রফিকুল ইসলাম, রাঙামাটি:
রাঙামাটি শহরের নিকটস্থ সাপছড়ি মহাসড়কে দেখা যায় মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী দয়াসোনা চাকমা পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে অবরোধ পালন করছেন এবং ভিডিও ধারণ করছেন। সে রাষ্ট্র, বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ও জনমনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এই ধরনের স্লোগান দিচ্ছে। সেনা সেটেলার নিপাত যাক এমন স্লোগানে তাকে সবর দেখা গেছে৷ অবরোধের নামে সড়কে বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও জনসাধারণে চলাচলে প্রতিবান্ধকতায় নেতৃত্বের মূলে ছিলেন দয়াসোনা চাকমা। পুলিশের সামনে একজন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী জ্বালাও পোড়াও করাসহ সড়কে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জনসাধারণের ভোগান্তি সৃষ্টি করছে তারপরও পুলিশ দেশদ্রোহী সন্ত্রাসী দয়াসোনা চাকমাকে গ্রেফতার করেনি! বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহল ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে পুলিশের উদাসীন নীতি পার্বত্য বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। যা রাষ্ট্র, প্রশাসন ও বাঙ্গালী জনগণের জন্য ক্ষতিকর।
এর আগে দয়াসোনা রাষ্ট্র বিরোধী তৎপরতা পরিচালনা করেন কুতুকছড়ি একটি বাড়িতে। সেনাবাহিনী তাকে আটক করতে অভিযান চালালে সে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে তার ফেসবুক আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে সন্ত্রাসী উল্লেখ করে পোস্ট করেন। যা সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।
এমন একজন দেশদ্রোহী সন্ত্রাসী মেয়ে প্রশাসন ও আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাগালে অবরোধ পালন করে চট্টগ্রাম রাঙামাটি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। দয়া সোনা চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য এবং রাঙামাটি জেলার সাবেক সম্পাদিকা বলে নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র। তীব্র সেনা বিরোধী এই ইউপিডিএফ নারী প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।
স্থানীয়রা বলেন, যদি কোন বাঙ্গালী মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী সড়কে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতেন তাহলে তাকে আটক করে আরো কয়েকটি মামলা দিয়ে হয়রানি করা হত পুলিশের পক্ষ থেকে। কিন্তু দুঃখজনক নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী মামলার আসামী একজন উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনের নারী, তারজন্য তাকে কিছু করা হয়নি!
এদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদী রাষ্ট্র বিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফের ডাকা অর্ধদিবস অবরোধের সমর্থনে রাঙামাটি -খাগড়াছড়ি সড়কের বেতছড়ি সোনারাম কার্বারি পাড়া (১৮ মাইল) এলাকায় রাস্তায় নামেন এলাকার উগ্র নারীরা। পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে লাঠি ও ধারালো ছুরি ও রামদা নিয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন তারা।
এসব ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্বলতা ও চরম ব্যর্থতা এবং উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন সকলেই। রাঙামাটি জেলায় দায়িত্বে তিন হাজারের বেশি পুলিশ। অবরোধকারী মাত্র ১০/১৫ জন নারীর সঙ্গে পুলিশ পেরে ওঠেনি! এটা সত্যি দুঃখজনক। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ১০/১৫ জন ইউপিডিএফ নারী সড়ক থেকে ঠেকাতে কী নারী পুলিশ ছিল না? এত সংস্থা ও বাহিনী থাকতে রাঙামাটির নিরাপত্তা এতটা সংকটে তা ভাবতে অবাক লাগে৷ পূর্বে রাঙামাটির আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতটাই নাজুক ছিল না। রাঙামাটির নিরাপত্তা ঢেলে সাজানোর সময় এসেছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যথাযথ দ্বায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। এতটা ঢিলেঢালা দ্বায়িত্ব পালনের ফলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো শক্তি ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সুযোগ পাচ্ছে। একসময় ইউপিডিএফ সহ অন্যান্য সংগঠনগুলো কেএনএফ এর মত মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠবে।
জানা যায়, গত ১৮ মে সকালে লংগদুতে ইউপিডিএফ প্রসিত মূলদলের দুই সদস্যকে প্রতিপক্ষ জেএসএস সন্তু গ্রুপ কর্তৃক হত্যা করার অভিযোগ গত ১৯ মে রাঙামাটি জেলায় সড়কপথ ও নৌপথ অবরোধের ডাক দেয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউপিডিএফ।
সকাল ভোর থেকে রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি, কাউখালীসহ বিভিন্নস্থানে এবং জেলা সদরের সাপছড়ি যৌথখামার কঠোর অবরোধ পালন শুরু করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। অবরোধে সড়কে সম্পূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়৷ এভাবে একটি জেলার মহাসড়ক অবরোধের নামে বন্ধ করে দেওয়া প্রশাসনের ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে। কয়েক শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা জামাল হোসেন ও প্রতিম সাহা বলেন, ইউপিডিএফ সহযোগী অঙ্গসংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন সড়কে প্রতিবান্ধকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। তারা সড়কে গাছের গুটি ফেলে আগুন জ্বালিয়ে সড়কটি বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে বিপুল পরিমাণ আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতির মধ্যে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের উগ্রবাদী পিসিপি ও নারী সংগঠন। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষদের।