আচালং, গৌরাঙ্গ পাড়া, দেওয়ান বাজার, তবলছড়ি, তাইন্দং, বর্ণাল, রামছিরা, গোমতি গণহত্যা।
১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৮১ সালের দিবাগত রাত আনুমানিক ১০টা থেকে ভোর রাত ৪টা পর্যন্ত ৬ ঘন্টায় ঘুমন্ত বাঙ্গালী কয়েকটি জনপদের উপর গণহত্যা পরিচালনা করে খুনী সন্তু লারমার সন্ত্রাসী হায়নারা।
খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং, আচালং, গৌরাঙ্গ পাড়া, তবলছড়ি, বর্ণালসহ ৫২ টি গ্রামের প্রত্যেকটি বাঙ্গালী গ্রামে অগ্নি সংযোগ সহ লুটতরাজ, সামনে বাঙ্গালী যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। বাঙ্গালী নারীদের গণধর্ষণ, নরকীয়তা সৃষ্টি করেছিলো ৩৮ হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী খুনি সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা সন্ত্রাসী হায়নারা।
৬ ঘন্টা সময়ে ৬৫৮ জনের অধিক নারী, শিশু, আবাল-বৃদ্ধ, বনিতা নিরস্ত্র নিরীহ বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয়েছে। বাঙ্গালী ২৩৪ নারীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। আহত করা হয়েছে ৮৩০ জনের অধিককে। অপহরণ ও গুম করা হয়েছে আরো হাজার হাজার বাঙ্গালীকে। ২৪৬৮টি বাড়ি লুটতরাজ করে সম্পূর্ন ভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়। গৃহহীন হয়েছেন প্রায় পাঁচশতাধীক পরিবার।
তাছাড়াও তানাক্কাপাড়া বিডিআর ক্যাম্প, আচালং বিডিআর ক্যাম্প, তাইন্দং বিডিআর ক্যাম্প, পংপাড়া বিডিআর ক্যাম্প, তবলছড়ি বিডিআর ক্যাম্প, আমতলি বিডিআর ক্যাম্প, বর্ণাল বিডিআর ক্যাম্পে আক্রমন করে অস্ত্র,গোলা-বারুদ লুট করে এবং ১৮ জন বিড়িআর সদসকে হত্যা করা হয়েছে।
HBF সূত্র অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামে গণহত্যাগুলোর মধ্যে এটি তৃতীয় বৃহৎ গণহত্যা। এই গণহত্যায় শান্তিবাহিনীর হায়দারা বাঙ্গালী নারীদের গণধর্ষণ পূর্বক হত্যা করে এবং বাঙ্গালী শিশু, যুবক ও বৃদ্ধদের গুলি করার পাশাপাশি দায়ে কুপিয়ে ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে হত্যা করে। ব্যাপক লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে বাঙ্গালী কয়েকটি ঘুমন্ত জনপদকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। একটি জাতিকে নিধন করার অংশ হিসেবে যে রূপগণহত্যা করা হয় সে একই রূপগণহত্যা বর্ণিত এলাকাগুলোতে উপজাতি সন্ত্রাসীরা পরিচালনা করেছে। এই গণহত্যার ৪২ বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত জড়িত সন্তু লারমা এবং তার বাহিনীর কাউকে বিচারের মুখোমুখি করতে পারেনি রাষ্ট্র। যার কারণে ক্ষোভ ও ঘৃণা বাড়ছে। স্বজনহারা পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালীরা এই গণহত্যা নিয়ে বিচার চেয়েও লাঞ্ছিত হচ্ছে। এখানে বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে।