পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন তথা প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ ফের পাহাড়ে সক্রিয় হয়ে উঠছে। ১৯৯৮ সালের ২৬- ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠার পর থেকে পাহাড়ে অশান্তির বীজবপন করে আসছিল। একাধিক সূত্রের তথ্য মতে বিগত ৪/৫ বছর ধরে ইউপিডিএফ সাংগঠনিক কার্যক্রম সীমিত করেছিল। ধারণা করা হয়েছিল আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত অভিযানে কোনঠাসা হয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম সীমিত করে। এবং জেলা ও উপজেলা সদরে টিকতে না পেরে পাহাড়ের গহীনে অবস্থান নেয়। যার ফলে জনমতে শান্তি ফিরে আসে। সাম্প্রতিক সময়ে ইউপিডিএফ এর বিভিন্ন কার্যক্রম থেকে লক্ষ্য করা গেছে, তাদের সক্রিয় হয়ে ওঠার বিষয়টি। গণবিরোধী একের পর এক কর্মকাণ্ড থেকে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে উঠে। এই থেকে অনুমেয় পাহাড়ে শান্তি বিনষ্ট করতে মরিয়া হয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে ইউপিডিএফ।
রাঙামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউপিডিএফ মদদপুষ্ট মাজলং নির্বাচন পরিচালনা কমিটি অবরোধের ডাক দেয়। জানা যায়, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবিতে মাজলং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ডাকে আজ শনিবার (৮ জুন ২০২৪) সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাটে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ পালিত হয়েছে। ইউপিডিএফের বাঘাইহাট ইউনিট এ অবরোধের পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে মাঠে নামান সহযোগী অঙ্গসংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন। সড়কে নাশকতা করতে মাঠে নামান হয়। বাঘাইহাট বাজার ও এর সংযোগ সড়কগুলোতে এবং বাঘাইহাট – রুইলুই পর্যটন সড়কে এ অবরোধ পালনের নামে সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন সন্ত্রাসী সংগঠনটি। পর্যটকবাহী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়াতে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে পর্যটকসহ স্থানীয়রা। ইউপিডিএফ অবরোধ চলাকালে বাঘাইছড়ির ৭ কিলোমিটার এলাকায় মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে। বেশ কয়েকটি যানবাহনে ভাংচুর চালিয়ে জনসাধারণের ক্ষতিসাধন করেছে। ইউপিডিএফ এর ব্যাপক নাশকতার চেষ্টা নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়মিত টহল নস্যাৎ করে দেয়। বর্তমানে ওই এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে নিরাপত্তা বাহিনী এমনই জানা গেছে।
এর আগে ২০১৯ সালের (১৮ মার্চ) সন্ধ্যায় রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার কংলাক মাচালং ও বাঘাইহাট ভোট কেন্দ্র থেকে উপজেলায় ফেরার সময় ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের ব্রাশ ফায়ারে প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারসহ ভোটের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওপর ব্রাশ ফায়ারে ৭ জন নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়। এছাড়াও নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমানসহ ৬ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়ে তৎকালীন ইউপিডিএফ পাহাড়ে শান্তি বিনষ্ট চেষ্টা করে। তৎকালীন সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তারা বেশিদূর এগুতে পারেনি।
সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা গেছে, বিভিন্ন ইস্যু সৃষ্টি করে ইউপিডিএফ পাহাড়ে ফের শান্তি বিনষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিপ্রিয় মানুষদের জীবনমানের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি করতে ইউপিডিএফ গণবিরোধী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড এবং হত্যা, চাঁদাবাজি ও অস্ত্রবাজি করে আসছে। তাদের এহেন কর্মকাণ্ড পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি-সম্প্রীতি বিনষ্ট হচ্ছে। বর্তমান চলমান ঘটনাগুলোর ফলে ইউপিডিএফ এর ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পার্বত্যবাসী।