বেশি আদায় করা সম্ভব হয়না। তাছাড়া উপজাতি সম্প্রদায়ের এমপি হওয়ার কারণে জাতীয় মহান সংসদে বাঙ্গালীদের অধিকারের কথা বলা হয়না। তাই তিন পার্বত্য জেলায় সংসদীয় আসন ৩টি থেকে ৭টিতে উন্নিত করার জোর দাবি উঠছে।

রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল,১ রাঙ্গামাটি সদর, কাউখালী, নানিয়ারচর ২, কাপ্তাই, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি, জুরাইছড়ি ৩, এই জেলায় মোট ৩টি সংসদীয় আসন বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ। রাঙ্গামাটি জেলায় ১০টি উপজেলা, ১২টি থানা, ২টি পৌরসভা, ৫০টি ইউনিয়ন, ১৫৯টি মৌজা, ১৩৪৭টি গ্রাম ও ১টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত। জনসংখ্যা ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী- ৬৪৭৫৮৭ এবং ভোটার সংখ্যা ছিল একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৪১৮২১৫
অথচ এর থেকে কম জনসংখ্যা ও ভোটার নিয়েই ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনে একজন সংসদ সদস্য রয়েছে। ঢাকা-৪ আসন, খুলনা-৩ আসন,ময়মনসিংহ-৩ আসন রয়েছে। এসব আসনের ভোটার কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা থেকে অনেক কম। জাতীয় সংসদে বাজেট বরাদ্দ করা হয় সংসদীয় আসন হিসেবে। কিন্তু দুঃখজনক যে বিশাল আয়তনের এই তিন জেলায় মাত্র ৩ জন এমপি হওয়ার কারণে বরাদ্দ কম দেওয়া হয়। ৩টি সংসদীয় আসনের সীমিত বরাদ্দ দিয়ে তিন জেলার ২৬ উপজেলার উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করা কষ্টসাধ্য হয়। যার কারণে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পাহাড়ে কম হচ্ছে৷ এর ফলে এখানকার জনসাধারণ পিছিয়ে পড়ছে, সমতলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারছে না। তাই সংসদীয় আসন ৩টি থেকে ৭ টিতে উন্নিত করা ন্যায় সঙ্গত দাবী।

ঠিক একইভাবে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি, দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি সদর, মাটিরাঙ্গা ১, রামগড়, গুইমারা, মানিকছড়ি ও মহালছড়ি ২, এই জেলায় মোট ২টি সংসদীয় আসন দাবী স্থানীয়দের। জনসংখ্যা ৭১৪১১৯। একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ভোটার সংখ্যা ছিল ৪৪১৭৪৩

বান্দরবান লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি ১, এবং বান্দরবান সদর, থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি ২, এই জেলায় ২টি সংসদীয় আসন উন্নতি করার দীর্ঘদিনের দাবী করে আসছে। সংখ্যা রয়েছে- ৪৮১১০৯। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল- ২৪৬৬৫৩

এই তিনটি জেলায় কমপক্ষে ৭টি সংসদীয় আসন করা যায় আয়তন এবং ভোটার বিবেচনায় কিন্তু ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের কারণে তা করা হচ্ছে না। কারণ তিনটি জেলার জেলা সদর ও উপজেলা সদরগুলো বাঙ্গালী অধ্যুষিত তাই যদি আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয় তখন এসব আসনে বাঙ্গালী এমপি নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত উপজাতীয় নেতৃত্বে শ্রেণি এবং একটি ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী এখানে সংসদীয় আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করার দাবির বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। তাদের বিরোধিতার সত্ত্বেও এখন স্থানীয় উপজাতি-বাঙ্গালীদের দাবি অন্ততপক্ষে ৭টি সংসদীয় আসনে উন্নিত করার।

সুতরাং বলতে চাই- পার্বত্য চট্টগ্রামে ৩টি সংসদীয় আসন দিয়ে এখানকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন কোনভাবেই সম্ভব নয়। তাই এখানকার পিছিয়েপড়া জনসাধারণের গণদাবির প্রেক্ষিতে সংসদীয় আসন ৭টিতে উন্নিত করা সময়ের ন্যায দাবী।

আগের পোস্টউন্নয়ন বোর্ডের শিক্ষাবৃত্তিতে সাম্প্রদায়িকতার নিন্দা জানিয়েছে পিসিসিপি।
পরের পোস্টজুরাছড়ি জোন কর্তৃক দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন