বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি মুরগী বিক্রি করলে চাঁদা দিতে হয়। সভ্যতার আধুনিক যুগে অনেকেই হয়তো কথাটি শুনে অবাক হয়েছে। অবাক হওয়ার কিছু নেই। পাহাড়ে এটা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়ে। যেখানে সরকারি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে চাঁদা দিতে হয় সেখানে মুরগী থেকে চাঁদা আদায় একটি সাধারণ ব্যাপার।
এ বিষয়ে পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের নেতৃত্বশ্রেণীর সঙ্গে সরেজমিনে কথা বলে জানা গেছে- হাঁস, মুরগী, গরু-ছাগল ও আদা-হলুদ, আনারস, আম কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা ও পাহাড়ের মৌসুমী সকল ফলমূল থেকে চাঁদা আদায় করে পাহাড়ি নামধারী কয়েকটি সংগঠন। সংগঠনগুলোর চাঁদার তালিকায় আছে, গাছ, বাঁশ ও জমিক্রয় বিক্রয়, কৃষি জমি হালচাল তথা জুম চাষ, পরিবহন সেক্টর, ঠিকাদার, ব্যবসায়ী, ইটভাটা, মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানি, মার্কেটিং কোম্পানি, মাছ ধরার নৌকা, জাল ও জেলে। এছাড়াও প্রতি পাহাড়ি পরিবার ও ঘর প্রতি তো গণচাঁদা আছেই। মোদ্দাকথা প্রত্যেকটি সেক্টর থেকে পাহাড়ে আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা চাঁদাবাজি করে।
জানা যায়, চাঁদার হার নিজেদের চাহিদা বা খেয়ালখুশি মত ঠিক করেন। সাধারণত চাঁদা আদায়ের রীতি হচ্ছে: সাপ্তাহিক, মাসিক, পাক্ষিক, ষান্মাসিক, বাৎসরিক ও এককালীন। নিত্যপণ্য ক্রয়-বিক্রিটা পরিমাণ অনুযায়ী দৈনিক উত্তোলন করে থাকে। সরকারি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের চাঁদার ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০% পর্যন্ত। তবে পাহাড়ে চাঁদার সবচেয়ে বড় উৎস গাছ, বাঁশ। স্থানীয়রা পাহাড়ি বাঙালি সম্প্রদায় মনে করেন, চাঁদাবাজির ৭০% গাছ বাঁশ থেকে আদায় করে। প্রতি ঘনফুট কাঠ থেকে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করা। গাছের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিটি ব্যক্তি চাঁদার আওতায়।
স্থানীয়রা বলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার মগবান, বন্দুকভাঙা, বালুখালী, আসামবস্তি কাপ্তাই সড়ক, জুরাইছড়ি, বিলাইছড়ি, কাউখালী ঘাগড়া, বরকল, বাঘাইছড়ির আংশিক, কাপ্তাই, রাজস্থলী এবং বান্দরবানের সুয়ালক, বাঘমারা, সেমুঢলু পাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় জেএসএসের সাংগঠনিক কার্যক্রম আছে। এ এলাকাগুলোকে চাঁদাবাজির আখড়া বানিয়েছে জেএসএস সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীরা। পার্বত্যাঞ্চলের আপামর জনগোষ্ঠী চাঁদাবাজদের ভয়ঙ্কর নেটওয়ার্কে বন্দী। পাহাড়ের আনাচে-কানাচে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে জেএসএস চাঁদাবাজি চলেনা। জেএসএসের চাঁদাবাজির কাছে পাহাড়ের মানুষগুলো আজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হচ্ছে। কোনভাবেই দাবিকৃত নির্ধারিত চাঁদার টাকা যথা সময়ে দিতে ব্যর্থ হলে অপহরণ পূর্বক খুন-গুম করা হয়। আজকে পার্বত্যবাসী জেএসএসের চাঁদাবাজির প্রক্কোপে বিপর্যস্ত। জেএসএসের হাতে নির্যাতনের শিকার বাঙালি জনগোষ্ঠীর চেয়ে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেশি এমনটা অকপটে স্বীকার করেন পাহাড়িরা।
রাঙামাটি বনরূপা বাজার সংলগ্ন সমতা ঘাটের কয়েকজন বোট চালক ও ব্যবসায়ী বলেন, জেএসএস এখানে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি আর চাঁদার টোকেন বিক্রি করে। হাটবারে আগত পাহাড়িরা এখানে যে কাচামাল ও ফলমূল বিক্রি করে সবাই জেএসএসকে চাঁদা দিতে হয়। আমরা যারা ব্যবসায়ী এবং বোট চালক আছি আমরা জেএসএস কে এককালীন চাঁদা দিয়ে টোকেন সংগ্রহ করেছি। পুরো রাঙামাটি শহর ঘিরে জেএসএসের চাঁদাবাজির নেটওয়ার্ক।
রাঙামাটি কাপ্তাই লেকের মৎস্য আহরণকারী বলেন, জেএসএস কে এককালীন মোটা অংকের চাঁদা দিয়ে লেকে জাল ফেলতে হয়। চাঁদা না দিলে জাল কেটে দেয় নৌকা ডুবিয়ে দেয় এবং গুলি করে। বিগত কয়েক বছরে রাঙামাটি মৎস আহরণকারী জেলেদের সাথে জেএসএসের আচরণ ছিল অমানবিক।
রাঙামাটি শহরের প্রাণ কেন্দ্রের নিকটস্থ একটি ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ কাজ চলমান। দাবিকৃত চাঁদা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার না দেওয়ার কারণে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। কাজটি চলছে ঝিমিয়ে। সূত্র বলছে, এখন নিরূপায় ঠিকাদার সর্বশেষ চাঁদা দিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে হবে!
