জিহান মোবারক, হিল নিউজ বিডি: রাঙামাটি ও বান্দরবান সড়কের ৪১ কিলোমিটার এলাকায় সড়ক ও জনপদ বিভাগ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ব্রীজ নির্মাণ ও মাটি কাটা কাজ চলছিল। গত কয়েক মাস থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (জেএসএস সন্তু) গ্রুপ মোটা অংকের চাঁদা চেয়ে আসছিলেন। এতদিন ধরে লোক মারফত ৬০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে আসলেও ব্রীজ নির্মাণ স্থলে এসে সাব-কন্ট্রাক্টরের উপর হামলার ঘটনাটি উন্নয়নমূলক কাজে বাধা দেওয়ার শামিল। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ জানিয়েছেন।
ব্রীজ নির্মাণ কাজে সহযোগী হিসেবে সম্পৃক্ত শফিকুর রহমান (২৮) জানান, গত ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুর আনুমানিক ৩ ঘটিকার সময় জেএসএস সন্তু গ্রুপের একটি সশস্ত্র টিম কাজের স্থলে এসে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এসময় সাব-কন্ট্রাক্ট সৈয়দ (৩৬) কে ১২ জন জেএসএস সশস্ত্র সন্ত্রাসী ঘেরাও করে মারধর করতে থাকে। জেএসএস সদস্যরা ৬ জন পোষাকে আর ৬ জন সিভিলে ছিল। সন্ত্রাসীরা সৈয়দকে জুতা দিয়ে লাথি, বন্দুকের নল দিয়ে আঘাত ও পা দিয়ে মাটিতে চেপে ধরে মারধর করে৷ এসময় সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৫০/৬০ টি গাড়ি সড়কে আটকা পড়ে। পরবর্তীতে তাকে তাইংখালী নামক স্থানে নিয়ে যাওয়ার পথিমধ্যে সেমি ঢুলু সেনা ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনী আসার খবর শুনে দ্রুত পালিয়ে যায় জেএসএস সন্ত্রাসীরা। মারধরের সময় জেএসএস সন্ত্রাসীরা বলেন, ৬০ লাখ টাকা চাঁদা কেন তাইংখালী গিয়ে দিয়ে আসেনি। এই বলে মারধর করতে থাকে।
সংশ্লিষ্ট কাজের সহযোগী শফিকুর রহমান আরো বলেন, হামলার সময় এলাকাবাসী মিলে ৩০ জন নারী-পুরুষ সৈয়দকে উদ্ধার করতে গেলে জেএসএস তাদের উপরও হামলা করে।
আহত সৈয়দকে প্রথমে বান্দরবান জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। স্বাস্থ্যের অবস্থা অবনতি হওয়ায় ডাক্তার ২৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আহত সৈয়দের হাত, গলা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ রক্তাক্ত ছিল৷
জানা গেছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে সড়ক ও জনপদ বিভাগ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ব্রীজ নির্মাণ ও মাটি কাটা কাজটি শুরু হয়। ব্রীজের প্রায় ৭৫% কাজ শেষ আর মাটি কাটার ২০%, শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ চলমান। বিপুল পরিমাণ চাঁদা দাবি ও সাব-কন্ট্রাক্টের উপর হামলা কাজটি ধমকে গেছে৷ এত টাকা চাঁদা দিয়ে কাজটি চালু করলে কাজের গুনগত মান খারাপ হতে পারে বলে ধারণা সচেতন মহলের। তবে চাঁদা ছাড়া কাজটি সম্পূর্ণ করতে দিবে না বলেও জেএসএসের আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে প্রতিমান।
আহত সাব-কন্ট্রাক্টর সৈয়দ বান্দরবান জেলার ডাক বাংলো মুসলিম পাড়া এলাকার আমিনুল ইসলামের পুত্র বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, জেএসএস সন্ত্রাসীদের হামলার প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ সভা হবে। আর এই নিয়ে সৈয়দ হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে আসলে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
সড়ক কাজে চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য না করলেও সন্ত্রাসী হামলায় সাব-কন্ট্রাক্টর সৈয়দ আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।