রাজা ও রাণীর অন্তর্দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে

0

নেপথ্যের কাহিনী কি?
চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় এবং তার দ্বিতীয় পত্নী রাণী ইয়েন ইয়েনের মধ্যে অনেক দিন থেকে মনোমালিন্য থাকলেও এখন তা প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। ইয়েন ইয়েনের বেপরোয়া আচরণ ও অপরিপক্ক কথাবার্তার কারনে দেবাশীষ রায় তার পরিবার এবং জাতির কাছে অনেকবার লজ্জিত হয়েছে।
চাকমা সার্কেল চীফ হয়েও ভিন্ন জাতির রাখাইন মেয়েকে বিয়ে করায় দেবাশীষ রায়ের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিল তার পরিবার এবং চাকমা সম্প্রদায়ের বুদ্ধিজীবীরা। পরিবার এবং জাতির কথা বিবেচনা না করে দীর্ঘ দিন প্রেমের সম্পর্কের পর রাখাইন মেয়ে ইয়েন ইয়েনকে বিয়ে করে দেবাশীষ রায়। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই ইয়েন ইয়েনের অস্ট্রেলিয়ার বন্ধুদের সাথে অন্তরঙ্গ কিছু ছবি ভাইরাল হয় নেট দুনিয়ায়। তখন থেকে রাজ পরিবারের দ্বন্দ্ব অনেকটা প্রকাশ্যে আসে।

জানা যায়, দেবাশীষ রায় প্রথমে স্বগোত্রীয় তাতু রায়কে বিয়ে করেছিলেন যিনি ১৯৯৯ সালে মারা যান। এই দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে, ত্রিভুবন আর্যদেব রায় (যুবরাজ) (১৯৯০) নামে এক পুত্র এবং আয়েত্রি আরাধন রায় (১৯৯৪) নামে এক কন্যা। তাঁর পুত্র ২০০৩ সালে যুবরাজ হন। ৪ জুলাই ২০১৪ সালে দেবাশীষ রায় স্থপতি এবং কথিত আদিবাসী সমাজকর্মী ইয়ান ইয়ান নামে এক জাতিগত রাখাইনকে বিয়ে করেছিলেন। এই দম্পতির যোদ্ধা দেবায়ন রায় নামে এক পুত্র রয়েছে। যেহেতু দেবাশীষ রায়ের প্রথম পুত্র ত্রিভুবন আর্যদেব রায় (যুবরাজ) ভবিষ্যতে রাজা হবেন সেহেতু তাকে ষড়যন্ত্র করে চাকমা রাজ পরিবার থেকে বিতাড়িত করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রাখাইন সম্প্রদায়ের উগ্র ইয়েন ইয়েন। সে চাচ্ছে তার পুত্র যোদ্ধা দেবায়ন রায় যেন ভবিষ্যতে রাজা হিসেবে চাকমা সার্কেলে নিযুক্ত হন। এই নিয়ে চাকমা রাজ পরিবারের অন্তর্দ্বন্দ্ব বহুদিন থেকে চলছে।

গত ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে দেশ থেকে ত্যাগ করে শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করার পর নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড.মুহাম্মাদ ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান এবং সকল উপদেষ্টাদের জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলে গ্রহণ করলেও বাধ মেনে নিতে পারছেনা কথিত রাণী ইয়েন ইয়েন। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা বানানোর কারণে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ইয়েন ইয়েন বলেন, উপজাতি প্রতিনিধি নির্বাচনের আগে কোন সংলাপ করা হয়নি। তাই এই প্রতিনিধি স্থগিত করা হোক। তবে দেবাশীষ রায় বলেন, রানী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা চাকমা সার্কেলের বক্তব্য নয়।

তাদের দ্বিমুখী বক্তব্যের কারণে রাজ পরিবারের অন্তর্দ্বন্দ্বের বিষয়টি একেবারে পরিস্কার হয়ে উঠে।
অতি কথনে অভ্যস্ত ইয়েন ইয়েন মনে করেন, সুপ্রদীপ চাকমা উপজাতি সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেনা।উপজাতিদের অনেকেই মনে করেন, ইয়েন ইয়েন চাকমাদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেনা। সে চাকমা সমাজের কেউ নয়।
রাখাইন হয়েও চাকমা সার্কেল চীফকে বিয়ে করায় চাকমা সমাজ তার প্রতি অসন্তুষ্ট। চাকমা সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ইয়েন ইয়েনকে কখনো রাজমাতা হিসেবে গ্রহণ করেনি। ধারনা করা হয়, এই ক্ষোভ থেকে চাকমা সম্প্রদায় এবং রাজ পরিবারকে বিতর্কিত করার দূর্রভিসন্ধি হিসেবেই পাহাড়ের প্রতিটি অরাজকতায় প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ মদদ দিয়ে থাকেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কোন ঘটনা ঘটলে সেই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রং দেয়ার চেষ্টা করে। তার উস্কানিমূলক কার্যকলাপ অব্যাহত রয়েছে, যাতে পাহাড়বাসীর পারস্পরিক ঐক্য, সামাজিক সংহতি ও শান্তি-সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়। এহেন মতবিরোধ, বিভেদ সৃষ্টি করতে রাণী ইয়েন ইয়েন গভীর ষড়যন্ত্রে নেমেছে।

আগের পোস্টঅন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে সুপ্রদীপ চাকমার নিয়োগের বিরোধিতা করেছে কারা?
পরের পোস্টপার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক দলের কর্মকান্ডে সাধারণ মানুষের কান্না।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন