বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে তিন কেএনএফ সদস্য নিহত।

0

নিজেস্ব প্রতিনিধি, বান্দরবান:

অশান্ত বান্দরবানে জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং শান্তি স্থাপনে অবৈধ অস্ত্রধারী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর বিরুদ্ধে চলছে অভিযান। তারই ধারাবাহিকতায় সেনাবাহিনী সফল অভিযান পরিচালনা করে।

পার্বত্য বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার ডেবাছড়া এলাকায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত হয়েছে। রবিবার (১৯ মে) সকালে ওই এলাকার গভীর জঙ্গলে একটি আস্তানায় অভিযান চালানোর সময় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর লাশ উদ্ধারে সেখানে গেছে রোয়াংছড়ি থানা পুলিশ।

সূত্রের তথ্য মতে জানা যায়, ডেবা ছড়ার গভীর অরণ্যে কেএনএফ আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের অধীনস্থ বান্দরবান ৬৯ পদাতিক বিগ্রেডের আওতাধীন রুমা জোনের সেনাবাহিনীর সদস্যরা। একটি বিশেষ টহলদল ঘটনারস্থলে গেলে সেনাদের উপস্থিতির টের পেয়ে কেএনএফ অতর্কিতভাবে গুলিবর্ষণ শুরু করে। তাৎক্ষণিক সেনারা পাল্টাগুলি ছুঁড়লে উভয়পক্ষের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী গুলি বিনিময়ের পর সেখান থেকে কেএনএফের দু’জন সদস্যের লাশ ও একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে গুলিবিদ্ধ কেএনএফ সদস্যও মারা যায়। নিহতদের এখনো কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে টিকতে না পেরে পিছুহটে কেএনএফ। এসময় ঘটনারস্থলে তল্লাশি পরিচালনা করে সেনাবাহিনী কেএনএফ এর অস্ত্র, বেতার যন্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করে।

এদিকে, ঘটনার পর আশেপাশের পাড়াগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় সেনাবাহিনী তল্লাশি চালাচ্ছে। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

গত ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় একটি জঙ্গি গোষ্ঠীকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর একই বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে কেএনএফ এর বিরুদ্ধে অভিযানে নামে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জানা যায় তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের ৯টি উপজেলা নিয়ে পৃথক স্বায়ত্তশাসন দাবির অংশ হিসেবে সশস্ত্র গেরিলা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। তাদের দাবিদাওয়া বিষয়ে সরকারের সঙ্গে স্বশরীরে বৈঠকে আলোচনা চললেও চলতি বছরে তারা তা প্রত্যাখ্যান গত এপ্রিলের ২ ও ৩ তারিখ জেলার রুমা ও থানচি উপজেলা সোনালী ও কৃষি ব্যাংক ডাকাতি করে। ব্যাংকে হামলা ও অর্থ লুটপাটের পাশাপাশি পুলিশ ও আনসার সদস্যের ১৪টি অস্ত্র কেড়ে নেয় কেএনএফ৷ চলমান শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে এই হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

এরপর থেকে কেএনএফ একের পর এক হামলা, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও খুন-গুমে জড়িয়ে জনসাধারণের ক্ষতিসাধনসহ সম্প্রীতির বান্দরবান অশান্ত করে আসছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কেএনএফ বিরুদ্ধে যৌথবাহিনী অভিযানে নামে৷ তারই ধারাবাহিকতায় অত্র অঞ্চলের জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং শান্তিস্থাপনে সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়েছে আসছে।

অদ্যকার সেনাবাহিনী অভিযানে তিন সশস্ত্র কেএনএফ সশস্ত্র নিহত হওয়ার খবরে স্থানীয় জনসাধারণ স্বস্তি ও আনন্দ প্রকাশ করেছে। এজন্য তারা সেনাবাহিনীকে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছে এবং অত্রাঞ্চলে শান্তি স্থাপনে নিয়মিত সেনা অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More