গত (২৪ মে) আসামবস্তি কিপ্পা বিপরীতে তংচঙ্গ্যা পাড়া ড্রেন নির্মাণ কাজের স্থানে দুপুর আনুমানিক ২ ঘটিকার সময় জেএসএস সশস্ত্র কমান্ডার দীপক চাকমার নেতৃত্বে ১৬/১৭ জন বাঙ্গালী লেবারকে বেধড়ক মারধর করার ঘটনা ঘটে।
একাধিক সূত্রের তথ্য মতে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কের ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছে। ড্রেনের কাজটি করার জন্য জেএসএস পূর্বের কমান্ডারকে বিপুল পরিমাণ চাঁদা দেওয়া হয়। পূর্বের কমান্ডার বদলী হওয়ার পর নতুন কমান্ডার আসে দীপক চাকমা (৪০)। কমান্ডার দীপক আসামবস্তি এরিয়াতে আসার পর মোটা অংকে চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদার টাকা সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে লেবারদের উপর অতর্কিত হামলা করে জেএসএস সশস্ত্র গ্রুপের সন্ত্রাসীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা, আবু কালাম জানান, জেএসএস এর একটি সশস্ত্র গ্রপ চাঁদার জন্য লেবারদের মারধর করে কাজ বন্ধ করে দেয়। ভারী অস্ত্র নিয়ে তংচঙ্গ্যা পাড়া অনেক সময় মহড়া দিয়েছে। এর আগেও একাধিকবার এই সড়কে জেএসএস বিশৃঙ্খলা করেছে চাঁদার জন্য। চাঁদার জন্য লেবারদের মারধর এবং সিএনজি আগুন দিয়েছে। গত ২০২২ ও ২০২৩ সালে একাধিক ঘটনা ঘটে এই সড়কে। এসব একাধিক ঘটনার ১ বছর যেতে না যেতেই আবারো হামলা করেছে জেএসএস৷ হামলার পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালী সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে কারা এ চাঁদাবাজির ভয়ঙ্কর নেটওয়ার্ক সৃষ্টিকারী জেএসএস? পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (জেএসএস) সন্তু গ্রুপ পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি জাতিগোষ্ঠীগুলোর কথিত পুরাতন আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে সরকারের সঙ্গে ১৯৯৭ সালের ২-রা ডিসেম্বর ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামক একটি চুক্তিতে উপনীত হয়। চুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের বিরাজমান পরিস্থিতি অবসান হওয়ার কথা কিন্তু সন্তু গ্রুপ চুক্তির পরেও নিজেদের অপতৎপরতা, অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বন্ধ করেনি। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে শাসন-শোষণ আর নিপীড়নের মাধ্যমে পুরাতন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের আবির্ভাব নষ্ট করেছে। পাহাড়ের খেটে খাওয়া পাহাড়ি মানুষদের কষ্টে অর্জিত অর্থ জেএসএস অধিকারের দোহাই দিয়ে কেড়ে নিচ্ছে। এর ফলে পাহাড়ীদের মনে ধারণা তৈরি হয় যে জেএসএস একটি শোষক শ্রেণীতে পরিণত হয়েছে।
এর আগে বান্দরবানের বিদায়ী জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, তিন পার্বত্য জেলার আইন শৃঙ্খলা মেটিং-এ বলেছিলেন, পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেছে৷ সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়েছে যেখানে মানুষের জীবনে প্রয়োজনী নিত্যপণ্য জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রি করতে চাঁদা দিতে হয়। এ চাঁদাবাজদের নেটওয়ার্ক এতটাই শক্তিশালী মানুষ তাদের চাঁদা দিতে বাধ্য হয়। পাহাড়ে চাঁদাবাজের নেটওয়ার্ক অনেক বিস্তৃত। জেএসএস সন্তু গ্রুপ চাঁদা আদায়ে এমনভাবে নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করেছে কার থেকে কোথায় কীভাবে চাঁদা নিবে তা নিয়ন্ত্রণ ছিল সুদক্ষভাবে। তারা একদম প্রশাসনের ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে। তাদের চাঁদা উত্তোলন করার ছিল মনিটরিং টিম। জনবহুল এলাকা থেকে শুরু করে পাহাড়ের গভীর পর্যন্ত চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য ছিল। এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণ, পাহাড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যান্ত নাজুক। এই প্রেক্ষিতে জেএসএস সাংগঠনিক তৎপরতা ও চাঁদাবাজির বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।
বিলাইছড়ি উপজেলার ছদ্মনাম অরবিন্দ কার্বারী বলেন, পাহাড়ের জুম ঘরগুলো থেকেই আঞ্চলিক সন্ত্রাসীরা চাঁদাবাজির নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে থাকেন। এই জুম ঘরগুলোতে বসে চাঁদা আদায়ের সবকিছু ঠিক করেন। এখান থেকে মনিটরিং করা হয় কখন কার থেকে কিভাবে চাঁদা আদায় করবেন। কখন কাকে কিভাবে অপহরণ করে চাঁদা আদায় করবেন। জুমঘর গুলো পাহাড়ীদের জুমচাষের জন্য গড়ে উঠলেও তার আদলে এখানে সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
