কেএনএফের সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে স্বজাতি বম সম্প্রদায়।

0

নিজেস্ব প্রতিনিধি, বান্দরবান- সম্প্রীতির বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)- এর অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন-গুম ও সন্ত্রাসী তৎপরতা এবং ব্যাংক ডাকাতি ও সরকারি অস্ত্র লুটপাটের ঘটনায় বেজায় চটেছেন স্বজাতি বম সম্প্রদায়। তারা কেএনএফ এর সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

অদ্য রবিবার (১৯ মে) বিকেল ৪ টায় বান্দরবান জেলার উজানী পাড়া ইভেনজেলিক্যাল খ্রিস্টান চার্চ প্রাঙ্গণে ‘সাধারণ বম জনগোষ্ঠী’ ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এসময় কেএনএফ এর বিরুদ্ধে তারা হাতে বিভিন্ন প্লেকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন, এবং কিছু দাবিদাওয়া করেন। কেএনএফ এর সন্ত্রাসী তৎপরতার প্রতিবাদে বম সম্প্রদায়ের কয়েক শতাধিক নারী পুরুষ ও ছাত্র-ছাত্রীরা এই প্রতিবাদ সমাবেশের মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

কেএনএফ এতদিন ধরে বলে আসছিল, তারা ৬টি কুকিভুক্ত জনগোষ্ঠী এবং স্বজাতি বম সম্প্রদায়ের অধিকার বিষয়ে স্বায়ত্তশাসন দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। কেএনএফ এর এই দাবি ভুল প্রমাণ করে স্বজাতি বম সম্প্রদায় সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। বম সম্প্রদায় নিজেদের পরিষ্কার অবস্থান তুলে ধরে কেএনএফ কে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আহ্বান জানান।

মানববন্ধনে কেএনএফ কে নিয়ে বম সম্প্রদায়ের নেতৃত্বশ্রেণী কঠোর সমালোচনা করেন। তারা বলেন, “অস্ত্র নয় কলমই আমাদের শক্তির উৎস, ছাত্র সমাজ তোমাদের অলীক স্বপ্নে বিশ্বাস নই, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও বিসিএস ক্যাডার হয়ে জাতি ও দেশকে সর্বোচ্চ সেবা করাই আমাদের স্বপ্ন, শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার সে অধিকার থেকে আমাদের বঞ্চিত করার কেএনএফ তোমাদের অধিকার নাই।”

বক্তৃতারা কিছু দাবিদাওয়া সরকারের কাছে তুলে ধরে বলেন, বম সমাজ দেশের একটা অংশ, স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার অধিকার তাদেরও আছে। কেএনএফ মানে বম নয়, বম মানেই কেএনএফ নয়। কেএনএফ’র কর্মকাণ্ডে সকল বম নাগরিক সম্পৃক্ত নয়। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হোক। বর্তমানে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের কারণে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি নিরাপত্তা কড়াকড়ির পাশাপাশি নিত্যপণ্য ক্রয়ে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বম সম্প্রদায়কে। এর কারণ কেএনএফ সন্ত্রাসীরা সরকারি বাহিনীর অভিযান থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সাধারণ বম সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিশে গেছে। সন্ত্রাসীদের রসদ বন্ধ করতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে যৌথবাহিনী। তার কারণে বম সম্প্রদায়ের পাড়া গুলোতে খাদ্য সংকট ও অর্থ সংকট চলছে। অনেক বম পাড়া মানুষ শূন্য হয়ে পড়ছে। সেটির বিষয়ে লাল পেক থার বম বলেন, সকল বম সম্প্রদায়ের উপর নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং অনতিবিলম্বে ক্রয়ের সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।

উল্লেখ্য যে, এর আগে ১০ মে কেএনএফের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, বম সোস্যাল কাউন্সিলের নেতারা। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে কেএনএফ একটি জনবিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। কেএনএফ জাতি বা জনগণের জন্য অধিকারের দোহাই দিলেও প্রকৃত পক্ষে তারা এর অন্তরালে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কর্মকাণ্ড করছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ বম সম্প্রদায় ইতোমধ্যে তাদেরকে বর্জন করতে শুরু করেছে।

আগের পোস্টবান্দরবানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে তিন কেএনএফ সদস্য নিহত।
পরের পোস্টরাঙামাটিতে চলছে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের ডাকে গবিরোধী ধ্বংসাত্বক কর্মসূচি।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন