অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটকদের ভ্রমণে বিরত থাকার যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা দ্রুত তুলে নেওয়া হবে। অদ্য মঙ্গলবার ৮ সেপ্টেম্বর সকালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সম্প্রীতি সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটকদের ভ্রমণে বিরত থাকার যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা দ্রুত তুলে নেওয়া হবে। এ বিষয়ে ঢাকায় ফিরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সম্প্রতি সাজেক ভ্রমণে গিয়ে প্রচুর পর্যটক আটকে যান। সারা দেশ থেকে যাওয়া পর্যটকেরা সেখানে আটকে পড়ায় সরকার খুব বিব্রত অবস্থায় পড়েছে। সরকারের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমরা বিব্রত অবস্থায় পড়তে চাই না। সরকার সকল দিক বিবেচনা করে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।’
এ ছাড়া দীঘিনালায় ১৯ সেপ্টেম্বর সহিংসতার ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপদেষ্টা। সংঘাত, হামলার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এ সময় আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ারও অনুরোধও জানান তিনি।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ বলেন, ‘এখানে যারা সাধারণ পাহাড়ি-বাঙালি আছে তাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। যারা এখানে সংঘাতের সৃষ্টি করছে তাদেরকে আইনে আওতায় আনতে হবে।’
পার্বত্য চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে উপস্থিত সবাই চাঁদাবাজির শিকার। এখানে যারা আছেন প্রত্যেককে চাঁদা দিতে হচ্ছে। মুরগি বিক্রি হলে চাঁদা দিতে হচ্ছে আবার কলার ছড়া বিক্রি করলে চাঁদা দিতে হবে। এটা কখনো হতে পারে না।’
পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলোকে ইঙ্গিত করে সবাইকে ‘ওপেন ফিল্ডে’ এসে গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনীতি করার অনুরোধ করেন উপদেষ্টা।
এ সময় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল, দীঘিনালা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুনুর রশীদ, দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ধর্মজ্যোতি চাকমা, সাবেক চেয়ারম্যান নব কমল চাকমা, উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো.শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে, গতকাল (৭ অক্টোবর) তিন পার্বত্য জেলায় আজ (৮ অক্টোবর) থেকে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪ দিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এতে বড় সংকটে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ভরা মৌসুমে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে হতবাক তারা। বলছেন, পূজার ছুটিতে বেশিরভাগ হোটেল-মোটেলের বুকিং বাতিল হওয়ায় লোকসানের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছে অনেক মানুষ।