রাঙামাটি প্রতিনিধি:
(৭মে) মঙ্গলবার দুপুরে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বরকল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস প্রতীকের জেলা আওয়ামীলীগ নেতা সন্তোষ চাকমা জনসংহতি সমিতি কর্তৃক অস্ত্রের মহড়া, ভীতি প্রদর্শন ও ভোটারদের প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে প্রেস বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি জানান, ৬ষ্ঠ বরকল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রাক্কালে বরকল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস সন্তু) দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মহড়ার মাধ্যমে তাদের দলীয় প্রার্থী বিধান চাকমার দোয়াত কলম প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে চলেছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় মুরুব্বী, কার্বারী (গ্রাম প্রধান), হেডম্যান (মৌজা প্রধান) ও জনপ্রতিনিধিদের হুমকি দিয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও আওয়ামীলীগের নেতা সন্তোষ কুমার চাকমাকে ভোট দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে ভোটারদের।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা সন্ত্রাসীদের এই ধরণের অপতৎপরতা ও প্রাণনাশের হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
স্থানীয় ভোটার ও কর্মীরা জানিয়েছেন- জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র ক্যাডার জয়ধন চাকমার নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জনের একদল সশস্ত্র গ্রুপ বরকল উপজেলার ২নং বরকল ইউনিয়নের বিলছড়া, বেঘেনাছড়ি, হালাম্বা, কুরকুটিছড়ি, ১নং সুবলং ইউনিয়নের বেতছড়ি, চেগেয়াছড়ি, ও হাজাছড়া এলাকায় অস্ত্রের মহড়ায় দেখিয়ে ভোটারদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে বিধান চাকমাকে ভোট দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। নির্দেশ মানা না হলে কঠোর ব্যবস্থা বা প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
গত ২৯ এপ্রিল তারিখে ১নং সুবলং ইউনিয়নের বরুনাছড়ি মৌজার শিলছড়ি, হাজাছড়া, তন্যাছড়ি, বটতলী, উকছড়ি, রূপবান, দীঘলছড়ি, পেত্যাছড়ি, ও ধামাইছড়া মৌজার শুকরছড়ি, পানছড়ি, হাজাছড়া এলাকার মুরুব্বীদের ডেকে নিয়ে বিধান চাকমাকে ভোট দেয়ার জন্য বলে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। বিধান চাকমার প্রতিদ্বন্দী সন্তোষ কুমার চাকমাকে ভোট দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে বরকল উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা কুকিছড়া, শ্রীনগর, ডেবাছড়ি, নোয়াপাড়া, ডুলুছড়ি, ঠেগা, খুব্বাং, কালাপুনাছড়া, করল্যাছড়ি, ধনুবাগ, আন্দারমানিক, আইমাছড়া, সাইচাল, বগাছড়ি, অজ্যাংছড়ি নিজেদের নিয়ন্ত্রিত সবকটি এলাকায় জনসহতি সমিতির সশ্রস্ত্র সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মহড়া দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলেছে। আমার কর্মী সমর্থক ও ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা প্রদান করছে।
বেশকিছু এলাকায় ইতোমধ্যে ভোটারদের জিম্মি করা হয়েছে।
বর্তমানে ওই এলাকার ভোটার, মুরুব্বী, জনপ্রতিনিধিরা অনেক ভয়, ভীতি, উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন। তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না বলে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে জনসংহতি সমিতির প্রার্থী বিধান চাকমা ইতোমধ্যে সন্ত্রাসী তৎপরতার পাশাপাশি নানা কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ২৪ এপ্রিল ২০২৪ রাঙামাটি শহরের একটি রেস্তোরায় নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্বাচনী কাজে নিয়োগপ্রাপ্ত ১৮জন শিক্ষককে ডেকে নিয়ে বিধান চাকমাসহ তাদের দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ভোট আদায়ের নির্দেশনা দেন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রাথী) সুচরিতা চাকমা ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জ্ঞান জ্যোতি চাকমা। এ বিষয়ে আমাদের নির্বাচনী এজেন্ট জনাব আবুল কালাম রাঙামাটির সিনিয়র নির্বাচন অফিসার মহোদয়ের বরাবরে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লংঘনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে নির্বাচন কমিশন উক্ত শিক্ষকদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিলেও অভিযুক্ত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আচরণ বিধি লংঘনের পরেও বিধান চাকমাসহ জনসংহতি সমিতির মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এমতাবস্থায় আমাদের কর্মী সমর্থক ও ভোটাররা বেশ ভয়-ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
জেএসএস সন্তুর সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র মহড়া, প্রাণনাশের হুমকিসহ নানা অপতৎপরতার মধ্যেও আমার ভোটাররা ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে ৮ মে নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে এসে আনারস প্রতীকে তাদের মুল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবেন এটাই আমার দৃঢ় বিশ্বাস
অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পাদনের লক্ষে এ বিষয়টি গণমাধ্যমে তুলে ধরার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।