পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র চলমান: রাষ্ট্রের নেই স্থায়ী পার্বত্য নীতিমালা!

0
ছবি: নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য চট্টগ্রাম
ছবি: নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য চট্টগ্রাম

খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান তিন পার্বত্য জেলা তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি প্রাকৃতিক ভূস্বর্গ পর্যটন শিল্পের জন্য এক সম্ভাবনাময় অঞ্চল এবং এক অর্থ সমৃদ্ধ অঞ্চল। এখানে রয়েছে বাঙ্গালী সহ বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী গুলো বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, হিন্দু ও ইসলাম ধর্মে বিভক্ত। ইসলাম ধর্মের মানুষ ধর্মান্তরিত হওয়ার সংখ্যা অন্যান্য ধর্মের চেয়ে কম। তাই খ্রিস্টান মিশনারী বা দাতা সংস্থা গুলো, এনজিওর আডালে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে টার্গেট করেই শিক্ষা, ঋণ ও মানবিক সহায়তার নামে খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত করছে। এনজিও, আইএনজিও পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত ভেদাভেদ, হানাহানি ও সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে। সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য বাঙালি ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রোপাগান্ডা রটিয়ে জনমনে নেতিবাচক সৃষ্টি করে। এ অঞ্চল থেকে বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনী সারাতে নানান ভাবে প্রচেষ্ঠা চালাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মিশনারী, দাতাসংস্থা গুলোর মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামে সৃষ্টি হয়েছে ৫/৬ টি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজির টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে অশান্ত করছে এ অঞ্চল। চাঁদাবাজি করার জন্য সাধারণ মানুষ হত্যা, অপহরণ চলে অবিরত। চাঁদাবাজির এই টাকা দিয়ে ভারী অস্ত্র ক্রয় করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেছে ইতোমধ্যে। ৫/৬ টি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গ্রুপের রয়েছে কয়েক হাজার সশস্ত্র সদস্য। এরা সকলে দল-উপদলে বিভক্ত হলেও জাতির সাথে এক অভিন্ন। এই সন্ত্রাসীদের এই অঞ্চলে প্রধান টার্গেট বাঙ্গালী এবং সেনাবাহিনী। বাঙ্গালী এবং সেনাবাহিনীকে এ অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিতে পারলে পার্বত্য চট্টগ্রাম আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আর বাধা-বিপত্তি থাকবে না। মূলত এজন্যই তারা বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা,বানোয়াট, কুৎসা মূলক প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দিয়ে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে সক্ষম হয়। মোদ্দাকথা এ অঞ্চলকে ঘিরে চলে চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র৷ স্মরণ করিয়ে দিতে চাই পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র সুদূর প্রসারিত। ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পর বাংলার অবিচ্ছেদ্য অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামে শিকড় গেড়ে যান। তারা এ অঞ্চলের অভিবাসী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করা উপজাতীয়দের দাবারগুটি হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তারা চলে যাওয়ার পর সেই উপজাতিরা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে বিচ্ছিন্ন করতে বৃটিশ প্রণীত প্রথাগত আইনের দোহাই দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্ত ভূমির মালিকানার উপর তাদের অধিকার এই দাবি করে এ অঞ্চল থেকে বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনীকে সরাতে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেই।

উপরোক্ত ষড়যন্ত্র এবং বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে সরকারের যুগোপযোগী নীতিমালা নেই। নীতিমালা ছাড়া চলছে পার্বত্য কর্মকাণ্ড। নিজের খামখেয়ালি খুশি মত চলছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। যার কারণে বিচ্ছিন্নতাবাদ দানাবাঁধতে শুরু করেছে। যা দমন রাষ্ট্রের জন্য এই মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ। পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্ধেক জনগোষ্ঠীই বাঙ্গালী। আর এই বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সবার হাতের মোয়া এবং পুতুলের মত ব্যবহারিত হচ্ছে৷ বাঙ্গালীদের না আছে মূল্যায়ন না আছে অধিকারের অস্তিত্ব। সবদিকে অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার বাঙ্গালীরা। বাঙ্গালীদের পক্ষে কেউ কলম ধরলেই তাকে বানানো হয় সাম্প্রদায়িক এবং তাকে ঘায়েল করতে চলে নানান ষড়যন্ত্র। অতিবিলম্বে রাষ্ট্রের স্বপক্ষের শক্তি পার্বত্য বাঙ্গালীদের নিয়ে কানামাছি খেলা বন্ধ করতে হবে আর পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদ দমনে সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে এবং একটি সুস্পষ্ট পার্বত্য নীতিমালা করতে হবে। সুস্পষ্ট পার্বত্য নীতিমালা না থাকায় সন্ত্রাসী দমন করতে গিয়ে আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী হতাহত হতে হয় এবং রাষ্ট্রকে নানান প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। তাই একটি পার্বত্য নীতিই অত্রাঞ্চলের দীর্ঘদিনের চলমান সমস্যা সমাধানে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি।

আগের পোস্টকেএনএফ ও শান্তিবাহিনীর রনকৌশলের তুলনামূলক বিশ্লেষণ-মেজর নাসিম হোসেন (অব:)।
পরের পোস্টকেএনএফ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা জামাতুল আনসারের নেতা শামিন মাহফুজ গ্রেপ্তার।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন