পার্বত্য চট্টগ্রামে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করে কুকি ল্যান্ড করতে চাওয়া নাথান বম সৃষ্ট কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) কে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (জেএসএস) সন্তু গ্রুপ কর্তৃক অস্ত্র ও রসদ সরবরাহসহ সবধরনের সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১৯৯৭ সালের ২-রা ডিসেম্বর জেএসএস সন্তু এবং সরকার মধ্যকার ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামক একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। এই চুক্তিতে সন্তু লারমার দাবি অনুযায়ী সরকার পাহাড়ি জাতিস্বত্বার সমস্ত দাবিদাওয়া মেনে হয়। সরকার এই চুক্তির জন্য সন্তু লারমাকে শুধুমাত্র দুইটি শর্ত দেয়। প্রথম শর্তটি হচ্ছে সন্তু লারমার জেএসএস সন্ত্রাসীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে হবে, দ্বিতীয়টি হচ্ছে সন্তু লারমার জেএসএসকে সবধরনের অস্ত্র আত্মসমর্পণ করতে হবে। সন্তু লারমা এই দুটি শর্ত বাস্তবায়ন করতে পারেনি। চাঁদাবাজির লোভে এবং ক্ষমতার লোভে ব্যর্থ হয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা ও মন্ত্রী পদমর্যাদা ভোগ করলেও পুনরায় পূর্বের ন্যায় অবৈধ অস্ত্র নিয়ে চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন-গুম ও রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকাণ্ড করে চুক্তি লঙ্ঘন করে আসছে। এবং চাঁদাবাজির টাকার ভাগাভাগি নিয়ে একাধিক দল-উপদল তৈরি হয়েছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট সাম্প্রতিক সময়ে শান্ত প্রিয় সম্প্রীতির বান্দরবানকে অশান্ত করতে একের পর এক সেনা হত্যায় মেতে উঠেছে। এই কুকি সন্ত্রাসী দলের কাছে যেসকল অবৈধ অস্ত্র রয়েছে তা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কাছেও নেই৷ অভিযোগ পাওয়া গেছে এসকল অবৈধ অস্ত্রের জোগান জেএসএস সন্তু দিচ্ছে এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য রসদ ও সবধরনের সহযোগিতা সন্তু লারমার নির্দেশে জেএসএস দিচ্ছে।
যদিও প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো থেকে ত্রিমুখী সীমান্ত পথে কেএনএফ এর কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী জেএসএস বর্তমানে গোপনে এই সন্ত্রাসীদের অস্ত্র ও রসদ সহযোগিতা দিয়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উস্কে দিয়েছে। এইজন্য সন্তু লারমার মন্ত্রী পদমর্যাদা বাতিল করে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে রাষ্ট্রের জন্য উত্তম পন্থা।
সন্তু লারমা রাষ্ট্রের সাথে চুক্তির মাধ্যমে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। রাষ্ট্র সন্তু লারমার বিশ্বাসঘাতকতার পরেও উদাসীনতা নীতি অনুসরণ করে উপজাতিদের কল্যাণে সব ছাড় দিয়ে যাচ্ছে৷ রাষ্ট্রের এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে সন্তু লারমা প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো থেকেই অবৈধ অস্ত্র ও ভারী অস্ত্র মজুদ করে আসছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির শর্তের কারণে সন্তু লারমা সরাসরি রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সাথে যুদ্ধে জড়াতে ব্যর্থ হয়ে কৌশলের কেএনএফকে ইন্দন দিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর উপর আঘাত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বান্দরবানর জেলার বেশিভাগ উপজেলায় জেএসএস সন্তুর আধিপত্য থাকতে হলেও কৌশলগত কারণে সন্তু লারমা রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি উপজেলার আংশিক এলাকা কেএনএফ কে ছেড়ে দিয়েছে গোপন চুক্তির অংশ হিসেবে। কেএনএফ সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর উপর খবরদারি করার দুঃসাহস দেখানোর প্রশ্নেই আসেনা। বর্তমানে এমন দুঃসাহসের পেছনে সন্তু লারমার জেএসএস এর হাত রয়েছে। সন্তু লারমা সরকারের সঙ্গে চুক্তির সময় বলেছিল সেই ব্যতিত পাহাড়িদের আর কোন নেতা এবং দল নেই৷ তাহলে এখন যারা অধিকারের কথা বলে অস্ত্র হাতে নিয়েছে এসব নেতা ও দল কারা? এই প্রশ্নের জবাব সন্তু লারমা থেকে চাওয়া সময়ের দাবি।