পাহাড় নিয়ে নেটিজেনদের ভাবনা।

0
9

 

লেখক: সিনথিয়া মাহারুক-  পাহাড় পাহাড় আবার কি মুন্সিগঞ্জ, যশোর আমার নেত্রকোনা কে যেভাবে উল্লেখ করা হয়, সেভাবে উল্লেখ করবেন খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান ।

পাহাড় বলে আলাদা করে কেন উল্লেখ করতে হবে?
সমতল যেমন বাংলাদেশের ঐ উঁচু ভূমিটাও বাংলাদেশের।

বাংলাদেশের সমতলের প্রতিটি কোনা যেমন সবার রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানের মাটিও সবার।
এটাকে আলাদা করে যে বা যারাই ভাববে তারাই এদেশের সার্বভৌমত্বের বিরোধী।
যারা এই সার্বভৌমত্ব না মেনে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে বছরের পর বছর তারাই এদেশের সার্বভৌমত্বের বিরোধী।

বাংলাদেশ এর সেনাবাহিনীর প্রধান কাজ ই এদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।
যুগের পর যুগ তারা এই সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করছে।
যারা বলবেন পাহাড়ে কেন সেনাবাহিনী তাদের বলব সাজেক, চিম্বুক ঘুরে এসেছেন না মেঘের রাজ্যে ? সেই মেঘের রাজ্য টা আপনার যাওয়ার উপযোগী করেছে এই সেনাবাহিনী।
আপনার বসবাসের উপযোগী নিরাপদ রাখতে তাদের রাতের ঘুম বাদ দিতে হয়।

আপনি কি জানেন সাজেক বাংলাদেশ এর শেষ সীমানা নয়। সাজেক থেকে ছয় দিনের হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে গেলে ও আপনি বাংলাদেশের সীমান্ত পাবেন।

এদেশের বর্ডার গার্ড সেখানে সীমান্ত পাহারা দেয়।

তাদের খাবার টুকু পৌঁছে দিতে হলে সেখানে হেলিকপ্টার পাঠাতে হয়।
জানেন বর্ষায় লাগাতার বৃষ্টি হতে থাকলে হেলিকপ্টার যেতে পারে না সেখানে। খাবার শেষ হয়ে গেলে ওরা কি অবস্থায় থাকে জানেন?

 

একটা ব্যক্তিগত ঘটনা বলি,
২০১৭ সালের জুন মাসে রমজান চলছিল। লাগাতার বৃষ্টি। সেই বৃষ্টিতে রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে উদ্ধার কাজ করতে গিয়ে সেনাবাহিনীর দুই জন অফিসার এবং কয়েক জন সৈনিক মাটি চাপা পড়ে শহীদ হলো।‌সেই ওয়েদারে হেলিকপ্টার চলাচল ও সম্ভব ছিল না।
আমাদের পোস্টিং তখন খাগড়াছড়ির বিজিবিতে।
হাসানের একটা ক্যাম্পে ছয় দিন কোন রেশন ছিল না। ওর সৈনিকেরা মিষ্টি কুমড়া সিদ্ধ করে খেয়ে দিন কাটাচ্ছিল। ভাত, তেল, চিনি কিছুই ছিল না।
আমি দেখি হাসান ইফতার করে না ঠিক মতো, এমনকি সেহেরি তে ও কিছু খায় না তেমন। আমার শ্বশুর একদিন ইফতারের টেবিলে তাকে জিজ্ঞেস করলো, কি ব্যাপার কি হয়েছে খাচ্ছিস না কেন?
সেদিন ইফতারের টেবিলে হাসান কেঁদে ফেলল, আমার সৈনিক গুলো আজ ছয়দিন মিষ্টি কুমড়া খেয়ে আছে আমি অধিনায়ক হয়ে এত এত ইফতার কিভাবে খাই আব্বা?
বাবা মা এমনকি সন্তান মারা গেলেও একজন সৈনিক হেলিকপ্টার ছাড়া নেমে আসতে পারে না শেষ দেখা দেখতে সেই সব ক্যাম্প থেকে।
এই বাংলাদেশ কখনো বাংলাদেশ এর ঐ রূপটা অনুধাবন করতেও পারবে না যেখানে প্রতিটি পদে পদে মৃত্যু পাশে পাশে হাঁটে।
এদেশের সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড সেই মৃত্যু কে সঙ্গে নিয়েই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব কে রক্ষা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
যে বা যারা নিজেকে বাংলাদেশী ভাববে না তাকেই এই দেশের সার্বভৌমত্বের শত্রু ভাবব আমরা। তাদের জন্য কোন সমবেদনা নেই।
ফেসবুকে লম্বা লম্বা স্ট্যাটাস দেয়া সহজ, কমেন্ট করা সহজ কিন্তু কয়েক দিন থেকে দেখে আসেন বাংলাদেশ এর অংশ বজায় রাখতে কত কষ্ট সেই পাহাড়ে।

সূত্রসিনথিয়া মাহারুক
আগের পোস্টপাহাড়ের উপজাতিরা কী আদিবাসী: তাহামিদুল ইসলাম।
পরের পোস্টসাম্প্রদায়িক হামলার শিকার বাঙালি যুবক রক্তাক্ত।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন