ঢাকা-চট্টগ্রাম অবস্থানরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বা উপজাতিরা হঠাৎ পাহাড় মুখি কেন? কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, পাহাড়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে সন্ত্রাসীরা দেশের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। টানা কয়েক সাপ্তাহ ধরে পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে তৎপর একটি আঞ্চলিক সংগঠন। ঢাকা-চট্রগ্রাম শহরের গার্মেন্ট ও পোষাক শিল্পে কর্মরত উপজাতি শ্রমিক এবং শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশাজীবীরা দলে দলেই পাহাড়ে ফিরতে শুরু করেছে৷ জানা গেছে প্রতিষ্টান থেকে ছুটি নিয়ে তারা পাহাড়ে ফিরছেন। এর পর থেকে পাহাড়ের বাঙালিসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। পাহাড় কী কোন ধরনের বড় সংঘাতের দিকে যাচ্ছে? দেশের ক্লান্তিলগ্নে কোন গভীর ষড়যন্ত্র নয় তো? এমন ভাবনা মানুষের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। সাম্প্রতিক ঘটনা গুলো থেকে মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ বাড়ছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর পেছনে দু’টি কারণ থাকতে পারে- ১ পাহাড়ের ঘটনা নিয়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম অবস্থানরত উপজাতিরা হামলার শিকার হয় কিনা। ২। পাহাড়কে বিশৃঙ্খলা করতে ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলনে যোগদান উদ্দেশ্যেই উপজাতিদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে কিনা।
উপজাতি আঞ্চলিক দল দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে পাহাড়ে বড়ধরণের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে উস্কানি দিয়ে আসছে। বাঙালি ও প্রশাসন যথাযথ ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে আসছে। আঞ্চলিক দলটির এই ষড়যন্ত্রের পেছনে বড় ধরনের উদ্দেশ্য লুকিয়ে থাকতে পারে। তাই পাহাড়ের সবধরণের পরিস্থিতির উপর কঠোরভাবে নজর রাখা উচিত৷
স্থানীয়রা বলছেন, স্বায়ত্তশাসনের অন্তরালে দেশভাগের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত পাহাড়ের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন৷ যারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিরোধিতা করে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনটি জনবিরোধী কর্মকাণ্ড— হত্যা, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও দেশ বিরোধী অপতৎপরতা সাম্প্রতিক সময় পাহাড়কে অশান্ত করেছে। একের পর এক সাম্প্রদায়িক ইস্যু সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে সংগঠনটি ইস্যু ভিত্তিক কার্যকলাপ করছে৷ সংগঠনটির সকল কার্যক্রম সরকারের মনিটরিং করা উচিত৷
আঞ্চলিক দলের আহ্বানে সমতলে চাকরি, শিক্ষা ও বিভিন্ন কার্যক্রমে নিয়োজিত থাকা পাহাড়িরা কতটুকু সাড়া দিবে তা সময় বলে দিবে। তবে বেশিরভাগ পাহাড়ি বলছেন, আঞ্চলিক দলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তারা তাদের ক্যারিয়ার নষ্ট করতে চান না। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে একটি গোষ্ঠী সবসময় পাহাড়ি বাঙালিদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করে। এখানে হয়তো কোন গোষ্ঠী গুজব ছড়িয়ে পাহাড়ের মধ্যে বিভ্রান্ত বা আতঙ্ক ছড়িয়ে বিশেষ সুবিধা নিতে চায়। তাই কর্মক্ষেত্র ছেড়ে পাহাড়ে চলে যাওয়া হতে পারে ভূল সিদ্ধান্ত।
আঞ্চলিক দলের পক্ষ থেকে সাময়িক বা স্থায়ীভাবে সমতল ছাড়ার এই ধরনের নির্দেশনা দিয়েছে কিনা এই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই বিষয়টির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। হ্যাঁ তবে কিছু সংখ্যা পাহাড়ি ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম ত্যাগ করেছে৷ অনেক পাহাড়ি আতঙ্কে আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কাজ করে এমন ব্যক্তিরা বলছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সাথে থাকা ত্রিদেশীয় সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা উচিত। সেসাথে সংগঠনটির নেতাকর্মী ও সশস্ত্র কর্মীদের কার্যক্রমের উপর নিবিড়ভাবে চোখ রাখা উচিত৷ এই বিষয়ে পাহাড়ি বাঙালি উভয় সম্প্রদায়কে যে কোন ধরনের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড বা সংঘাত এড়িয়ে চলতে হবে৷
পাহাড় বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ এখানে উপজাতি বাঙালি উভয় সম্প্রদায় সহাবস্থান বজায় রাখুন এটাই সকলের প্রত্যাশা। তাই সন্ত্রাসী সংগঠনের উস্কানি বা পাতানো ফাঁদে কেউ পা বাড়াবেন না।
লেখক: জনি বড়ুয়া, খাগড়াছড়ি, ০৩/১০/২০২৪