বাংলাদেশের এক-দশমাংশ পাহাড় প্রাকৃতিক ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি অপার সম্ভাবনাময় পার্বত্য চট্টগ্রাম। এই অঞ্চল নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠীর শকুনের দৃষ্টি ভারতীয় উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার প্রাক্কাল থেকে শুরু হয়েছে। ১৯৪৭ সালে পাক-ভারত বিভক্তির প্রাক্কালে কাশ্মীর ভারতের পক্ষে গেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাকিস্তানের পক্ষে যায়৷ ‘৪৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি জনগোষ্ঠীর তথাকথিত কর্ণধার চাকমা রাজপরিবার রাঙ্গামাটিতে ভারতের পতাকা উত্তোলন করেন এবং বান্দরবনে বোমাং সার্কেল মায়ানমারের পতাকা উত্তোলন করেন। সে সময়ে উপজাতিরা মুসলিম পাকিস্তানের পক্ষে না থেকে হিন্দু ভারতের পক্ষে থাকার চেষ্টা করে। উপজাতীয়দের বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতা ও প্রবণতা সেই ৪৭ থেকে উন্মোচিত। একটি অশুভ শক্তি ও মতলববাজ গোষ্ঠী প্রায়শই অভিযোগ করে থাকে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সৃষ্টির কারণ নাকী সামরিকায়ন এবং বাঙালি অনুপ্রবেশ। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বলতে চাই ৪৭ সালে সেনাবাহিনী ও বাঙালি সমতল থেকে পাহাড়ে অনুপ্রবেশ করেনি তখন কেন উপজাতিদের বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতা ছিল? উপরোক্ত মতলববাজ গোষ্ঠী এও বলে থাকে যে পাহাড়ে উপজাতিরা তাদের ভূমি অধিকারের জন্য জন্য অস্ত্র হাতে নিয়েছে! এই মতলববাজ গোষ্ঠী ইনিয়ে বিনিয়ে উপজাতিদের দেশ বিরোধী সশস্ত্র তৎপরতাকে তাদের অধিকার ও আত্মরক্ষার সংগ্রাম বলে গিলাচ্ছে।
পার্বত্য উপজাতিদের ব্রিটিশরা এদেশে অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধির ৫২ ধারা মতে পার্বত্য উপজাতিরা বহিরাগত। রেফারেন্স দিয়ে বললে, পার্বত্য উপজাতিরা আজ নিজেদের ভূমিপুত্র দাবি করলেও তারা এদেশের ভূমিপুত্র নয়। হিলট্রাক্টস ম্যানুয়েল ১৯০০/১ এর ৫২ ধারাতে তাদের অভিবাসন চিহ্নিত করা হয়েছিলো৷
মুসলিম বাঙালি বিরোধী উপজাতিদের বৈরিতা ও বিশ্বাসঘাতকতা ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ। তাদের শিরায় উপশিরায় হিংস্রা, অহঙ্কার ও অকৃতজ্ঞ৷ এই বিশ্বাসঘাতক উপজাতিদের প্রতি সরকার যে সহনশীল ও উদাসীন নীতি প্রথা বেছে নিয়েছে। তারা এ সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে দিনদিন রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি করছে৷ রাষ্ট্র ও বাঙালি বিরুদ্ধের অস্ত্র হাতে নিয়েছে। প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট, অপবাদ প্রচার করছে। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য উপজাতিদের সরকার মেনে নিয়ে তাদের বাংলাদেশে বিরোধী মনোভাব কে আরো চাঙ্গা করেছে। পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে সরকার উপজাতিদের সাধারণ ক্ষমা করেছে। অধিকিন্তু এই উপজাতিরা বিশ্বাসঘাতক, নিমকহারামি ও অকৃতজ্ঞতার পরিচয় বহনকারী। তাদের মত বেইমান মার্কা উপজাতিদের প্রতি সহনশীল নীতি এবং উদারতা সরকারের জন্য ভুল সিদ্ধান্ত। যার মাশুল একদিন রাষ্ট্রকে দিতে হবে। এই উপজাতিরা কখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে মেনে নিবে না। পাহাড়ের আনাচে-কানাচে এখনো অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি। অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বারুদের গন্ধ সারি সারি লাশ এখনো পাহাড়ে পড়ছে। কত মা-বাবা তাদের সন্তান হারিয়েছে যার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। উপজাতিরা অধিকারের কথা বলে তার অন্তরালে সশস্ত্র সংগ্রামের নামে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গভীর এক ষড়যন্ত্র করছে। সে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে বাংলাদেশকে দ্বিখণ্ডিত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আলাদা একটি রাষ্ট্র গঠন করা। এ স্বপ্ন লালন করে উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো হইতে অবৈধ ভারী অস্ত্র, যুদ্ধের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করছে। তাদের এই কাজে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে দেশীয় মতলববাজ গোষ্ঠী এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠীর এনজিও, দাতাসংস্থা ও মিশনারীরা।
যুগের পর যুগ ধরে বিদ্রোহ, দাঙ্গাহাঙ্গামা ও বিশৃঙ্খলায় সম্পৃক্ত থাকা উপজাতিদের পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা এবং আকাশচুম্বী সুযোগ-সুবিধা দেওয়া মানেই রাষ্ট্রকে দ্বিখন্ডিত করার দিকে ধাবিত করা।