নিরাপত্তা জনিত কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বান্দরবান বাঘমারার এক ধর্মগুরু জানান, “পাহাড়ের কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় হিসেবে ব্যবহারিত হচ্ছে। সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রশাসন থেকে নিজেদের আড়াল করতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেছে নেন। সাধারণত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান করা স্পর্শকাতর। ফলশ্রুতিতে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে দুর্গম এলাকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। আমি একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান ছিলাম। আমি ঔ প্রতিষ্ঠানে থাকার আগে জেএসএস নিয়মিত রাত্রিযাপন ও খাওয়া-দাওয়া করত কিন্তু আমি প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার পর থেকে তা বন্দ করেই দিই। পরবর্তীতে আমাকে জেএসএস এলাকার কিছু বিপদগামী তরুণ- তরুণী লেলিয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এমনটা নয় শুধুমাত্র দুর্গম এলাকার কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তারা আশ্রয়-প্রশ্রয় গ্রহণ করে। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডও পরিচালনা করে।”
বান্দরবানের সুয়ালক, বাঘমারা, সেমিঢলু এবং রুমা আংশিক ও থানচিতে জেএসএসের চাঁদাবাজি ছিল একসময় মানুষদের জন্য অসহনীয়। এলাকাগুলোর অনেক স্থান থেকে জনসাধারণের প্রতিরোধে বিগত বছর থেকে জেএসএস নিজেদের গুড়িয়ে নিয়েছেন। কিছু এলাকায় জেএসএসের প্রভাব এখনো বিদ্যমান। এগুলোতে অসহনীয় সীমাহীন চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছে। বেশ করে বাঙালহালিয়ার পর থেকে বান্দরবান সদর পর্যন্ত জেএসএসের রাজ্য কায়েম চলে। এ জনপদের জনসাধারণ জেএসএসের হাতে জিম্মি। চাঁদা দিতে দিতেই মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ৬ টি আঞ্চলিক দলকে চাঁদা দিতে হয়। এ চাঁদার টাকা দিতে গিয়ে অনেক পাহাড়ি পরিবারকে ভিটামাটি হারাতে হয়েছে। পাহাড়ে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে যেসব পাহাড়ীরা প্রতিবাদ করেছে তারা জেএসএসসহ অন্যান্য সমমনা সশস্ত্র দলগুলোর হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান ঘিরে চলে ৬টি পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের অঘোষিত শাসনভার। তাদের রয়েছে চাঁদাবাজির বিশাল নেটওয়ার্ক৷ এই নেটওয়ার্কের জাল মাকড়সার মত বিস্তৃত তিন পাহাড় জেলার বিশাল জনপদে। এ সংগঠনগুলো চাঁদাবাজি আর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সংঘর্ষে প্রাণ হারাচ্ছে পাহাড়ি বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ। পার্বত্য পরিস্থিতি অশান্ত করা পাহাড়ি সংগঠনগুলোর চাঁদাবাজরা সবসময় ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে থাকছে। কিছু ধরা পড়লেও সহসাই জামিনে বেরিয়ে ফের জড়িয়ে পড়ছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে জেএসএসসহ সমমনা আঞ্চলিক দলগুলোর বাৎসরিক চাঁদা আদায়ের পরিমাণ কত এমন এক প্রশ্নের জবাবে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্দ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, বাৎসরিক কমপক্ষে এক হাজার কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে। এই চাঁদার বিপুল পরিমাণ টাকা কিভাবে ব্যয় করে? এ প্রশ্নের জবাব বলেন, অস্ত্রক্রয়, সংগঠনের সদস্যের বেতনভাতা, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনাসহ কেন্দ্রীয় শীর্ষস্থায়ী নেতৃবৃন্দ বিলাসবহুল জীবনযাপনে ব্যয় করে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতার কাছে জানতে চাওয়া হয় চাঁদাবাজদের থেকে সাধারণ মানুষের মুক্তি কীভাবে? এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জেএসএসের যে চাঁদাবাজির বিশাল নেটওয়ার্ক সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে এখানকার জনগোষ্ঠী গুলোর মুক্তির পথ হলো- পাহাড়ে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এখানকার যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নতকরা একই সাথে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীর মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা। পাহাড়ে যেসব এলাকায় সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে সেসব এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প বৃদ্ধি করা। এর মাধ্যমে চাঁদাবাজির নেটওয়ার্ক বিনাশ করা সম্ভব।