খাঁন মাহমুদ, বিশেষ প্রতিনিধি: কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৫৬ মিয়ানমারের নাগরিক অনুপ্রবেশ করেছে। তাদের সকলেই চাকমা সম্প্রদায়ের। এদের মধ্যে পুষের পাশাপাশি নারী ও শিশু রয়েছে। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, প্রায় ৩০০-৪০০ চাকমা নারী-পুরুষ পালিয়ে এসেছে। এখন পর্যন্ত সরকারি হিসেবে ৫৬ জন।
গত সোমবার ১৮ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর ভোর পর্যন্ত বান্দরবানের ঘুমধুম বাইশফাঁড়ি সীমান্ত দিয়ে তারা অনুপ্রবেশ করছে। রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত তারা উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কুতুপালং হিন্দু ক্যাম্পের সামনে অবস্থান নিয়েছে। পুলিশ এবং সংশ্লিষ্টরা তাদের পরিচয় শনাক্তে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জারিন তাসনিম।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের নাগরিক অনুপ্রবেশ করেছে। পরবর্তীতে জানানো হবে তাদের জন্য সরকার কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সংঘাতে বসবাস অনুপযোগী হয়ে উঠেছে সেখানে। প্রাণ বাঁচাতে এপারে পালিয়ে এসেছে তারা। তারা সেখানে কৃষি এবং জুম চাষ করে জীবনধারণ করেন।
তবে সেখানকার বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, অনুপ্রবেশকারী তঞ্চঙ্গা সম্প্রদায়ের এবং তবে কয়েকদিন আগে ১২ জন অনুপ্রবেশ করেছে যারা বড়ুয়া সম্প্রদায়ের।
এই নিয়ে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধির ভূমি অধিকার বলে মায়ানমার থেকে অনুপ্রবেশকারী চাকমা, অন্যান্য জাতি বা উপজাতিরা পার্বত্য চট্টগ্রামে তাদের স্বজাতি কিংবা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে অনুপ্রবেশ করে পরবর্তীতে এখানকার বাসিন্দা বনে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ভারত ও মায়ানমার থেকে বিভিন্ন সময় অনুপ্রবেশকারী উপজাতিরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দা বনে গেছে। অথচ তারা ছিল শরনার্থী ও অনুপ্রবেশকারী। এখানকার সুযোগ সুবিধা ভারত ও মায়ানমার থেকে বেশি হওয়াই এই দেশ ত্যাগ করতে তাদের অনিহা। পার্বত্য চট্টগ্রামে দলে দলে আগত এসব উপজাতির আদিনিবাস ভারত ও মায়ানমার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেছে, ১৭০০ শতাব্দীর পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে শরনার্থী/ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে আশ্রয়িত উপজাতিরা বর্তমানে বাংলাদেশে নিজেদেরকে আদিবাসী হিসেবে দাবি করছে। এখন অনুপ্রবেশকারী এসব উপজাতিরা কিছুদিন যেতেই নিজেদের আদিবাসী হিসেবে দাবি করবে। এটা অপ্রিয় হলেও বাস্তবিক সত্য।