একটি স্কিনশর্টের ছবি নিউজে যুক্ত করা হয়েছে, প্রশ্ন হলো অস্ত্রের চালানটি আনতে সাম্প্রতিক সময়ে বাঘাইহাটের ঘটনায় নানা ধরণের নাটক মঞ্চস্থ করছে নাকি ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ??
পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইহাট বাজার। মূলত তিন পার্বত্য জেলায় ইউপিডিএফ তাদের সশস্ত্র ক্যাডারদের জন্য অস্ত্র আনে এই বাঘাইহাট এলাকাটি দিয়েই। বাঘাইহাট এলাকাটি ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের রসদ সরবরাহের প্রধান রুট। তাই ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ এই বাঘাইহাট এলাকাটি সব সময় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়।
বিপত্তি বাঁধে প্রতিপক্ষ এর একটি ছোট দল আসলে বাঘাইহাট বাজারে। তারা আসে মূলত বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিতে, তারা স্থানীয় ভোটার। চাকরি ও ব্যবসার সুবাধে তারা এলাকার বাহিরে থাকলেও তারা আসে নির্বাচনে ভোট দিতে।
প্রতিপক্ষ অন্য দল বাঘাইহাট বাজারে আসলে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের সমস্যা কোথায়??
সমস্যা হলো ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের বড় একটি অস্ত্রের চালান আসার কথা বর্ডার ক্রস করে বাঘাইহাট হয়ে প্রসীত গ্রুপের হাইকমান্ডের কাছে। কিন্তু বাঘাইহাট বাজারে অন্যদল অবস্থান করায় ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের এই গোপন অস্ত্রের চালান আসার কথা ফাঁস হয়ে যেতে পারে এমন আংশকা করছে তারা। এবং অস্ত্রের চালানটি আনতে বেগ পাচ্ছিলো, কারণ অন্যদল এর মাধ্যমে যদি প্রসীতের এই অপকর্মের কথা ফাঁস হয়ে যায় ও ধরা পরে যায় তাই তারা নানা রকম কৌশল এর ছক আকঁতে থাকে।
এজন্য ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ বাঘাইহাট বাজারে অন্যদল এর অবস্থান এর চারদিকে ৭০/৮০ জনের সশস্ত্র গ্রুপ দিয়ে ঘেরাও করে রাখে। কিন্তু কোনভাবেই অন্যদলটি কে ঘায়েল করতে না পেরে ১৮ জুন মঙ্গলবার বাঘাইহাট বাজারে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের অঙ্গ সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও বৃহত্তর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীদের একই সাইজের লাঠিসোঁটা দিয়ে বিক্ষোভ করিয়ে সংঘর্ষ বাঁধায়। মূলত বিক্ষোভ থেকেই ফাঁকা গুলি ছোড়ার ফলে পরিবহণ শ্রমিক মোঃ নাঈম নিহত হয়।
প্রশ্ন হলো ইউপিডিএফ প্রসীত যেমন একটি দল তেমনি প্রতিপক্ষ অন্য দলটিও একটি দল, তাহলে অন্যদল এর উপস্থিতি কেন সহ্য করতে পারছেনা প্রসীত গ্রুপ??
উত্তর হলো ইউপিডিএফ প্রসীত এর অস্ত্রের চালান নিরাপদে আনা ও তাদের রসদ সরবরাহের একমাত্র প্রধান রুটটি তাদের আয়ত্বে রাখা। এখন উক্ত এলাকায় অন্য দলের উপস্থিতি থাকলে প্রসীত গ্রুপের সব সময় অস্ত্র সহ তাদের রসদ সরবারহের এই রুটটি দিয়ে যত অপকর্ম হবে সকল তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে এই আশংকায় অন্যদলের উপস্থিতি কোন ক্রমেই সহ্য করতে পারছে না ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ। এছাড়াও দীর্ঘ অনেক বছর ধরে এই রুটটি তারা নিয়ন্ত্রণ করছে অপকর্মের অংশ হিসেবে, কিন্তু অন্যদলের উপস্থিতিকে তারা এখন থ্রেট মনে করছে, তাদের বছরের পর বছর ধরে সাজানো অপকর্মের ঘর এখন ধংস্ব হয়ে হয়ে যাবে এমন আশংকা করছে তারা। মূলত এসব আংশকা থেকেই অন্যদলটিকে এলাকা থেকে সরাতে নানা রকমের অপকৌশল এর আশ্রয় নিয়ে নাটক সাজাচ্ছে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ।
অতএব, ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ নানা রকমের অপকৌশল এর আশ্রয় নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে সকলের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে রেখে অস্ত্রের চালানটি ঢুকাতে নানা নাটক মঞ্চস্থ করে, এখন অস্ত্রের চালানটি নিরাপদে আনতে আল্টিমেটাম দিচ্ছে জোন কমান্ডার ও বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের।
কিন্তু আল্টিমেটাম তো দেওয়া উচিত সাধারণ জনগণের কেন ইউপিডিএফ প্রসীত এত বছর ধরে চাঁদাবাজি ও সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার পরেও তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়নি? কেন ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের সশস্ত্র অবৈধ অস্ত্রধারী ৩৫০/৪০০ জন সশস্ত্র ক্যাডার পুরো বাঘাইছড়ি, বাঘাইহাট ও সাজেক এলাকায় অবস্থান করার পরেও তাদের আইনের আওতায় আনা হলো না??
অবিলম্বে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের সকল সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি সাধারণ জনগণের।
লেখক জয় দাশ, রাঙামাটি, ২০/০৬/২০২৪