সাজেক ভ্রমণের দুঃস্বপ্ন অভিজ্ঞতা।

0

 

প্রিয় বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণ,
সম্প্রতি, গত ১৬ তারিখে আমি আমার পরিবারসহ সাজেক ঘুরতে গিয়েছিলাম। সাজেকের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার উদ্দেশ্যে আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আমাদের এই আনন্দদায়ক ভ্রমণটি এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতায় পরিণত হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামের চলমান সংঘাতের কারণে আমরা পাহাড়ে আটকা পড়ি। আটকা থাকা অবস্থায় সেখানে পাহাড়িদের বাঙ্গালীদের প্রতি যে আচরণ দেখি তা ছিল অকল্পনীয়। তাদের আচরণ অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং নৃশংস ছিল, যা আমাদের মানসিকভাবে ভীষণভাবে আঘাত করেছে। পরিবারসহ জীবন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম, এমন পরিস্থিতিতে শুধু আল্লাহর উপর ভরসা ছিল আমাদের একমাত্র আশ্রয়। এই সময়ে আমরা বুঝতে পারলাম, এমন জায়গায় নিরাপত্তার অভাব কতটা ভয়ানক হতে পারে। বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই, খাবার নেই, এ যেন আফ্রিকার জঙ্গলে আটকে পড়ার মতো অবস্থা। আশেপাশের পাহাড়িরা কেউ আমাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে না। আর-দশ গুণ বেশি টাকা দিয়েও পানি পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না।
যাহোক, এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে আমাদের রক্ষা করে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে তৎপরতা চালিয়ে সব পর্যটককে নিরাপত্তা প্রদান থেকে শুরু করে পানিও খাবারের ব্যবস্থা করে। সবশেষে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হলে ২৪ তারিখ আমরা সেনাবাহিনীর সশস্ত্র গার্ডের মাধ্যমে নিরাপদে ফিরে আসতে পেরেছি।

এই অভিজ্ঞতার পর, আমি সকলকে অনুরোধ করব—যতদিন এই সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি চলমান থাকবে, ততদিন সাজেক বা এর আশেপাশের এলাকার ভ্রমণ পরিকল্পনা থেকে বিরত থাকুন। জীবন ও নিরাপত্তা সবার আগে। পাহাড়ি অঞ্চলে চলমান এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যেকোনো মুহূর্তে বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন, যা পরিবার ও আপনজনের জন্য মর্মান্তিক হতে পারে। কারণ পাহাড়ে বসবাসরত উপজাতীয় উগ্র জনগোষ্ঠী এতটাই ভয়ংকর যে তারা মানুষ মারতে বা তাদের উপর নির্যাতন চালাতে একটুও দ্বিধাবোধ করে না। সম্প্রীতি ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে আপনারা হয়তো জেনেছেন যে এই পাহাড়ে বসবাসরত যত পাহাড়ি উপজাতি রয়েছে তারা যেভাবে পাহাড় দখলের জন্য মিছিলে নেমেছে তাদের যে দাবি তা বাংলাদেশী হয়ে আর কখনোই মেনে নিতে পারি না। কারণ বাংলাদেশের এ অপরূপ সৌন্দর্যময় পাহাড় শুধু পাহাড়ে উপজাতিদের না আমাদের বাংলাদেশের সকল নাগরিকের । আমাদেরও হক আছে পাহাড়ে ভ্রমণ করার । পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখার।

সেনাবাহিনীর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা, যারা আমাদের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরিয়ে এনেছেন। এরকম নির্মম পরিস্থিতিতে যদি সেনাবাহিনী পাহাড়ে না থাকে তাহলে পাহাড় আরেকটি নরকে পরিণত হবে। তাই আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করব পাহাড়ে উগ্র জনগোষ্ঠীদেরকে শান্ত করতে এবং সরকারের কাছে আরো অনুরোধ করবো যাতে দ্রুত এর একটি সমাধান বের করেন।

সবাইকে নিরাপদে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয়, সেই প্রার্থনা করছি।

আগের পোস্টসাজেকে পর্যটকদের দূর্ভোগ।
পরের পোস্টউপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড নিয়ে পিসিএনপি’র মহাসচিবের বিবৃতি।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন