পাবর্ত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের উপমন্ত্রীর পদমর্যাদা দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি!

0

এক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষের পরিবর্তে পদটিকে উপমন্ত্রীর মর্যাদা দিতে বলা হয়েছে।

গতকাল রোববার (২৬ মে) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের পার্বত্য চট্টগ্রাম-বিষয়ক সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য তিন জেলার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের সুনির্দিষ্ট কোনো পদমর্যাদা নেই। সরকার ইচ্ছাধীনভাবে পরিষদের চেয়ারম্যানদের ব্যক্তি বিশেষকে উপমন্ত্রীর পদমর্যাদা দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে কমিটি ব্যক্তি বিশেষকে না দিয়ে পদটিকে উপমন্ত্রীর পদ মর্যাদা দিতে বলেছে।

সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে পার্বত্য খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি এবং বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের পদবি উপমন্ত্রী পদমর্যাদা করার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে।

বৈঠকে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসি) মাধ্যমে যোগ্যতা শিথিল করে তিন পার্বত্য জেলার স্থায়ী নাগরিকদের মধ্য থেকে নিয়োগ দান এবং স্কুল, কলেজ নির্মাণের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হলের ব্যবস্থা রাখার জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে তিন পার্বত্য জেলায় মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান নিয়োগ, রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজকে ব্যবহার উপযোগী এবং ৩৪১টি কমিউনিটি ক্লিনিক সংস্কার, প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ ও সেবার মান বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, দীপংকর তালুকদার, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, পংকজ নাথ, আব্দুল মোতালেব, মো. মঈন উদ্দিন এবং জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যাঁ অংশগ্রহণ করেন।

পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো ইতোমধ্যে বাঙ্গালীর সঙ্গে বৈষম্য ও অনিয়ম এবং সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টির জন্য বরাবরই সমালোচিত। তাছাড়া পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়োগ দুর্নীতিসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙ্গালী অতিষ্ঠ। এই জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত। সেসাথে উপজাতীয়দের জন্য সংরক্ষিত চেয়ারম্যান পদটি৷ বাঙ্গালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার কোনপ্রকার সুযোগ নেই ১৯৯৭ সনের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির শর্ত অনুযায়ী৷ বর্তমানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজাতি হওয়ার কারণে বাঙ্গালীরা অনেকদিকে বৈষম্য ও অন্যায়ের শিকার হয়ে আসছে। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডিসি, এসপি এবং বিভিন্ন বাহিনীর কার্যক্রমসহ অনেক প্রশাসনিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। এই মূহুর্তে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের উপজাতি চেয়ারম্যানদের উপমন্ত্রী পদমর্যাদা দিলে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থার মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টিসহ দায়িত্ব পালনে প্রতিবান্ধকতা তৈরি হতে পারে। এমনকি স্থানীয় বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হতে পারে। তাই উপমন্ত্রী পদমর্যাদার সুপারিশ বাতিল করা প্রয়োজন।

উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনীকে বিতাড়িত করে এ অঞ্চলে রাষ্ট্রীয় শক্তি দুর্বল করার জন্য উপজাতীয় নেতৃত্বশ্রেণী বিভিন্ন গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত৷ তিন পার্বত্য জেলার তিন জন এমপি এবং সংরক্ষিত নারী এমপিসহ চারজন এমপি উপজাতি। স্থানীয় প্রশাসন ও সবকিছু উপজাতি রাজনৈতিক নেতা তথা উপজাতীয় সংগঠনগুলোর হাতে জিম্মি। পার্বত্য চুক্তিতে কোথাও বলা নেই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপমন্ত্রী পদমর্যাদা ভোগ করবে। এমতাবস্থায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে উপমন্ত্রী পদমর্যাদা দেওয়ার সুপারিশ নিঃসন্দেহে বড় ষড়যন্ত্র বলে প্রতিয়মান।

আগের পোস্টপাহাড়ে জনগণের পাশে নেই জেএসএস সন্তু।
পরের পোস্টরোয়াংছড়িতে সন্দেহভাজন তিন কেএনএফ সদস্য গ্রেফতার।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন