অনন্ত অসীম, বান্দরবান থেকে ফিরে এসে।
বম জনগোষ্ঠীর লোকজনের কাছ থেকে সহায়তা ও অনেক কিছু নিয়েছে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। বুঝে বা না বুঝে রাষ্ট্র বিরোধী গোষ্ঠীকে এই সহায়তা করার জন্য একসময় অবশ্যই তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। কেএনএফ এর উদ্দেশ্য ছিলো- বম লোকজনকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সহানুভূতি আদায় করার মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হাসিল করা। এই ইস্যুতে তারা নিরাপরাধ মানুষদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত করেছে ধোকাবাজির মাধ্যমে।
কেএনএফ খুন-গুম, ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটপাটের যে কর্মকাণ্ড করেছে তা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব বিরুদ্ধে কার্যক্রম। তারা এই কর্মকাণ্ডটা করার সময় এতদিন তাদের সাথে যারা স্বজাতি লোকজন ছিল, তারা তাদের আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী বা পরিচিত হিসেবে সহানুভূতি দিয়েছে। এরা পরবর্তীতে এটা বুঝার পরে সবাই কেএনএফ থেকে সরে গেছে। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। কেননা সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী ও অন্যান্য সংস্থা এখন বিষয়টি নিয়ে অনেক সচেতন। এটা তো চোর পুলিশ খেলা না তারা একটা কিছু করেই জঙ্গলে চলে গেলো আর সবাই তাদের পেছনে পেছনেই দৌড়াবে! এমনটা ভাববার অবকাশ নেই। পদ্ধতিগতভাবে যা করার প্রয়োজন তা করা হবে।
তথ্য সূত্র অনুযায়ী কয়েকশো কেএনএফ সদস্য আছে৷ ইতোমধ্যে আপনারা হয়তো সংবাদমাধ্যমে জেনেছেন প্রায় ৮০ জনের মত জড়িত অপরাধী গ্রেফতার হয়েছে। প্রায় ১৫ হাজারের কাছাকাছি বম জনগোষ্ঠী আছে। নিরাপত্তা বাহিনী তো আর এই ইস্যুতে হাজার হাজার বমকে ধরছে না কিংবা দমনপীড়ন করছে না৷ প্রসিকিউর অনুযায়ী আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী লুটপাট করা জিনিসপত্র বের করে নিয়ে আসতে এগুচ্ছে। কেএনএফ এর কারণেই এখন নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে যারা জবাবদিহির আওতায় সে লোকগুলোকে তারা ছেড়ে চলে গেছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে তাদের ভিড়িয়েছিল। এখন আবার তারা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাদেরকে ঢাল হিসেবে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে৷ তাদের উদ্ধৃতি ভুলভাবে তুলে ধরে সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে৷ যদিও তাদের এসব এখন কাজে আসছে না কারণ সাধারণ বম জনগোষ্ঠী এখন এই ব্যাপারে সরব।
বম জনগোষ্ঠী থেকে সুবিধা নেওয়া কেএনএফ একটা সময় তাদের অগোচরে অপকর্ম করে ‘গা ঢাকা দিয়েছে।’ মূলত তারা এই নিরীহ লোকগুলোকে ব্যবহার করেছে। কিন্তু অপরাধ তো অপরাধ সেটা বুঝে হোক কিংবা না বুঝেই হোক। দেশের প্রচলিত আইনের বাহিরে যাওয়ার তো নিরাপত্তা বাহিনীর সুযোগ নেই। এই আইনী প্রয়োগকে এখন কেএনএফ তাদের উদ্দেশ্যেমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করার চেষ্টা করতেছে। জেনে বুঝেই নিরপরাধ লোকজনকে ফাঁসিয়েছে। এখন আবার তাদেরকে মানবঢাল হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য৷ বিষয়টি বাকী বম জনগোষ্ঠীর অনুধাবন করতে হবে৷ সেসাথে কেএনএফ থেকে দূরে থাকতে হবে, সবচেয়ে ভালো পথ হচ্ছে তাদেরকে ছাড় না দিয়েই বরং তাদের ব্যাপারে তথ্য নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রদান করে শান্তি-সম্প্রীতি গড়ে তোলা।