বাদল বসু, খাগড়াছড়ি: পাহাড়ে অঘোষিত শাসনভার উপজাতি সংগঠনের হাতে। তার উদাহরণ হিসেবে বলা যায় খাগড়াছড়িতে বাঙালী শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনা। পাহাড়ে বাঙালিকে পিটিয়ে হত্যা করলে তার বিচার হয়না। চোর বা ধর্ষক অপবাদ দিয়ে হত্যাকে বৈধ করা হয়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ও অদ্য ১ অক্টোবর খাগড়াছড়ি সদরে দুইটি হত্যাকাণ্ড উপজাতিরা সংঘটিত করে বাঙালিদের এই অপবাদ দেন। আজ সকালে খাগড়াছড়িতে এক বয়স্ক কলেজ শিক্ষককে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে অভিযুক্ত করে হত্যা করে ইউপিডিএফ সহযোগী অঙ্গসংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) নামক সন্ত্রাসীরা।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক সোহেল রানাকে কলেজ থেকে চাকরিচ্যুত করতে সন্ত্রাসীরা ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করতে নানানভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় অদ্য মঙ্গলবার ১ অক্টোবর সকালে এক ত্রিপুরা শিক্ষার্থীকে শিক্ষক সোহেল রানা কর্তৃক ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা করেছে এমন কথিত ধর্ষণ অভিযোগ তোলে পাহাড়ি সংগঠন। এই অভিযোগে শিক্ষককে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। সকাল থেকে সন্ত্রাসীরা উক্ত শিক্ষককে হত্যা করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ধর্ষণ অভিযোগ ছড়িয়ে দেয়৷
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে একজন শিক্ষককে হত্যা করার ঘটনাকে কোনভাবেই স্বাভাবিক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উঠিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই৷ পাহাড়ে কিছু হলে বা সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাঙালিকে পিটিয়ে হত্যা করার সংস্কৃতি নতুন নয়।
পাহাড়ে চাকমারা মানুষ মারলে তার বিচার হয়না৷ এই প্রবাদটি সত্যি সত্যিই তার স্বার্থকতা রেখেছে৷ ত্রিপুরা শিক্ষার্থীকে কথিত ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগের কোন তদন্ত না করে একজন শিক্ষককে সাম্প্রদায়িক মনোভাব ও উগ্র মানসিকতা থেকে হত্যা করা একটি স্বাধীন দেশে মেনে নেওয়ার নয়।
এভাবেই যদি একজন পাহাড়ি শিক্ষককে বাঙালিরা হত্যা করতো আমাদের সুশীল ও বুদ্ধিজীবীদের প্রতিক্রিয়া কী হতো? নিঃসন্দেহে পাহাড়ের বাঙালীদের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়তেন।
উগ্র উপজাতি কর্তৃক বারবার বাঙালিদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনা পাহাড়ে যে অঘোষিত শাসনভার উপজাতি সংগঠনের হাতে তা কিন্তু স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। বাঙালি হয়ে পাহাড়ে জন্ম গ্রহণ করা এক মহাপাপ। জানিনা এভাবে আর কত বাঙালি পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হবে। পাহাড়ে বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মিথ্যা ধর্ষণের অভিযোগ তুলে বাঙালি শিক্ষককে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পিটিয়ে হত্যা করে এবং টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ব্যাপক ভাংচুর করে ইউপিডিএফ। শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্য করে ইউপিডিএফ পাহাড়ে শিক্ষাকে ধ্বংস করতে চায়। আজকে একজন শিক্ষককে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে তারা প্রমাণ দিয়েছে।
উল্লেখ যে, পাহাড়ে ভয়াবহ দাঙ্গা সৃষ্টি করতে ইউপিডিএফ সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে। গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনায় ইউপিডিএফ সরাসরি সম্পৃক্ত। তিন পার্বত্য জেলায় ইউপিডিএফ স্কুল কলেজের ক্লাস বর্জন করেছে ইউপিডিএফ৷ মূলত পাহাড়কে অশান্ত করতে ইউপিডিএফ ইস্যু ভিত্তিক কর্মকাণ্ড করছে। যা পাহাড়ের পরিস্থিতি অশান্ত করে তুলছে।