রাঙ্গামাটিতে ট্যুরিস্ট বোটে আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের আগুন: পর্যাটকদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়!

0

আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও খুন-গুমে পার্বত্য চট্টগ্রামের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বেশ করে পর্যাটকদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। প্রায় চার যুগ ধরে পার্বত্য বাঙ্গালী আর পাহাড়ীরা চাঁদাবাজি ও হামলা, নির্যাতনের শিকার হলেও বিগত কয়েকবছর ধরে পর্যাটকেরাও এর শিকার হচ্ছে। চাঁদাবাজি ও হামলার শিকার হচ্ছে সমতল থেকে পাহাড়ে আগত পর্যটকরা। চাঁদাবাজি ও হামলা বৃদ্ধি পেলেও বরাবরই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে সংশ্লিষ্টরা। ২০১৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একদল ছাত্র-শিক্ষক হানিফ পরিবহন করেই পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রমণে আসেন। পর্যাটক বহনকারী হানিফ গাড়ি খাগড়াছড়ি হইতে রাঙামাটি আসার পথিমধ্যে কুতুকছড়িতে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণের শিকার হয়। সেদিন ড্রাইভারের দক্ষতায় ৪০ জনের মত পর্যাটক প্রাণে বেঁচে যায়। এরপর চট্টগ্রাম রাউজানের পর্যাটক যুগলকে রাঙামাটি ঝুলন্ত সেতুতে নগ্ন করে ছবি তোলে উপজাতি সন্ত্রাসীরা। এসব ঘটনার পর পাহাড়ে পর্যাটকদের আগমণে ভাটা পড়ে। আজকে রাঙামাটিতে পর্যাটক বহনকারী ট্যুরিস্ট বোটে আগুন দেওয়ার ঘটনা নতুন করেই পর্যাটকদের মনে নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

অদ্য শুক্রবার (১০ নভেম্বর) ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ সকাল ১১ ঘটিকায় চাঁদপুরের অঞ্জন কুমার, সুমেন কুণ্ডু, প্রণয় পাল, অনিক মজুমদার, প্রান্ত কর্মকার, হিমু চন্দ্র দাশসহ সুবলং ঝর্ণায় যাওয়ার পথে বসন্ত এলাকায় পৌঁছালে পাঁচ উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসী মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং তাদেরকে ট্যুরিস্ট বোট থেকে নামিয়ে দিয়েই বোটটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়।

এ ঘটনায় ট্যুরিষ্ট বোটটির ৯৫ শতাংশই পুড়ে গেছে। বেলা সাড়ে এগারোটার সময় রাঙামাটির সুবলংয়ের সন্ত্রাসীরা এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।

এই ঘটনায় উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা ছয়জন পর্যটকের কাছ থেকে ৫টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্যটকরা। পর্যটকরা সকলেই চাঁদপুর সদরের পাল পাড়া এলাকার বাসিন্দা বলে জানাগেছে।

বোটটির চালক গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর পর্যটন ঘাট থেকে ৭ জনের একদল পর্যটককে নিয়ে কাপ্তাই হ্রদ দিয়ে সুবলং ঝর্ণায় যাওয়ার সময় স্বর্গছেড়া এলাকায় গেলে একদল উপজাতি সন্ত্রাসী বোটটিকে আটকিয়ে পর্যটকদের নামিয়ে দিয়ে বোট টি নিয়ে একটু দূরে গিয়ে পেট্টোল ঢেলে বোটটি জ্বালিয়ে দেয়। মুহুর্তের মধ্যেই ফাইভার বডির বোটটি প্রায় সম্পূর্ন জ্বলে যায়।

এই ঘটনায় আক্রান্ত ভীতসন্ত্রস্থ পর্যটকরা জানিয়েছেন, তারা মোট ছয়জন চাঁদপুর থেকে সাজেক হয়ে রাঙামাটিতে এসে তবলছড়ির ওমদামিয়া হিলের একটি হোটেলে উঠেছেন। সেখান থেকে শুক্রবার সকালে ১০টার সময় জনৈক গিয়াস উদ্দিনের বোটে করে সুবলং ঝর্ণা দেখতে রওয়ানা হন।

উপার্জনের একমাত্র উৎস এই বোটটি উপজাতি আঞ্চলিক সন্ত্রাসীরা জ্বালিয়ে দেওয়ায় চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন জানিয়েছেন বোট মালিক আলাউদ্দিন টুটুল জানান, বোটটি সম্পূর্ন পুড়ে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তার আর কোনো উপার্জনের উৎস নেই।

বর্হিরবিশ্বে পর্যাটকদের নিরাপত্তার জন্য নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পর্যাটন শিল্প বিকাশ একটি অঞ্চল তথা রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। নেপাল, মালদ্বীপ, সাইবেরিয়া পর্যাটন শিল্প বিকাশের মাধ্যমে তারা তাদের অর্থৈনিতক চাকা সচল করেছে। এদিকে আমাদের দেশে পর্যাটন শিল্প বিকাশে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা যায়না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি পর্যাটকদের নিরাপত্তা দিতেই ব্যর্থ হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্যাটন শিল্প ধ্বংস হবে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পর্যাটকদের নিরাপত্তায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আমরা মনে করি।

আগের পোস্টবান্দরবানে কেএনএফ এর সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত
পরের পোস্টখাগড়াছড়ি থেকে এক বাঙ্গালীকে অপহরণের অভিযোগ।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন