নিরপেক্ষতা হলো কোনো নির্দিষ্ট পক্ষ অবলম্বন না করে সঠিক বেঠিক বিবেচনা করে সঠিকের পথ বেঁচে নেয়া। আবার কারও কারও মতে, নিরপেক্ষতা হচ্ছে সত্যের পক্ষ নেওয়া। ‘সত্য’ শব্দটির নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। এটি খুবই আপেক্ষিক।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট, সর্বোপরি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে নিরপেক্ষ থাকার অবকাশ আছে বলে মনে করি না। বিশ্বের অন্য দেশগুলির ইতিহাস আর বাংলাদেশের ইতিহাসের একটা মৌলিক পার্থক্য হচ্ছে, এই দেশটি অনেকগুলি রক্তক্ষয়ী লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। লড়াই করে পেয়েছে তার ভাষার অধিকার, লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে পেয়েছে তার স্বাধীনতা ও সার্বভৌম পরিচয়।
সর্বশেষ ৫ আগষ্ট ২০২৪ পেল আরেকটি আলোচিত নতুন বাংলাদেশ। তাই এখানে আছে শত্রুমিত্রের লড়াই। বাইরের শত্রুকে পরাজিত করে দেশটি ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতা ও আত্মপরিচয়। কিন্তু রয়ে গেছে তার ভিতরের পরিচিত ও অপরিচিত শত্রু। পার্বত্য চট্টগ্রাম এর দৃশ্য বেশি পরিলক্ষিত হয়। বিভিন্ন শত্রু যদি চিহ্নিত করা হয় তাহলে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে। বাংলাদেশের এ অঞ্চলটি নিরাপদ রাখতে সবচেয়ে বেশি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
দেশের ক্রান্তিলগ্নে যেভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশ ও জাতি রক্ষায় বীরদর্পে ভূমিকা পালন করেছে। ঠিক সেভাবেই পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরপেক্ষভাবে সকল জাতিকে নিরাপত্তা দিতে নিজেদের জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
নিরপেক্ষতা বজায় রেখে পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষদের নিরাপদ রাখতে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। চলমান পরিস্থিতির আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরপেক্ষ বলতে আমরা কিছু সুশীল সমাজের মানুষ থাকলেও তারা তাদের জাতিগত টানে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারছেনা। কিছু আর্দশবান শিক্ষক সমাজ তাদের নিরপেক্ষতা দেখালে ও দিন শেষে জাতিগত টানে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারছেনা। সুদুর প্রসারী চিন্তাভাবনায় পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরপেক্ষতা কাউকে পেলে সেটা হলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। যারা সকল সম্প্রদায়ের জন্য নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
যেখানে কেহ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারবে সেখানেই সে মাধা উঁচু করে বাঁচতে পারবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে নিজেদের মর্যাদা উন্নয়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। চলমান পরিস্থিতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরপেক্ষতা বজায় রাখছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। যার ফলে সাধারণ জনগণ শান্তিতে বসবাস করতে পারছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক দল, হেডম্যান-কার্বারী, উপজাতি নেতা, বাঙ্গালী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এখানে নিরপেক্ষতা বিচারে সাম্প্রদায়িক বা কোন না দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে নিরপেক্ষ কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। যেসব সমাজ ও দেশে শান্তিশৃঙ্খলা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে সমাজপতি, শাসক দল এবং ক্ষমতাধর গোষ্ঠীর আচার-আচরণ ও কর্মকাণ্ডে নিরপেক্ষতা বজায় থাকে কিন্তু যেখানে তা প্রতিষ্ঠিত হয়নি সেখানে নিরপেক্ষতা খুঁজে পাওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। তাই বলতে পারি পার্বত্য চট্টগ্রামে একমাত্র নিরপেক্ষ দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী। যারা রাস্ট্র তথা জনগণের যে কোন বিপদ-আপদে সাহায্যে এগিয়ে আসে। তাদের এই দেশপ্রেম অনস্বীকার্য।