কুকি চিন কী সত্যিই কুকি চিন?

0


কুকি চিনের ব্যানারে বম সন্ত্রাসীদের অরাজকতা?

সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ে কুকি চিন জনগোষ্ঠী নামক ভুয়া পরিচয়ধারী বম সংগঠনের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম সকলের নজর এসেছে। সরকারের সঙ্গে চলমান শান্তি আলোচনা লঙ্ঘন করে, ব্যাংক ডাকাতি, পুলিশ-আনসার বাহিনীর অস্ত্র লুট, হামলা এবং চাঁদাবাজি করে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে কুকি চিন জনগোষ্ঠীর ভুয়া পরিচয়ধারী বম বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা। গত ৭ এপ্রিল ২০২৪ কথিত কেএনএফের সভাপতি নাথান বমের প্রধান সমন্বয়কারী চেওসিম বম (৫৫) নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর কুকি চিন সম্পর্কে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করে। জনমনে প্রশ্ন উঠে কুকি চিন কি সত্যিই কুকি চিন? নাকি কুকি চিনের নাম ব্যবহার করে নাথান বমের বম সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকজনের কাছে এবং মায়ানমার ও ভারতের কুকি চিন সম্প্রদায়ের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে চাচ্ছে?
কথিত কুকি চিনের একের পর এক নেতারা যখন নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হচ্ছে তখন মনোবল হারিয়ে অনেকেই তাদের আসল পরিচয় প্রকাশ করতে শুরু করে। বিবিসি বাংলাসহ বিভিন্ন অনুসন্ধানী রিপোর্টে দেখা যায় বম জনগোষ্ঠীর মধ্যে নাথান বমের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরি হয়। যারা ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্রলুট এবং চাঁদাবাজিকে নিজেদের আয়ের উৎস হিসেবে বেছে নিয়েছে। সর্বদিক দিয়ে কুকি জনগোষ্ঠীকে তথা কুকি চিনকে তারা শুধুমাত্র সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে। মূলত কুকি চিনের নাম ব্যবহার করে বম সন্ত্রাসীরা পাহাড়ে তাদের অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করছে। যার প্রমাণ মিলে বাংলাদেশে কুকি চিন ভুক্ত ৬ জনগোষ্ঠীর ৫ সম্প্রদায় তথা পাংখোয়া, লুসাই, খুমি, ম্রো ও খিয়াংরা বম সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান করা। ভারত ও মায়ানমারে কুকি-চিন ভুক্ত জনগোষ্ঠীর বিরাট একটা অবস্থান থাকলেও বাংলাদেশে তারা অতিক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী।


২০২২ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী বাংলাদেশে কুকি চিনভুক্ত ৬ টি জনগোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৬৫৮১ জন। যা বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় অতিক্ষুদ্র সংখ্যা। আর শুধু বম জনগোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা মাত্র ১৩১৯৩ জন।
কুকি চিন সম্প্রদায়ের সাথে বাংলাদেশের মানুষের বহুদিনের স্বাভাবিক চলাচল থাকলেও কুকি চিন ভুক্ত কথিত বম সম্প্রদায়ের লোকেরা সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসী কর্যকলাপ শুরু করে। বম সম্প্রদায়ের সন্ত্রাসী কার্যকলাপকে অনেকেই কুকি চিনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ মনে করে থাকে যা নিতান্তই ভুল।
বমরা অতি বিচ্ছিন্ন একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যাদের একটি অংশ সন্ত্রাসের সাথে সরাসরি জড়িত।
বম জনগোষ্ঠীের অনেকে এখন নিরাপত্তার স্বার্থে বম সন্ত্রাসীদের থেকে নিজের দূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করেছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর সফল অভিযানের ফলে নাথান বমের প্রধান সমন্বয়কারী চেওসিম বম (৫৫) গ্রেফতার হওয়ার পর নাথান বমের অনেকটা মুখ থুবড়ে গেছে।কুকি চিনের মিথ্যা পরিচয় দিয়েও পাহাড়ের সকল জনগোষ্ঠীর কাছে সে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। পাহাড়ের মানুষ এখন বম সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। শুরু থেকে বান্দরবানে বম সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মাঠে কর্মসূচী পালন করে কুকি জনগোষ্ঠী তীব্র প্রতিবাদে সোচ্চার।

আগের পোস্টবম সন্ত্রাসীরা ‘কুকি-চিন’ হওয়ার মিথ্যা অপপ্রয়াসে লিপ্ত!
পরের পোস্টপাহাড়ে চলছে ইউপিডিএফ এর তথ্য সন্ত্রাস।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন