বান্দরবানের রুমায় কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) হামলায় নিহত সেনাসদস্য আলতাফ হোসেন মাছুমকে (২৪) অশ্রুসিক্ত হয়ে শেষ বিদায় জানিয়েছেন তার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু ও এলাকাবাসী। তার জানাজায় হাজারও মানুষের ঢল নামে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুর ২টায় নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলার কাদিরহানিফ ইউনিয়নের পূর্ব লক্ষ্মী নারায়ণপুর গ্রামের তার নিজ বাড়ির প্রাঙ্গণে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ক্যাপ্টেন সাদেকের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল নিহতের সম্মানে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় মাছুমের আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন, ভাইস-চেয়ারম্যান নূর আলম সিদ্দিকী রাজু, কাদির হানিফ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহিম প্রমুখ।
এর আগে, বেলা সোয়া ১২টায় তার মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি চট্রগ্রাম থেকে নোয়াখালী পৌঁছায়।
জানা যায়, মাছুমের বাবা আবুল কাশেম স্থানীয় রেলগেট এলাকায় ডেকোরেশনের ব্যবসা করতেন। ২০১৭ সালে অসুস্থ হয়ে মারা যান তিনি। সে বছরই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগ দেন মাছুম। এক ভাই আর এক বোনের মধ্যে মাছুম বড়। তার ছোট বোন সানজিদা সুলতানা মিম গত বছর অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে পরিবারের জীবিকা উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন তিনি। সবশেষ ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বাড়ি আসেন মাছুম। ছুটি চলাকালীন তার জেঠাতো ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। গত ২৬ এপ্রিল বাড়ি থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশে যান তিনি। মা ও বোনের সঙ্গে প্রায় দিনই কথা হতো তার। তিন দিন আগে শেষবারের মতো মায়ের সঙ্গে কথা হয় মাছুমের।
উল্লেখ্য, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রুমা উপজেলার সুংসুংপাড়া সেনা ক্যাম্পের আওতাধীন জারুলছড়ি পাড়া নামক স্থানে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানার খবর আসে। এ সংবাদ পেয়ে সুংসুংপাড়া আর্মি ক্যাম্প থেকে মেজর মনোয়ারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল মঙ্গলবার সেখানে যায়। দলটি জারুলছড়ি পাড়ার পানির ছড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটের দিকে কেএনএ’র আইইডি বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলিবর্ষণের মুখে পড়ে। এতে দুই সেনাসদস্য ও দুই কর্মকর্তা আহত হন। তাদের উদ্ধার করে দ্রুত হেলিকপ্টারে চট্টগ্রাম সিএমএইচে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই সৈনিক মারা যান। আহত দুই কর্মকর্তা ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন