খাগড়াছড়িতে বাঙালি শিক্ষককে হত্যার ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত।

0
284

জনি বড়ুয়া, হিল নিউজ বিডি:শিক্ষাঙ্গনে দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, নিয়ে হাজার হাজার ছাত্র ছদ্মবেশী পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাংচুর করে আর তথাকথিত ধর্ষণ অভিযোগে শিক্ষক সোহেল রানাকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনাটি যে পরিকল্পিত তা কিন্তু ঘটনার ২/৩ ঘন্টা পূর্ব থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানিমূলক গুজব রটানো ও শিক্ষক সোহেল রানার বিষয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোসহ তাকে প্রতিহতের ঘোষণা স্পষ্ট তার প্রমাণ।

পাহাড়ি সন্ত্রাসী কর্তৃক শিক্ষককে পিটিয়ে মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে৷ এতটা নৃশংস ও হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি শিক্ষককে হত্যা করেছে যা একজন সভ্য মানুষ হিসেবে ভাবতে অবাক লাগে। আমাদের দেশে কী বিচার ব্যবস্থা নেই? কেউ অপরাধ করলে তার বিচার হবে দেশের প্রচলিত আইনে। কিন্তু উগ্র চিন্তা ধারণা ও জাতিগত ভেদাভেদ থেকে একজন শিক্ষককে হত্যা করতে বহুদিন থেকে পরিকল্পনা করে শিক্ষাঙ্গনে এভাবে সন্ত্রাস করা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না।

খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষককে কথিত ধর্ষণ অভিযোগে অভিযুক্ত করতে ২০২১ সাল থেকে ইউপিডিএফ বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছে। জানা গেছে কলেজের ইন্সট্রাক্টর (বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স) ও বিভাগীয় প্রধান শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করে সন্ত্রাসীরা। সোহেল রানার বিরুদ্ধে এক পাহাড়ি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। ওই ছাত্রী আদালতে এসে সাক্ষ্য দেয় তিনি কোন ধর্ষণের শিকার হননি। পাহাড়ি একটি সংগঠনের চাপে মামলা করেছে মর্মে সাক্ষ্য দিলে সোহেল রানা খালাস পান এবং চাকরিতে যোগদান করেন। সোহেল রানা চাকরিতে যোগদানের পর থেকে পাহাড়ি ছাত্ররা তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির নানা অভিযোগ এনে প্রত্যাহার দাবি করে আসছিল। আজ ওই শিক্ষক বিদ্যালয় এলে ত্রিপুরার এক ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ এনে শিক্ষককে হত্যা করা হয়। সন্ত্রাসীদের প্রতিবাদের মুখে ওই শিক্ষক আজ বিদ্যালয় রিলিজ অর্ডার নিতে এসেছিলেন। কিন্তু তাকে সেই সুযোগ দেয়া হলো না।

আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ইউপিডিএফ ও তার ছাত্র সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) একটি মিথ্যে ধর্ষণ অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে পাহাড়িদের উত্তেজিত করতে। ইউপিডিএফের সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন থেকে বারবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বলা হয়, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কলেজ প্রাঙ্গণ ও খাগড়াছড়ি সদরে আসার জন্য৷ বাঙালি শিক্ষক কর্তৃক পাহাড়ি ত্রিপুরা মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং আটকিয়ে রাখা হয়েছে। এসব মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য ছড়িয়ে পাহাড়িদের উত্তেজিত করে ইউপিডিএফ৷ বিভিন্ন গোপন সূত্র ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে শিক্ষক হত্যার ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত। শিক্ষাঙ্গনে যদি কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে তা রোধে কলেজ কর্তৃপক্ষ আছে, প্রশাসন আছে। তাদের উপর বিষয়টি না দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশ করে একজন শিক্ষককে পিটিয়ে মারা কোন সভ্য সমাজের কাজ হতে পারেনা। এখানে স্পষ্ট যে পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা উগ্রবাদী মতবাদের। যারা বাঙালি বিদ্বেষী।

আমরা রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে দেখতেছি ইউপিডিএফ পাহাড়কে অশান্ত করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানিমূলক তথ্য ছড়াচ্ছে, ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলন ও অসাংবিধানিক দাবিদাওয়া পেশ করে পাহাড়ি বাঙালি সংঘাত সৃষ্টি করতে কলকাঠি নাড়ছে। পাহাড়ে জাতিগত দাঙ্গা সৃষ্টি করে ইউপিডিএফ যে ফায়দা হাসিল করতে অপ্রচেষ্ঠা করছে তা একজন শিক্ষককে হত্যার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে।

পাহাড়ে ইউপিডিএফ সংঘাত উস্কে দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। কিন্তু এর পরিমাণ যে কতটা ভয়াবহ হবে সেটা হয়তো ইউপিডিএফ অনুধাবন করতে পারেনি। পাহাড়ে প্রতিটি সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার জন্য ইউপিডিএফকে বিচারের মুখামুখি হতে হবে।

আগের পোস্টমিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে বাঙালি শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করে উপজাতিরা।
পরের পোস্টপাহাড়ে এক কলেজ শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করেছে উগ্র উপজাতি সন্ত্রাসীরা।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন