এক অখ্যাত কল্পনা চাকমা নিয়ে ইউপিডিএফ দুই যুগের বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক ফায়দা লুটে নিতে সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রের বিরূদ্ধে মিথ্যা তথ্য রটিয়ে আসছে।
জানা যায়, ১৯৯৬ সনের ১১ জনু রাত্রে কল্পনা চাকমা নিখোঁজ হয়। এরপর থেকে পাহাড়ের সন্ত্রাসবাদী আঞ্চলিকদল ইউপিডিএফ কল্পনা চাকমা নিখোঁজ ঘটনা নিয়ে সেনাবাহিনীর লে. ফেরদৌস ও ভিডিপি’র প্লাটুন কমাণ্ডার সালেহ আহমেদ ও নুরুল হককে দায়ী করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য শুক্রবার ৭ জুন, খাগড়াছড়ি চেঙ্গী স্কোয়ার, স্বনির্ভর ও রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) কল্পনা চাকমার কথিত অপহরণ নিয়ে নিম্ন স্লোগানে কর্মসূচী পালন করে।
ইউপিডিএফ সংগঠনগুলো বলেন, “জনতার আদালতের রায়ে পাহাড়ের নারী নেত্রী কল্পনা চাকমা’র চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস, ভিডিপি’র প্লাটুন কমাণ্ডার সালেহ আহমেদ ও নুরুল হককে প্রতীকী ফাঁসি দিয়েছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ। কল্পনা চাকমা’র অপহরণের ২৮ বছর উপলক্ষে আদালত কর্তৃক চিহ্নিত অহরণকারীদের দায়মুক্তির প্রতিবাদে ও অপহরণে জড়িত অপরাধীদের সাজা দেয়ার দাবিতে অপহরণকারীদের প্রতীকী ফাঁসি প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত জনতা কল্পনা অপহরণকারীদের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই শ্লোগান দেন।”
জানা যায়, ১৯৯৬ সালের ১১ জুন, গভীর রাতে অতি সঙ্গোপনে জেএসএসের একাংশ ও পিসিপি’র কতিপয় সন্ত্রাসীরা রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার নিউ লাল্যাঘোনা এলাকা থেকে কল্পনা চাকমাকে অপহরণ করে স্বজাতির প্রেমিক অরুণ বিকাশ চাকমার কাছে ভারতের অরুণাচলে পাঠিয়ে দেয়।
কল্পনা চাকমার মায়ের বর্ণনা ও তৎকালীন সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী কল্পনা চাকমা ভারতের অরুণাচল আছেন তার প্রেমিক অরুণ বিকাশ চাকমার সঙ্গে। এমনকি সেখানে প্রেমিককে বিবাহ করে ছেলেসন্তান জন্ম দিয়ে ঘর সংসার করছেন।
নিখোঁজ কল্পনা চাকমা কে নিয়ে অপহরণ নাটক সাজিয়ে ২৮ বছর পরও ইউপিডিএফ’র এই স্লোগান দাবিদাওয়া নির্ভর কর্মসূচী হাস্যকর এবং সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রের বিরূদ্ধে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যটি স্পষ্ট। তাই জনগণ মনে করে ইউপিডিএফ’র প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচী ভাঁওতাবাজি। নির্দোষ ব্যক্তিদের প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচী নিঃসন্দেহে ভাঁওতাবাজি। এটি একটি রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্য।
কল্পনা চাকমা ছিলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার লাল্যাঘোনা এলাকায় বাসিন্দা। আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদী একটি সংগঠনের নারী নেত্রী হিসেবে যুক্ত ছিলেন। তার এত যশ-খ্যাতি ছিল না। অখ্যাত একজন নারীকে নিয়ে এত মাতামাতি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেছে। তার নিখোঁজ ঘটনাকে অপহরণ ঘটনা সাজিয়ে ১৯৯৬ সালে রাঙামাটি আদালতে কল্পনা চাকমার ভাই কালিন্দী চাকমা মামলা দায়ের করেন। বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত শেষে মামলার চার্জসিট আদালতে জমা দিলে একাধিকবার কালিন্দী চাকমা নারাজি দেন। এই নিয়ে ২৮টি বছর অতিবাহিত হয়। সর্বশেষ চুড়ান্ত প্রতিবেদনের পর গত ২৩ এপ্রিল কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলাটি রাঙামাটির আদালতে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এ আদেশ প্রদানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে চলা মামলাটি শেষ হয়েছে। এর প্রতিবাদে ইউপিডিএফ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছে।
@highlight