তাপস কুমার পাল, লেখক ও গবেষক পার্বত্য চট্টগ্রাম:
উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা,শান্তি ও সম্প্রীতি স্থাপন এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মূলোৎপাটনে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।
স্বদেশ কিংবা বিদেশ সমতল অথবা পাহাড় যেখানেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদচারণা সেখানেই অভাবনীয় সাফল্য।বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী তার সক্ষমতার সর্বোচ্চটুকু ঢেলে দিয়েছে।পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঢেলে সাজাতে গিয়ে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর অসংখ্য সদস্য এবং অফিসারকে শহিদ হতে হয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী উপজাতি সন্ত্রাসীদের হাতে। এতকিছুর পরেও পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম জনপদকে মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তুলতে প্রানান্তকর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। বিচ্ছিন্নতাবাদী উপজাতী সন্ত্রাসীদের অপপ্রচার এবং চোরাগুপ্ত হামলাকে তোয়াক্কা না করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, সেনাবাহিনী তৈরি করেছে পাহাড়ের আনাচে-কানাচে শত শত কিঃমিঃ রাস্তা। যার ফলে সমতলের সাথে পাহাড়ের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে।
পাহাড়ের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ পরিচালনায় বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান। যাতে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে দূর হচ্ছে পাহাড়ের অন্ধকার।এছাড়াও হাসপাতাল ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনার মাধ্যমে পাহাড়ের হাজার হাজার প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কাছে চিকিৎসা সেবা পৌছিয়ে দিচ্ছে একমাত্র তারাই। পাহাড়ি যেসব এলাকায় খাবার পানির সংকট রয়েছে সেখানেও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে।পাহাড়ের ঘাতক ব্যাধি ম্যালেরিয়া-টাইফয়েড নিধন সহ যে কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সেনাবাহিনীর ভূমিকাই সর্বাগ্রে।
সেনাবাহিনী কল্যাণেই দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ ভ্রমণ পিপাসু মানুষ পাহাড়ে নির্ভয়ে বেড়াতে আসতে পারে। সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গড়ে ওঠেছে পাহাড়ের অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প। সেনাবাহিনীর নির্ঘুম পরিশ্রমের ফলেই পাহাড়ের শত শত কোটি মূল্যর কাঠ,বাঁশ বন, পশুপাখি ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা পাচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে অন্যতম হলো সিমান্ত সড়ক। যা পাহাড়বাসী সহ বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ছিল।যা বাস্তবায়নের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা বহুগুণে বেড়ে গেছে।তাছাড়া বর্তমানে কুকি-চিন সহ যে সমস্ত দেশদ্রোহী সন্ত্রাসীদের আবির্ভাব হয়েছে তাদের থেকে পাহাড় এবং পাহাড়ের মানুষের সুরক্ষা দিতে একমাত্র সেনাবাহিনীর পক্ষেই সম্ভব।
পাহাড়ে জনগণের নিরাপত্তা, রাস্তাঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন শান্তি এবং সম্প্রীতি স্থাপনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিকল্প নেই।